× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021105753.jpg
×
সংখ্যা: ভাদ্র, ১৪৩০
সম্পাদকের কলম
ডাকে মুক্তি
সম্পাদক - এখন ডুয়ার্স
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১২
সব্যসাচী দত্ত
উত্তরের জনজাতি
যে সম্প্রদায়ের নারীরা বিধবা হয় না
প্রমোদ নাথ
দুয়ার বার্তা
উত্তরে সংঘাতে সংকটে প্রকৃতই বিপন্ন হস্তীকুল: সমাধানের পথ কী?
প্রদোষ রঞ্জন সাহা
কোচবিহার অনলাইন
বোগেল সাহেবের ডাইরিতে তিব্বত-যাত্রার পথে কোচবিহারে রাত্রি যাপন
সৌরভ ঘোষাল
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
শিলিগুড়ির পাড়া কলোনি সরণী বেয়ে
নবনীতা সান্যাল
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টউন | পর্ব - ৫
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তরের বইপত্র
আজকের জাতিদাঙ্গার উৎস সন্ধানে এক জীবন্ত দলিল
অর্ক দেব
পর্যটন
এক অবাক অরণ্যের দিনরাত্রি
সুজাতা পুরকায়স্থ
নেট গল্প
পুরনো সে নক্ষত্রের দিন
রম্যাণী গোস্বামী
আমচরিত কথা
ফেলে আসা শিক্ষকবেলা
তনুশ্রী পাল

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী গৌতমেন্দু রায়

বোগেল সাহেবের ডাইরিতে তিব্বত-যাত্রার পথে কোচবিহারে রাত্রি যাপন

সৌরভ ঘোষাল
Bogel Saheber Diary

হিমালয়ের ওপারে চিরতুষারের দেশ তিব্বত। ভারতের লোক দেশটিকে চিনত ভোট বা ভোটিয়া নামে। তিব্বত শব্দটি ইউরোপিয়ানদের দেওয়া। তারা শব্দটি নিয়েছিল তুর্কী ও পারস্য থেকে। সেই চিরতুষারের দেশে আজ  থেকে প্রায় ২৫০ বছর আগে বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে জর্জ বোগেল নামের এক ইংরেজ সাহেবকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দূত করে পাঞ্চেন লামার কাছে পাঠান তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস। তিব্বতে দালাই লামার পরেই প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা ছিলেন পাঞ্চেন লামা। দালাই লামা থাকতেন রাজধানী লাসায় আর পাঞ্চেন লামা থাকতেন পশ্চিম তিব্বতের শিগাৎসে শহরে তাসিলুম্ফ নামে এক বিরাট মঠে।  

১৭৭৪এর মে মাসের মাঝামাঝি কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু করে মুর্শিদাবাদ, দিনাজপুর, কোচবিহার ও ভুটান হয়ে ডিসেম্বরে তাসিলুম্ফ মঠে গিয়ে পৌঁছোন বছর আঠাশের বোগেল।  ওয়ারেন হেস্টিংসের নির্দেশ মত নিজের যাত্রাপথের বর্ণনা পুঙ্খানুপুঙ্খ ডাইরিতে লিখে রাখতেন তিনি। সেই ডাইরিতেই তার যাত্রাপথের অন্যান্য জায়গার মতই কোচবিহারের বর্ণনা উঠে এসেছিলো।   

বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করা ছাড়াও জর্জ বোগেলকে তিব্বতে পাঠানোর পিছনে ওয়ারেন হেস্টিংসের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল, সাংপো নদীর গতিপথ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া। সাংপো নদীই যে ভারতে ঢুকে ব্রহ্মপুত্র নাম নিয়েছে এই ধারণা তখনও পোক্ত হয়নি। সেই সময় অনেক ভূগোলবিদরা মনে করতেন তিব্বতের সাংপো পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বার্মায় ঢুকে ইরায়ডি নাম নিয়েছে। কিন্তু জেমস রেনেলের (যাকে ভারতে আধুনিক ভূগোল চর্চার পুরোধা বলা হয়) মতে সাংপোই ছিলো ব্রহ্মপুত্রের উৎস। এছাড়াও তিব্বতের উদ্দেশে যাত্রা করার আগে রেনেল নিজের সঙ্গে নেন আলুর বীজ। উদ্দেশ্য ছিল যাত্রাপথে নতুন এই ফসলের প্রচলন ঘটানো। যে ডাইরিটিতে বোগেল তাঁর যাত্রাপথের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা লিখে রাখতেন সেটি তাঁর মৃত্যুর প্রায় ১০০ বছর পর প্রকাশিত হয়।

