× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021105517.jpg
×
সংখ্যা: অগ্রহায়ণ, ১৪৩০
সম্পাদকের কলম
দার্জিলিং চা শিল্পে দুঃসময় ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে!
সম্পাদক - এখন ডুয়ার্স
কোচবিহার অনলাইন
উত্তরপূর্বের বৃহত্তম হেরিটেজ উৎসব কোচবিহার রাসমেলার হালহকিকত
তন্দ্রা চক্রবর্তী দাস
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১৫
সব্যসাচী দত্ত
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
পাঁচ দশকেই নদীগুলিকে নর্দমায় পরিণত করার কৃতিত্ব শিলিগুড়িবাসীর!
নবনীতা সান্যাল
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টউন | পর্ব - ৮
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
খোলা মনে খোলা খামে
আমার হাতের মুঠোয় আমার সন্তানের সর্বনাশ!
রম্যাণী গোস্বামী
পর্যটন
এবার ছোট্ট ছুটিতে যান পাহাড়ি চা বাগান নলদারা-মিল্লিকথং
সৌরভ রায়
উত্তরের বইপত্র
সংকল্পের খোঁজ ও সেনানীদের শ্রদ্ধা
দেবায়ন চৌধুরী
পাতাবাহার
শীতের স্পেশ্যাল "সরষো দা শাগ"
পাতা মিত্র
পুরানের নারী
স্বাহা
শাঁওলি দে

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী গৌতমেন্দু রায়

দার্জিলিং চা শিল্পে দুঃসময় ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে!

Darjeeling Cha Shilpe Duhsomoy

বন্দেভারত চেপে হই হই করে একসঙ্গে পাহাড়ে বেড়াতে যাচ্ছে কলকাতা শহরতলীর কয়েকটি তরুণ পরিবার। তাদের কেউ কেউ বিবাহিত জীবনে এই প্রথম দার্জিলিং। কারো কারো হয়ত বাল্যকালের কিংবা কলেজ জীবনের অভিজ্ঞতা থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু এই প্রজন্ম জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই যে ধারণা নিয়ে বড় হয়েছে তা হল দার্জিলিং মানেই গন্ডগোলের গন্ধ, যে কোনও সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে পাহাড়ের পথ। অথচ ‘টয়ট্রেন-টাইগারহিল-টি’ এই ত্রয়ীর আকর্ষণ কিন্তু আজও সেই সমান অপ্রতিরোধ্য। একবার নয় বারবার দার্জিলিং যেতেও আপত্তি থাকে খুব কম মানুষেরই। সিকিমের রাস্তায় সাম্প্রতিক দুর্যোগের পরে ইদানীং দার্জিলিং-এর পথে পর্যটকের ভিড় আরও বেড়েছে সন্দেহ নেই। সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘার শত শত ক্রমাগত ছবি সেই ভিড়কে মরসুম পেরিয়ে টেনে নিয়ে যেতে পারে সারা বছর। কিন্তু পর্যটকের ঢল না কমলেও এই পাহাড়ের ঢালে চা বাগানগুলির দুঃখ যে ক্রমে বেড়েই চলেছে সে কথা কতটুকু জানা আছে এই তরুণ প্রজন্মের? ওয়াকিবহাল মহলেও এ প্রশ্ন করলে তাঁরা সত্যিই আজ ভুরু কোঁচকান, হতাশায় ঠোঁট উলটে বলেন, কে জানে ভাই!

মাসকয়েক আগে সমাপ্ত জি২০ সমাবেশের শীর্ষ সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধানদেরকে দেওয়া মূল্যবান গিফট হ্যাম্পারে জ্বলজ্বল করছিল ভারতীয় গর্ব দার্জিলিং চা। যে চায়ে চুমুক দেওয়ার জন্য উন্নত ধনী দেশগুলিতে সহস্র মুদ্রা ব্যয় করা হয়। যে চায়ের বাগান চাক্ষুষ করতে আসে দুনিয়া জোড়া পর্যটকের দল, দেশের ভান্ডারে জমা হয় বিদেশী মুদ্রা। স্বাদে গন্ধে যে চা এখনও সারা পৃথিবীতে তুলনাহীন সেই চায়ের আজ শুরু হয়েছে দুর্দিন। দার্জিলিং পাহাড়ের ৮৭টি চা বাগান ধুঁকছে নানা সংকটে। জলবায়ু পরিবর্তন, পুরনো গাছের উৎপাদন হ্রাস, পোকামাকড়ের আক্রমণ ইত্যাদি নানা দৈন্যতাজনিত সমস্যা প্রকট হচ্ছিল কয়েক বছর ধরে। বেড়েই চলেছিল উৎপাদন ব্যয়। এসবের ফলে চায়ের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছিল বলাই বাহুল্য। তার ওপরে অধম মানের নেপালি চায়ের বাজারে অনুপ্রবেশ এবং তাকে সস্তার দার্জিলিং চা বলে চালানোর অপচেষ্টা অনেকাংশেই সফল হওয়ায় দেশীয় অভ্যন্তরীন বাজারে বিপুল ঝাড় খেতে হচ্ছে দার্জিলিং চা-কে। দুর্ভাগ্যবশত নেপালি চায়ের এই অনুপ্রবেশ ঠেকানোর মতো কোনও পরিকাঠামো বা আইন না থাকার ফলে এই সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।

