× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021081913.jpg
×
সংখ্যা: আশ্বিন, ১৪৩০
সম্পাদকের কলম
শারদ সংবাদ!
সম্পাদক - এখন ডুয়ার্স
বিশেষ নিবন্ধ
উত্তরের উচ্চশিক্ষার সংকট শুধু উপাচার্য কেন্দ্রিক নয়
জয়দীপ সরকার
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১৩
সব্যসাচী দত্ত
উত্তরের জনজাতি
জামাই আদরেও পিছিয়ে নেই টোটো সম্প্রদায়ের মানুষেরা
প্রমোদ নাথ
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টউন | পর্ব - ৬
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
পঁচাত্তর বছরের দোরগোড়ায় শিলিগুড়ি পুর বোর্ড
নবনীতা সান্যাল
উত্তর-পূর্বের চিঠি
ওঝা নৃত্য বরাক উপত্যকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বাহক
মেঘমালা দে মহন্ত
খোলা মনে খোলা খামে
দর্শক গ্যালারি থেকে বলছি
রম্যাণী গোস্বামী
পর্যটন
ডুয়ার্স ডে আউট
মমি জোয়ারদার
উত্তরের বইপত্র
পাঠকের প্রত্যাশা বাড়িয়েছে যে সংকলন
শৌভিক রায়
পাতাবাহার
এসময় স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুইই খেয়াল রাখতে হয়!
পাতা মিত্র
পুরানের নারী
দ্রোণাচার্য মাতা ঘৃতচি
শাঁওলি দে

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী গৌতমেন্দু রায়

উত্তরের উচ্চশিক্ষার সংকট শুধু উপাচার্য কেন্দ্রিক নয়

জয়দীপ সরকার
Ucchoshikkhar Sangkat

খুব বেশি দিনের পুরনো গল্প নয়, আজ থেকে জাস্ট বছর কুড়ি আগের কথা। গঙ্গার এপারে যে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ নামে কলকাতার মানুষ যাকে চেনে, যেখানে পুজোর সময় বেড়াতে এলে এনজেপি স্টেশনে নেমেই মাফলার পরতে হয়, পাছে হিমেল হাওয়ার ছোঁয়ায় নিউমোনিয়া না হয়, সেখানে সাতটি জেলার অধিকারে একটাই উচ্চশিক্ষার ধন ছিল, সেটি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। আর ছিল সেই সাত রাজার ধনের দুটি বোন, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ আর জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। তখন গোটা বাংলার ছেলেমেয়েরাই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে দলে দলে দক্ষিণ ভারত ছুটত। তারপর অবশ্য এই শতকের গোড়া থেকে বেশ কিছু প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ একটা বড় অংশের বাঙালি ছেলেমেয়েকে বাংলার জলহাওয়াতেই প্রযুক্তিবিদ তৈরি করতে শুরু করল। যদিও একটা ভিআইটি বা এসআরএম বা বিআইটিএস কিংবা কেআইআইটি-এর মতো এডুকেশন হাব বাংলায় আজও গড়ে ওঠে নি। কোনো দ্বিমত নেই, মানব সম্পদের ঘাটতির কারণে নয়, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এর জন্য দায়ী। আসলে বাংলায় শিক্ষাক্ষেত্রে যে কোনো রকম সংকটকে মোকাবিলা করতে আমরা চটজলদি রিলিফের বন্দোবস্ত করেছি বারবার, পেইন কিলার দিয়ে ব্যথা কমানোর মতো, দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতার পথ কোনোদিনই নিই নি। যেমন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অধ্যপকদের জেলায় বদলি করে জেলায় ভালো শিক্ষা দিতে চেয়েছি প্রান্তিক ছেলেমেয়েদের, কিন্তু আর একটা প্রেসিডেন্সি কলেজতুল্য কলেজ গড়তে প্রচেষ্টা বা বিনিয়োগ করিনি। আচার্য ব্রজেন্দ্র নাথ শীল যে কলেজের কাণ্ডারী ছিলেন একদিন, সেটিকেও আমরা সেন্টার অফ এক্সেলেন্স করে তুলতে সেভাবে উদ্যোগ নিই নি কোনোদিন।

