দেবী সিংহ বন্দি হলেও বিদ্রোহ কিন্তু প্রশমিত হ’ল না। শুরু হল চরম বিশৃঙ্খলা। অবশেষে ইংরেজ সৈন্য এল। ছলনার আশ্রয় নিয়ে শুরু করল বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। বোদা ও পাটগ্রামে ইংরেজদের সঙ্গে সমুখসমরে বিদ্রোহীরা পিছু হটল। দমন হ’ল কৃষক বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহকে অনেক ইতিহাসবিদ কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ বলে চিহ্নিত করেছেন। বিদ্রোহীরা পরাস্ত হলেও এই আন্দোলন বিফলে যায়নি। এই আন্দোলনের ফলে রাজস্বের হার অনেক কমে গেল। কোম্পানি নিজেই জমি নির্ধারণ, রাজস্বে পরিমাণ নির্ণয়, রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করল। জমিদারদের দেয় জমার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হ’ল। আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে কোম্পানি অনেক বেশি দায়িত্ব গ্রহণ করল। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইজারাদারী ব্যবস্থার অবসান এবং দেবী সিংহ ও তাঁর অনুচরদের বিচারের জন্য কমিশন গঠন করে।
এর পাশাপাশি একটি বড় ঘটনা ঘটে যায় জলপাইগুড়ির ইতিহাসে। ক্যাপ্টেন স্টেওয়ার্টের নেতৃত্বে বিদ্রোহ দমনের পাশাপাশি ১৭৭৩ সালে বৈকুন্ঠপুর পুরোপুরি কোম্পানির অধিকারে চলে যায়। এর ফলে রায়কত বংশ দ্বারা শাসিত অঞ্চল জমিদারিতে পর্যবসিত হয়। এরপর থেকে রায়কত বংশ পাকাপাকিভাবে বর্তমান রাজবাড়ি অঞ্চলে বসবাস শুরু করে। এবং বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাঁরা জলপাইগুড়ির রাজা বলেই পরিচিত হ’তে থাকেন। ১৮৬৯ সালে জলপাইগুড়ি একটি স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে প্রশাসনিক কাজ শুরু করে।
জলপাইগুড়ির লোকসংস্কৃতি
সংস্কৃতি চর্চায় জলপাইগুড়ি প্রাচীনকাল থেকেই অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এতদঞ্চলের মানুষের জীবন ধারায় বিভিন্ন পূজা-পদ্ধতি সহ বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান জড়িয়ে আছে। প্রাকৃতিক, অতিপ্রাকৃতিক, কল্পনা ও বিশ্বাস থেকে সংস্কৃতির রূপ পরিবর্তিত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। এখানকার অরণ্য, পাহাড়, নদী সে বিশ্বাস ও কল্পনাকে প্রশ্রয় দিয়েছে।
উত্তরবঙ্গ সহ জলপাইগুড়ির আরও একটি বিশেষত্ব হ’ল এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের আবহাওয়া। এখানকার ঋতু-বৈচিত্র ও তার উপলব্ধি মনকে উর্বর করে। সৃজনশীল ভাবনা ঋদ্ধ করে। তবে ইদানিংকালে কিছু পরিবর্তন ঘটেছে। একটা সময় ছিল ছয়টি ঋতুই পরিস্কার বোঝা যেত। এখন অবশ্য তিনটি ঋতুর আধিপত্য। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত। বাকী ঋতুগুলি খুব অল্প সময়ের জন্য ছুঁয়ে যায়। অতীত থেকেই প্রতিটি ঋতুকে কেন্দ্র ক’রে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়ে আসছে এই অঞ্চলে। এছাড়াও অবসর বিনোদনের জন্য এ অঞ্চলের মানুষ সৃজন করেছেন সঙ্গীত, নৃত্য ও নাট্য। তিস্তা-কালজানী-ডিমা-মূর্ত্তি-রায়ডাক-জলঢাকা সহ অসংখ্য ছোট-বড় নদী জলপাইগুড়িতে বয়ে চলেছে। নদীগুলি বুকে ক’রে বয়ে নিয়ে আসে পলি। তাই সে পলিতে কৃষিজমি উর্বর হয়ে থাকে। বৃষ্টিও হয় প্রয়োজনীয় পরিমানে। তাই সহজ কৃষিকাজ অবসর দেয় অনেক এখানকার কৃষিজীবি মানুষকে। তাই গ্রীষ্ম-বর্ষা মিলিয়ে মাস চারেকের হাড়ভাঙা খাটুনির পর মেলে অবসর। তৈরি হয় গান, নাট্য। এ অঞ্চলের কৃষিজীবি মানুষ শিল্প সৃজনেও দর। তৈরি হয়েছে উন্নত ও আকর্ষণীয় নাট্যশৈলী। নাট্য মূলত দু’ধারার। আনুষ্ঠানিক ও অবসর বিনোদনমূলক।