দিনাজপুর ছাড়িয়ে কোচবিহার রাজ্যে প্রবেশ করে বোগেল লিখেছেন, আমার ধারণা এই অঞ্চলে এর আগে কোম্পানির কোনও কর্মচারী বা কোনও ইউরোপীয় প্রবেশ করেনি। এখানকার পথ, আবহাওয়া ও মানুষজন সবাই অজ্ঞতার অন্ধকারে ঢাকা।

কোচবিহারের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় বোগেল যে সময় এই অঞ্চলের উপর দিয়ে যাত্রা করেন তখন কোচবিহার রাজ্যে ঘোর বিপর্যয়। ১৭৬৫ থেকে ১৭৭৫ এই দশ বছরে তিনজন কোচ রাজ রাজ্যের সিংহাসনে বসেন। ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে রাজেন্দ্রনারায়ণের মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেন ধরেন্দ্রনারায়ণ। এই সময় রাজ্যের উপর ভুটিয়াদের আক্রমণ বাড়তে থাকে। কোচ রাজ্যের প্রায় সমস্ত অংশ দখল করে নেয় ভুটানের রাজা। রাজ্যের এই বিপর্যয়ের সময় রাজা ধরেন্দ্রনারায়ণ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে সাহায্য চান। সেই আবেদনে সাড়া দেয় কোম্পানি বাহাদুর। ১৭৭৩ সালে কোচ রাজ ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয় ও কোচবিহার রাজ্য একটি করদ মিত্র রাজ্যে পরিণত হয়। এই চুক্তির প্রায় এক বছর পর বোগেল এই অঞ্চলের উপর দিয়ে যাত্রা করেন সুতরাং তাঁর ডাইরিতে সেই লেখার ভিত্তি ঐতিহাসিক দিক দিয়ে মিথ্যে প্রমাণিত হয়। কারণ তাঁর কোচবিহার রাজ্যে প্রবেশ করার আগেই কোম্পানির অনেক কর্মীবর্গ এই অঞ্চলে প্রবেশ করেছিলেন।

বোগেল লিখেছেন, কোচবিহার রাজ্যে ঢুকতেই শুরু হয় বিস্তীর্ণ ঢালু জমি। উঁচু ঘাস আর ঘন শরের বনের মধ্যে দিয়ে পথ খুঁজে চলতে হচ্ছে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। চারিদিকে জলা জমি। ব্যাঙ আর বিষাক্ত পোকামাকড়ে ভরতি এই অঞ্চলের ভ্যাপসা বাতাসে শ্বাস নেওয়াই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এই ভাবে পাঁচ ক্রোশ চলার পর শালের গুঁড়ির তৈরি ভেলায় চেপে নিচু জলাভূমি ছেড়ে ভুটান রাজের এলাকায় প্রবেশ করি।

এখন যে অঞ্চলটি আলিপুরদুয়ার তার উত্তরপূর্বের অনেকটাই সেই সময় ভুটিয়ারা দখল করে নিয়েছিলো।  তাই বোগেলসাহেব তার ডাইরিতে এইসব অঞ্চলকে ভুটান রাজের অন্তর্গত বলে লিখে গিয়েছেন। যে নিচু জলাভূমির কথা তিনি লিখেছেন তা তরাই অঞ্চলের ভূপ্রকৃতির সঙ্গে মিলে যায়। এই নিচু জলাভূমি বলতে হয়ত তিনি তিস্তার পশ্চিমাঞ্চলকে বুঝিয়েছেন।

কোচবিহারের কোনও এক গ্রামে রাত কাটিয়ে পরদিন আবার যাত্রা শুরু করেছিলেন বোগেল। তিনি লিখেছেন, সন্ধ্যার পর গ্রামের মোড়লের কুঁড়ে ঘরের মেঝেতে সবাই একসঙ্গে শুয়ে রাত কাটিয়ে দেই। পরদিন ভোরবেলা আলো ফুটতেই যাত্রা শুরু করি। কিছুক্ষণ চলার পর পাহাড়ে চড়া শুরু হয়। উঁচু উঁচু গাছের বনের ভেতর দিয়ে আঁকাবাঁকা পথে চড়াই বাড়তে থাকে। এই পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে গিয়েছে অসংখ্য ঝর্না। এইভাবে চার মাইল চলার পর সন্ধ্যের পর যে জায়গাটায় গিয়ে পৌঁছলাম তার নাম বক্সাদুয়ার। সেখানে সেই রাত থকে এর পরের দিন অর্থাৎ ১৭৭৪ সালের ৯ জুন বোগেল কোম্পানি শাসিত বাংলা ছেড়ে পা রাখেন ভুটানে।        

(ঋণ - শাংগ্রিলার খোঁজে, হিমালয়ে গুপ্ত চারণার তিনশতক – পরিমল ভট্টাচার্য)

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team