এই শতকের শুরুতে বাংলায় সাধারণ উচ্চশিক্ষার জন্য যে হাফ ডজন প্লাস বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সেগুলোর সবগুলোতে আবার বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ছিল না। আর বাস্তব এটাই ছিল যে সারা বাংলা থেকে মেধাবী ছাত্ররা শুধু বিজ্ঞান নয়, সাহিত্য বা সমাজ বিজ্ঞান নিয়েও স্নাতকোত্তর পড়তে স্বপ্ন দেখতো দুটো মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে, কলকাতা আর যাদবপুর। স্নাতক স্তরে প্রেসিডেন্সি বা সেন্ট জেভিয়ার্স, বেথুনের মতো  কিছু কলেজের ক্রেজ ছিল, কিন্তু স্নাতকোত্তরের অপশন কলকাতাতেও ছিল খুবই সীমিত, বাকি বাংলায় তো আরো কম। তাই বছর দশেক আগে পর্যন্তও, উত্তরবঙ্গের মতো প্রান্তদেশ থেকে আমরা দেখেছি, একটা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের জন্য হাজার হাজার ছাত্র পাড়ি দিত ভাগলপুর, কানপুর-এর মতো জায়গায়। ভূগোল, ইংরেজি এই সব বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে প্রচুর শিক্ষক নেওয়া হতো বছর বছর, এবং এত স্নাতকোত্তর ছাত্রের যোগান বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিতে পারতো না তখন। সেইসময় কানপুর, ভাগলপুরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রকৃত অর্থেই আমাদের সহায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

বছর দশেক পর পরিস্থিতি কিন্তু একদমই বদলে গেছে। এখন বাংলার প্রায় প্রতি জেলায় ন্যূনতম একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। এখন আর ছাত্রদের কানপুর ছুটতে হয় না। কিন্তু ট্র্যাজেডি এটাই যে আজ থেকে ত্রিশ-চল্লিশ বছর আগেও বাংলার উচ্চশিক্ষার সেন্টার অফ এক্সেলেন্স যে দুটো ছিল, তার বাইরে তৃতীয় নাম খুব জোরের সাথে উচ্চারণ করার মতো  পরিস্থিতি আজও আমরা তৈরি করতে পারি নি। বরং ওই দুটোতেও নোংরা রাজনীতির কালি অনেক বেশি লাগিয়েছি। উত্তরবঙ্গের প্রেক্ষিত যদি দেখি, মালদা জেলার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কিছুটা আর কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় সামান্য কিছু পরিকাঠামো তৈরি করতে পেরেছে, বাকিগুলো একদমই খোঁড়াচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুর আর দার্জিলিং জেলার বিশ্ববিদ্যালয় দুটো আজ পর্যন্ত উপাচার্য ছাড়া দ্বিতীয় কোনো আধিকারিক বা শিক্ষক পদ পায় নি, যদিও ব্যাচের পর ব্যাচ এই সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করছে। আশপাশের কলেজগুলোর শিক্ষকদের স্বেচ্ছাশ্রমে কোনোরকমে ডিগ্রি দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে, তার বেশি কোনো কিছু প্রত্যাশা করাও অন্যায়। প্রকৃত উচ্চশিক্ষার ন্যূনতম পরিকাঠামো ছাড়া যে ছেলেমেয়েরা ডিগ্রি পাচ্ছে তাদের গবেষণার জন্য নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় তো নেইই, অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারিশ করার মতো কোনো পদাধিকারীও নেই। আলিপুরদুয়ার কলেজ, উত্তরের একটা নামী কলেজ, তাকে তুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়া হল। কিন্তু আজ অবধি কোনো আধিকারিক, নতুন শিক্ষক পদ, গবেষণার জন্য কোনো সুযোগ কিছুই তৈরি হলো না।