আনুষ্ঠানিক পালা গড়ে উঠেছে ভয়-ভক্তি-বিশ্বাস থেকে। প্রকৃতি-সঞ্জাত বিভিন্ন দেবতার প্রতি নিবেদনের উদ্দেশে রচিত হয় গীত-নৃত্য-নাট্য। তাতে থাকে দেবতার মাহাত্ম্য বর্ণনা ও দেবতার প্রচার। এসব উৎসারিত হয় শিল্পীর প্রাণ থেকে। এতে কৃত্রিমতা নেই। মহৎ হলেও গ্রামীণ লোকসমাজে এইসব দেবদেবী অত্যন্ত কাছের ও ঘরের লোক। তাই তাদের প্রতি ব্যবহারও সংসারে থাকা আত্মীয়-স্বজনের মতই। নিবেদনের বক্তব্যও একেবারে ঘরোয়া। কখনও এমন শব্দও ব্যবহৃত হয় যা তথাকথিত ভদ্রসমাজে ব্রাত্য।
এতদঞ্চলের প্রাচীন লোকসমাজ বলতে মূলত রাজবংশী সম্প্রদায়। তাঁদের জীবন ধারণের মূল উপায় কৃষিকাজ। আগেই আমরা জেনেছি এখানকার গীত-নৃত্য-নাট্য দু’ধারার। তাদের মধ্যে আচার ভিত্তিক বা আনুষ্ঠানিক লোকনাট্য হ’ল বিষহরা, চোর-চুরনী। নৃত্য ও গীত হ’ল মেচেনী, গমীরা ইত্যাদি। অবসর বিনোদনমূলক লোকনাট্যগুলির মধ্যে সর্বাধিক প্রচলিত হ’ল পালাটিয়া। এছাড়াও আছে ধামগান।
বিষহরি
বিষহরি পালা মূলত কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রচলিত। বিষহরা, বিষহরি, কানি-বিষহরি ইত্যাদি বিভিন্ন নামে পূজা পান দেবী মনসা। দিনাজপুরে এই আয়োজন উপলক্ষে ‘ব-খেলা’ অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর সামাজিক প্রয়োজনীয়তা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। বিষহরা হ’ল পদ্মপুরাণ প্রভাবিত মনসার গান। আমাদের প্রচলিত মঙ্গলকাব্যগুলির মধ্যে মনসামঙ্গল বঙ্গসমাজে বহুল প্রচারিত ও জনপ্রিয়। দেবী মনসার মাহাত্ম্য ও প্রচার বিষয়ে গাওয়া-অভিনয় হয় বিষহরি গান। আনুমানিক খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতক থেকে অষ্টাদশ শতকের কোনও এক সময় সংকলিত। সর্পদেবী মনসার এই গানকে পদ্মপুরাণ বলা হয় কারণ মনসার একটি নাম পদ্মা। অবশ্য মতভেদ আছে যে পদ্মা আদতে মনসার দিদি।
মনসা নামের কোনও দেবীর উল্লেখ বেদ, পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারতে পাওয়া যায় না। যে পদ্মপুরাণের কথা আমরা উল্লেখ করেছি তা তো উপপুরাণ। পুরাণ পরবর্তীকালে রচনা ক’রে মূল পুরাণের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাচীন শাস্ত্র অনু্যায়ী সর্পের দেবতা নাগ। মনসা লোকদেবী। মনসামঙ্গলের প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালী সমাজে মনসাদেবীর পুজো শুরু হয়। মনসা দেবীই কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলে বিষহরি বা বিষহরা নামে পুজিত হন। তিনি কানি বিষহরি নামেও পরিচিত।
