× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021081913.jpg
আংসাং কথা - ১

রাজবংশী ভাষার বিপুল শব্দভাণ্ডার আশু সংরক্ষণে অবহেলা ঘোরতর অন্যায় হবে

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
Rajbangshi vocabulary needs to be preserved
(ছবি সংগৃহীত)

বৈদিক মতে যজ্ঞ করে ধর্মাচরণ করাটা সে যুগের নিরিখে একটা তাক লাগান ব্যাপার ছিল। বৈদিক ব্রাহ্মণরা শিক্ষা সমাপ্ত করে লোটা-কম্বল নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। সে যুগে বিত্তশালী সমাজ, পাত্র-মিত্র-বণিক-অমাত্য, ছোট বড় রাজা -- এদের কাছে বৈদিক মতে ধর্মাচরণ ব্যাপারটা বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়েছিল "আড়ম্বর"-এর কারণে। যত বড় রাজা তত বড় যজ্ঞ। তেমন রাজা হলে রাজসূয়।

বৈদিক সিস্টেমের (বেদান্তও বলতে পারেন) মূল শক্তি তাঁদের ভাষা। সংস্কৃত। গোটা ভারতে সংস্কৃতে দিকগজ পরিবারের সংখ্যা পাঁচশো ছিল কি না, এ নিয়ে সন্দেহ আছে। বেদ বিরোধী আলোচনাও সংস্কৃতে দিব্যি হত। অত:পর কী ভাবে সংস্কৃত ভাষা বৈদান্তিক হিন্দুত্ব-এর প্রতিনিধি হয়ে উঠল, হয়ে গেল দেবভাষা, তা ভিন্ন বিষয়।

সংক্ষেপে, এ দেশের রাজারা অনেকেই বৈদান্তিক রীতিনীতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বৃহৎ বঙ্গে অবশ্য অবৈদিক সংস্কৃত পন্ডিতদের বহুদিন পর্যন্ত কোনও অসুবিধে হয় নি। রাজারা বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছেন। কিন্তু কামরূপ শাসকেরা সেই নরকের আমল থেকে বৈদান্তিক রীতিনীতি অনুসরণ করেছেন। কোচবিহার রাজবংশও এর ব্যতিক্রম নয়। রাজবংশী ভাষা সেই অর্থে রাজানুগ্রহ লাভ করে নি। আসলে বিষয়টা ছিল সে যুগের নিরিখে খুবই স্বাভাবিক। এখন আমরা জেনেছি যে ভাষার মধ্যেই জাতি লুকিয়ে থাকে। সুতরাং রাজবংশী ভাষার শব্দভাণ্ডার হারিয়ে ফেলাটা হবে ঘোরতর অন্যায়।

দক্ষিণের ভাটি আর উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চলের ভাষার মাঝে রাজবংশী (মতান্তরে, কামতাপুরী) ভাষা যেন একটা বাফার, দুই তরফের সেতুবন্ধনকারী। রাজবংশীরা বহুকাল আগে বোডো ভাষায় কথা বলতেন বলে অনেকেই অনুমান করেছেন। রাজবংশী ভাষার শব্দভান্ডারে বোডো ভাষার দাপট যথেষ্ট। দু-একটা নমুনা দিই।

ডাংডাং ডিংডিং : খোলাখুলি। (কথা না চেপে রেখে ডাংডাং ডিংডিং বলে দেওয়া)

ঝেলটেং পেলটেং : "বড় মাপের পোষাক পরিহিত হইয়া হেলিয়া দুলিয়া চলা" (সূত্র: দেবেন্দ্রনাথ বর্মা)

খুকলুং খাকলাং : অল্পজলে চলাফেরা করলে যে শব্দ হয়।

আঙসাঙ : গোছান নয় এমন ভাব।

এই শব্দভান্ডার খুবই ইন্টারেস্টিং।

দৈনন্দিন জীবনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, গাছপালা, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ-- এদের রাজবংশী ভাষায় কী বলে, তাঁর অভিধান রচনা জরুরি। "কুরুয়া" বলতে "এক রকম পাখি" বললে হবে না, ঠিক কোন পাখি তা বিজ্ঞান সম্মত নাম সমেত উল্লেখ করতে হবে। ভোট-চীন শব্দের সাথে এই শব্দগুলি যুক্ত করে একটি অভিধান রচিত হলে সেটা যে চর্চাকারীদের খুবই কাজে লাগবে, তা বলাই বাহুল্য। অন্যথায়, হারিয়ে যাওয়ার পরিমাণ প্রতিদিনই তো বেড়েই চলেছে।

বাংলা ভাষার গোড়ার দিকের চেহারা রাজবংশী ভাষার মধ্যে কিছুটা বেঁচে আছে বলে আমার মনে হয়। অনেক বয়স, কিন্তু মোটামুটি সুস্থ - এমন রাজবংশী গ্রামাঞ্চলে চোখে পড়ে। তাঁদের কথা বলা রেকর্ড করে রাখা দরকার। তাঁরা নিজেদের কথাই বলবেন। এতে অনেক শব্দ, বাচনভঙ্গি ধরা থাকবে ভাবি কালের জন্য।

বিষয়টি পরিশ্রমসাধ্য এবং ব্যায় সাপেক্ষ। কিন্তু রাজ্য সরকার শুনেছি এরজন্য বরাদ্দ যুগিয়ে থাকেন। ফেলুদার গল্পও রাজবংশী ভাষায় ঝকঝকে প্রোডাকশনে বাজারে আসা উচিত।

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team