অবশ্য দার্জিলিং চা শিল্পে এই দুর্ভাগ্যের সূচনাকাল ধরা হয় অনেক আগেই। দার্জিলিং পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের সহিংস আন্দোলন ও পাল্টা সরকারি দমন নীতি চায়ের আকাশে প্রথম বয়ে আনে দুর্দিনের কালো মেঘ। মাঝের কিছুকাল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও ২০১৭ সালে ফের হিংসা ও বন্ধের রাজনীতি তীব্র হওয়ার ফলে ক্রমাগত অশান্তিতে দার্জিলিং চায়ের উৎপাদন ও রপ্তানি দুইই ব্যাহত হয়। এই সুযোগে বিশ্ব বাজারে সেই শূন্যস্থান পূর্ণ করে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার চা। এরপর কোভিডের প্রভাব তো আছেই। দার্জিলিং চায়ের উৎপাদন ব্যয় বাড়তে থাকার ফলে পরপর লসের মুখে পড়েন চা ব্যবসায়ীরা, উৎপাদন কমিয়ে ফেলা বা বাগান বেচে দেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ তাঁদের কাছে সত্যিই খোলা থাকে না। আজ রপ্তানিযোগ্য চায়ের উৎপাদন কমতে কমতে এমন অবস্থা হয়েছে যে এভাবে চলতে থাকলে সেই সঙ্গে নেপালি চায়ের উৎপাদন যেভাবে বাড়ছে তা খুব শিগগিরি দার্জিলিং-এ উৎপাদিত চায়ের পরিমাণকে হেলায় পেরিয়ে যাবে। আর ‘গোদের ওপর বিষফোঁড়া’র মত খবর হল বিশ্ব বাজারে মন্দার ফলে এবার ইউরোপ আমেরিকা রাশিয়া জাপান ইত্যাদি দেশে দার্জিলিং চায়ের রপ্তানির পরিমাণ অন্তত দশ শতাংশ কম।

গত কয়েক বছরে দার্জিলিং-এর অন্তত গোটা কুড়ি চা বাগানের মালিকানা বদল হয়েছে। জানা গিয়েছে, আরও বহু বাগান বিক্রির অপেক্ষায়। নতুন মালিকদের বেশির ভাগই চা-ব্যবসায় অনভিজ্ঞ। তাঁরা এসেছেন দার্জিলিং চা মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতির কথা জেনেশুনেই। অতএব চায়ের ব্যবসাতেই তাঁরা সুদিন-সমৃদ্ধি আনবেন একথা ভাবা বোধহয় অন্যায়। কারণ ওদিকে ২০১৯ সালে রাজ্য সরকার চা বাগানের পনের শতাংশ জমি (অনূর্ধ্ব ১৫০ একর) অন্য ব্যবসায় লাগানো যেতে পারে বলে অনুমতি দিয়েই রেখেছেন। অর্থাৎ যদি কেউ আজ দাবি করে পাহাড়ী চা বাগানের নান্দনিক পরিবেশে অচিরেই শুরু হতে চলেছে ফাইভ স্টার হসপিটালিটি তথা রিয়াল এস্টেট বাণিজ্য তবে তা একেবারে অমূলক বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় কি? ডুয়ার্সে যেমন পরিবেশের বা বায়োডাইভার্সিটির তোয়াক্কা না করে শুরু হয়েছে মেগা প্রকল্প তারই অনুকরণ কি এবার দেখতে পাবো দার্জিলিং পাহাড়ে?

নানা কারণে পাহাড়ে চায়ের উৎপাদন যে হারে হ্রাস পাচ্ছে তাতে এটা পরিস্কার এই চা শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত লাখ তিনেক মানুষের ভবিতব্য আজ চরম অনিশ্চয়তার মুখে। পাহাড়ের চুয়াল্লিশ হাজার একর জুড়ে ঢেউ তোলা সবুজের যে অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দুনিয়াজুড়ে চাপ্রেমী মানুষকে আজও বছরে ৬৫-৬৬ লক্ষ কেজি উন্নততম অর্গানিক চা পানের সুযোগ দেয়, তা কি অদূর ভবিষ্যতে কেবল পর্যটকের চিত্তে পুলক জাগাবার জন্য স্রেফ শোকেস হয়ে রয়ে যাবে? সম্প্রতি সিকিমের প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখে যেমন সন্ত্রস্ত হয়েছেন পাহাড়িরা, দলমত নির্বিশেষে তাঁরা স্থির করেছেন দার্জিলিং পাহাড়ে আর কোনও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নয়, তেমনই কলকাতা বা দিল্লির ভরসায় না থেকে তাঁরা আজ এককাট্টা হোন। পাহাড়ের ঐতিহ্যকে এবং তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা পাহাড়ি মানুষের ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে নিজেদেরকেই। আমরা সমতলের মানুষ চাই সত্যি সত্যিই এবার ধ্বংসের খেলা সমাপ্ত হোক আমাদের হিমালয়ে।

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team