বিষহরি পালায় মর্তে দেবীপূজা প্রচলনের সম্পূর্ণ কাহিনি পরিবেশন করা হয় গান ও অভিনয়ের মাধ্যমে। জলপাইগুড়ির রাজবংশী সমাজে গৃহস্থের কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে বিষহরি পূজা করা হয়। এই পূজার আবশ্যিক বিষয় গান। বিবাহ, অন্নপ্রাশন, গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি অনুষ্ঠানের শুভ সূচনায় বিষহরি পূজার আয়োজন করেন গৃহস্থ। পূর্বেই আলোচনায় বলেছি বিষহরি পূজার মূল উপচার তার গান। আর যদি গৃহস্থের মানসিক থাকে তবে পালার (নাট্যরূপ) আয়োজন করা হয়। উত্তরবঙ্গে প্রচলিত যে গান তা মালদহের কবি জগজ্জীবন ঘোষালের রচনা থেকে সংগৃহিত। তবে অবশ্যই স্থান ব্যতিরেকে তার কিছু সংযোজন ঘটে। তা স্থানীয় প্রভাবে। বন্দনা, দেবী মনসার পরিচয়, মাহাত্ম্য, মর্তে পূজা প্রচলন ও ভাসান—এইভাবেই বিন্যস্ত গান ও পালা। রাজবংশী সমাজে দু’প্রকার বিষহরির প্রচলন রয়েছে। ‘কানি বিষহরি’ অন্যজন ‘গীতালি বিষহরি’। কানি বিষহরিই বহুল প্রচলিত। এ প্রসঙ্গে শ্রদ্ধেয় গবেষক শ্রী চারুচন্দ্র স্যান্যাল তাঁর বিখ্যাত বই ‘রাজবংশী’স অফ নর্থবেঙ্গল’—এ লিখেছেন-- In all ceremonies related to Marriage, Sradh, Pregnancy and Child Birth worship is offered to Bishohori Thakurani in the outer yard of the house with curd, flattened rice and ripe plantain as offering. There are two types of Bishohori. One is Kani-Bishohori which is more commonly worshiped. The other is Gitali Bishohori. She is worshiped during the Marriage ceremony. The image consists of Beulani (Behula), Bala (Lacckhindar), Goda, Godani, Washer Woman, Siva, Fish, Snakes etc.
গৃহস্থের মানসিক অনুসারে বছরের যেকোনও সময় বিষহরি পালার আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে শ্রাবণ মাসে এই পালার আয়োজন তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। পালা তিনদিন, সাতদিন, এগারোদিন ধরে চলে। আবার শ্রাবনের সম্পূর্ণ মাস জুড়ে এই গানের আয়োজন হয়েছে এই উদাহরণও রয়েছে। প্রতিদিন রাত একটু গভীর হ’লে এই পালার আরম্ভ হয় চলে পরেরদিন সূর্যোদয় পর্যন্ত। বন্দনা দিয়ে শুরু ক’রে ভাসান পর্যন্ত চলে এই পালার গান ও অভিনয়। দিনাজপুরে অবশ্য মানসিক না থাকলে এই গান গাওয়া হয় না। কেবল বিষহরি পূজার আয়োজন হয়। তার সঙ্গে ‘ব-খেলা’।
বিষহরি পূজার আসরে গান পরিবেশন করা হয়। গৃহস্থের মানসিক থাকলে বিষহরি গান পালা বা নাট্যের মত ক’রে পরিবেশন করা হয়। বিষহরি পালায় একজন মূল ‘গীদাল’ (গায়ক) থাকেন। তাঁর বাম-হস্তে থাকে চামর। চামর তৈরি হয় চমরি গাইয়ের লেজের চুল দিয়ে। তবে আজকের এই ডিজিটাল যুগে এই চামর তৈরি হয় কৃত্রিম লাইলনের সুতো দিয়ে। দেখতে মূল চামরের মতই, হাতে নিলে বোঝা যায় পার্থক্য। লেজের চুল বাঁধা থাকে কাঠের দন্ড বা রুপোর বাটে। এই চামরের বাতাস খুব কল্যানকর বলে মনে করা হয়। মূল গীদালের সঙ্গীরূপে থাকেন একজন দোয়ারী। ইনি মূল গীদালকে সাহায্য করেন পালাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। এছাড়াও থাকেন আরও সতের আঠারোজন শিল্পী। যাঁরা অভিনয় করেন, বাদ্যযন্ত্র বাজান ও গান করেন। ছেলেরাই মেয়েদের চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁদের বলা হয় ‘ছোকরা’ বা ‘ছুকরী’। এখন অবশ্য কিছু মহিলা শিল্পী অংশগ্রহণ করেন।
শুরুতেই থাকে ‘মিউজিক্যাল কনসার্ট’। তারপর ছোকরা বা ছুকরীদের নৃত্য পরিবেশন করা হয় বাদ্যযন্ত্রের আবহের সঙ্গে। আমরা দেখেছি পালায় যে প্রারম্ভিক ছুকরী-নৃত্য পরিবেশন করা হয় তা যৌন আবেদন পূর্ণ। অধিকাংশ লোকনাট্যেই আদিরসের ব্যবহার খুব থাকে। আর ছেলেদের দ্বারা পরিবেশিত নৃত্যও যে কতটা যৌন আবেদন পূর্ণ হ’তে পারে তা স্বচক্ষে না প্রত্যক্ষ করলে বোঝাই যাবে না। বিষহরি পালাতেও এর ব্যবহার আঙ্গিক অভিনয়ে যথেষ্ট। সাপকে যৌনতার প্রতীক রূপে নিষ্ঠা সহকারে পূজা করা হয় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে। যৌন সম্ভোগরত দুটি সাপের কাছে লাল শালুকাপড় পেতে দেওয়ার সংস্কার বেশ প্রাচীন।
জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে বিষহরি পূজার কারণ এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নদী বিধৌত, স্যাঁতস্যাঁতে জঙ্গলাকীর্ণ। অর্থাৎ সর্প-বসবাস-উপযোগী। তাই বিভিন্ন প্রকার সাপের বাস এই অঞ্চলে। তাদের মধ্যে তো কেউ কেউ খুব বিষাক্ত। সংখ্যায় প্রাচুর্যের কারণে সর্প-দংশনে অনেক মানুষ মারা যান। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির কারণে মৃত্যুর হার কমেছে অনেক। পূর্বে ওঝার হাতে ভুল চিকিৎসার কারণে কত যে মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। আমাদের মনে সাপ অদ্ভুত এক প্রাণী। তার পা নেই। জিভ চেরা। ঢেলে দেয় বিষ। তাই সাপ থেকে মানুষের ভয়। ভয় থেকে ভক্তি। বিষহরি পূজা প্রচলনের কারণ।
বিষহরি পালার কাহিনি সংক্ষেপে এইরূপ– মনসা চেয়েছিলেন মর্তে নিজের পূজা প্রচলন। আর তাই তিনি বেছে নিয়েছিলেন অভিজাত বণিক চাঁদ সদাগরকে। চাঁদ সদাগর শিবের ভক্ত। তাই তিনি মহিলা দেবতা মনসাকে ঘৃণাভরে প্রত্যখ্যান করলেন। আর তাতে কোপে পড়লেন একচক্ষু মনসার। বাণিজ্যের সপ্তডিঙা সাগরে ডুবে গেল। মারা গেক ছয় ছেলে। সর্বকনিষ্ঠ পুত্র লখিন্দর মনসার ছলনায় বাসরঘরে সর্প দংশনে মারা গেল। সদ্যমৃত লখিন্দরের সদ্য বিধবা স্ত্রী মৃত স্বামীর শবদেহ নিয়ে স্বর্গের দিকে যাত্রা করল। উদ্দেশ্য স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে নেওয়া। যাত্রাপথে নানা প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি হলেও অবশেষে স্বর্গের দেবতাদের সন্তুষ্ট করে নিজের সতীত্বের জোরে লখিন্দরকে বাঁচিয়ে তোলে। কিন্তু তাকে কথা দিতে হ’ল মর্তে ফিরে চাঁদ সদাগরকে দিয়ে মনসার পূজা করিয়ে নেবে।
কিন্তু চাঁদ সদাগর নিজের সংকল্পে অটল। তিনি যে হাত দিয়ে শিবের পূজা করেন সে হাতে কিছুতেই মনসার পূজা করবেন না। উলটে মনসাকে গালাগাল করেছেন কুরূপা বলে। বলেছেন ‘চ্যাংমুড়ি কানি’। কেননা বিমাতা চন্ডী-র সঙ্গে বিবাদে মনসা একটি চোখ হারান। আর তাঁর মাথাটি চ্যাঙমাছের মত বড়।
উত্তরবঙ্গের অধিবাসীগণ চ্যাঙমাছ চেনেন। ল্যাটা মাছের মত দেখতে এর লেজের প্রান্ত লালচে হয়। মাথাটি শরীরের তুলনায় বড় হয় আর খুব লোভী হয় এই মাছ। সুতরাং চ্যাঙমুড়ি কানি বলার কারণে অত্যন্ত খেপে যান মনসা। ক্রোধবহ্ণিতে পুড়িয়ে ফেলতে চান। কতদূর যে এই ঘটনা গড়াত কেউ জানে না যদি না বেহুলা সে ক্রোধবহ্ণিতে শান্তির বারি নিক্ষেপ করত। বেহুলা শ্বশুরকে বোঝালো। অনেক কান্ডের পর চাঁদ সদাগর পেছন ফিরে বামহস্তে মনসার পূজা সারলেন ফুল দিয়ে। কারণ দক্ষিণ হস্তে সে শিবকে পূজা করে। মনসা অবশ্য তাতেই খুশি। (ক্রমশ)
ছবি – রুমা দত্ত
Have an account?
Login with your personal info to keep reading premium contents
You don't have an account?
Enter your personal details and start your reading journey with us
Design & Developed by: WikiIND
Maintained by: Ekhon Dooars Team