× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021081913.jpg

শিশু শ্রম নির্মূল বা শিশুপাচার রোধ কি কোভিডজনিত দারিদ্র্যবৃদ্ধিতে আর সম্ভব?

শৌভিক রায়
Child labour eradication possible by 2025?
Pic courtesy Gyan Shahane on Unsplash

কোভিডের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে জুন মাসের ১২ তারিখটি চুপচাপ চলে গেল, অথচ এবারে এই দিনটির তাৎপর্য ছিল একেবারেই আলাদা। কেননা ২০২১ সালের এই দিনটিকে শুধুমাত্র শিশু শ্রম বিরোধী দিবস হিসেবেই দেখা হচ্ছে না, বরং বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে এই দিন থেকেই শপথ নেওয়া হল যে, ২০২১ সালকে ভিত্তি ধরে, এসডিজি টার্গেট ৮.৭কে সম্পূর্ণ কাজে লাগিয়ে, ২০২৫ সালের মধ্যে শিশু শ্রমিকের সমস্যাকে পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা হবে। অবশ্য এর রূপরেখা তৈরি হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই মতো, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কাজ শুরু হলেও বিগত দেড়-পৌনে দুই বছরে সমগ্র পৃথিবীর আমূল বদলে যাওয়া চেহারা, সেই লড়াইকে অনেকটা কঠিন করে তুলেছে। 

শিশু শ্রমিকের সমস্যা সমাধানে, বিশ্বের প্রথম সারির রাষ্ট্রগুলির খানিকটা উন্নতি হলেও, অন্যান্য পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয়। রাষ্ট্রসংঘের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে যে, আফ্রিকায় এই মুহূর্তে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৭২ মিলিয়ন। এশিয়ায় এই সংখ্যা ৬২ মিলিয়ন। সারা বিশ্বের পরিসংখ্যান ধরলে এই দুই মহাদেশের প্রতি দশ শিশুতে নয় জনই শ্রমিক। অন্যদিকে জনসংখ্যার ভিত্তিতে, আমেরিকায় মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ হল শিশুই হল শ্রমিক, যা বিশ্বের অন্যতম সেরা ধনী দেশের পক্ষে যথেষ্টই উদ্বেগজনক। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বের যে দেশগুলিতে মাথা পিছু আয় কম, সেই দেশগুলিতে এই সংখ্যা বেশি। কিন্তু অত্যন্ত ধনী আরব দেশগুলিতেও এই সংখ্যা ৩ শতাংশ।  

আসলে শিশু শ্রমিকের সমস্যা শুধুমাত্র কোনও একটি নির্দিষ্ট রাষ্ট্র বা এলাকার নয়। সারা পৃথিবী জুড়েই এর তান্ডব সুদূর অতীত থেকে চলে আসছে। তাই ২০০২ সালে থেকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা শিশু-শ্রমিক বিরোধী দিবসকে আন্তর্জাতিক রূপ দিয়ে এই সমস্যা সমাধানে তৎপর হলেও, করোনা মহামারী কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। কেননা একদম সঠিক পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও, আশঙ্কা যে, বিগত দেড় বছরে কমতে থাকা শিশু-শ্রমিকের সংখ্যা পুনরায় অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শিশু পাচারের মতো গর্হিত অপরাধ। 

ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতে, প্রতি বছর আমাদের দেশে আনুমানিক চল্লিশ হাজার শিশু পাচারের শিকার হয়, যাদের মধ্যে এগারো হাজারের কোনও হদিশ শেষ অবধি মেলে না। আবার ভারতে প্রতি বছর প্রায় পঞ্চাশ হাজার শিশুকে প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে পাচার করা হয়। মনে রাখতে হবে যে, পাচার হওয়া এই শিশুদের শুধুমাত্র কল-কারখানা, দোকান বা বাড়ির কাজেই ব্যবহার করা হয় না, অনেককে যৌন শ্রমিক হিসেবেও কাজে লাগানো হয়। করোনা মহামারীর সুযোগ নিয়ে এইভাবে কত শিশু পাচারের শিকার হয়েছে তার চিত্র এখনও স্পষ্ট না হলেও বাড়ির উপার্জনকারীর কাজ চলে যাওয়ার জন্য বহু শিশুকে পড়াশোনা ছেড়ে কাজে নামতে হয়েছে, তা আমরা খবরের কাগজে প্রায়শই দেখতে পাচ্ছি।   

আমাদের দেশে শিশু শ্রমিক বিরোধী কড়া আইন থাকলেও, বাস্তব চিত্র কিন্তু অন্যরকম। ২০১১ সালের জনগণনা দেখিয়েছিল যে, ভারতে ৫ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত মোট ২৫৯.৬৪ মিলিয়ন শিশুর মধ্যে ১০.১ মিলিয়ন ছিল শিশু শ্রমিক। আর আজ ২০২১ সালে, এই করোনা কালে, সেই সংখ্যা কোথায় পৌঁছতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। আমাদের দেশের দারিদ্র সীমার নিচে থাকা এক বিরাট জনসংখ্যার কাছে আজও শিশু জন্মানো মানে পরিবারের আর একজন উপার্জনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি। ফলে দেশের জনসংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি পরিবারকে সাহায্য করতে জন্মানো শিশুটিও শৈশব থেকে অনেক দূরে সরে গিয়ে বাধ্য হচ্ছে এমন জীবনে প্রবেশ করতে যা আদৌ তার উপযুক্ত নয়। 

তাই শিশু শ্রম বিরোধী দিবসে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নেওয়া উদ্যোগে আমাদের নিজেদের স্বার্থে, জাতি-ধর্ম-বয়স নির্বিশেষে, সকলের এগিয়ে আসা উচিত। এই সমস্যাকে আমরা যত দূরে সরিয়ে রাখব, ক্ষতি কিন্তু আমাদের ততই। যে সমাজে শিশুরা নিজেদের শৈশব হারিয়ে ফেলে, সেই সমাজ কোনওদিনই এগিয়ে যেতে পারে না। আমরা যেন ভুলে না যাই যে, শিশুরাই এই বিশ্বের আগামীদিনের মানব-সম্পদ, তারাই এগিয়ে নিয়ে যাবে সভ্যতাকে। 

এই সম্পদকে সযত্নে রক্ষা করার প্রাথমিক কর্তব্যটা তাই একান্ত আমাদের। আমাদের সচেতনতা এবং শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার ও আন্দোলন সমূলে এই সমস্যাকে উৎপাটিত করতে পারবে বলে বিশ্বাস রাখি।

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team