উত্তরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটা বড় সংখ্যক কেন্দ্রে সাহিত্য বা সমাজবিজ্ঞান তবু জোড়াতালি দিয়ে চলছে, কিন্তু বিজ্ঞান পড়ানোর অবস্থা ভয়াবহ। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো নিজেদের ডিপার্টমেন্টগুলোতে কোনো প্র্যাকটিকাল ক্লাস করানোর ব্যবস্থা নেই, অথচ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সেখান থেকে নিয়ে বেরোচ্ছে ছেলে মেয়েরা। বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে এই অব্যবস্থার শিকার হচ্ছে না জেনে না বুঝে ভর্তি হয়ে, কারণ এই ছাত্রছাত্রীদের বড় একটা অংশ ফার্স্ট বা সেকেন্ড জেনারেশন লার্নার। কিন্তু চিন্তাশীল প্রচুর মানুষ এই অঞ্চলেও বাস করেন। তারা কিন্তু তাঁদের ছেলেমেয়েদের নিতান্ত দায়ে না পড়লে এই অঞ্চলে রাখছেন না। প্রথমত তারা জেনারেল কোর্স থেকেই ছেলেমেয়েদের সরিয়ে নিচ্ছেন। যারা নিচ্ছেন না, তারাও কলকাতার দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির কলেজ হলেও সেখানেই উচ্চমাধ্যমিকের পর ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন, যাতে হোম ইউনিভার্সিটির সুযোগ নিয়ে কলকাতা সংলগ্ন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ ঘটে, এই আশায়। আর কলকাতার একটা পজিশনাল অ্যাডভান্টেজ তো আছেই। ইন্টারনেট বিপ্লব যতই আমাদের সামনে তথ্যের ভান্ডার উন্মুক্ত করুক না কেন, যতই জে-স্টোর বা লিব-জেন থেকে নিমেষেই আমরা ডাউনলোড করে নিতে পারি প্রয়োজনীয় বই, কিন্তু কলকাতার বাইরে একটা কলেজ স্ট্রীট, একটা ব্রিটিশ লাইব্রেরী, ন্যাশনাল লাইব্রেরী, একটা গোলপার্ক কালচারাল সেন্টার, বা আমেরিকান লাইব্রেরী আমরা পাব কোথায়? সাহিত্য বা সমাজ বিজ্ঞানের একজন ছাত্রের পূর্ণ মেধার বিকাশ তো ক্লাস রুমে ঘটে না, একটা একাডেমী বা নন্দন চত্বর তো তার চাই, যা কলকাতার বাইরে নেই, অনেক হা পিত্যেশের পর বছরে হয়ত একটা নাট্য উৎসব জোটে বড়জোর।

তবে কলকাতার কলেজগুলোর পরিবেশ নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগের অন্ত নেই, বিশেষত ইউনিয়নবাজি নিয়ে তারা বিরক্ত। যাদবপুর বিশ্বিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে অনেক কিছু দেখিয়ে দিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও রাজনৈতিক চাপে অনেক আপোষ করতে হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে, উত্তরবঙ্গ থেকেও, আমরা যারা উচ্চশিক্ষার সঙ্গে জড়িত, বিগত কয়েক বছরে দেখছি, সচেতন অভিভাবকদের একটা অংশ ছেলেমেয়েকে কারিগরি বা চিকিৎসা বিজ্ঞান নয়, সাধারণ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও দিল্লির কলেজগুলোতে পাঠাচ্ছেন। এবং এই যে ট্রেন্ড তার ফলস্বরূপ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠিত উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র ও বাঁকুড়া-বর্ধমান অঞ্চলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েও একই কথা বলা যায়, নিজেদের ফিডার লাইন হারিয়ে রক্তাল্পতায় ভুগছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি খুবই হতাশার। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত নিয়ে আমরা যত নিউজপ্রিন্ট বা এয়ার টাইম খরচ করছি, তার ভগ্নাংশও এই সব মূল ইস্যু নিয়ে ভাবলে হয়ত পরিস্থিতির বদল হতে পারতো।

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team