ইলিশ মাছ নিয়ে বাঙালি উপন্যাস লিখে ফেলতে পারে কিন্তু তবুও তার আবেগের শেষ হবে না। বাঙালি বিশেষ করে বাঙাল আর ইলিশ একটি মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। উৎকৃষ্ট ইলিশ পাওয়া নিয়ে প্রচুর বক্তব্য আছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় এই নিয়ে অনেক বিতর্ক বিবাদ আছ, স্বাদে কোথাকার ইলিশ শ্রেষ্ঠ তাই নিয়ে।
ইলিশ মূলত নোনা জলের বা সমুদ্রের মাছ। প্রজননের জন্য এরা ঝাঁকে ঝাঁকে মোহনা দিয়ে মিঠে জলের নদীতে প্রবেশ করে। সদ্য যৌবন প্রাপ্ত ইলিশেরা এই যাত্রাপথেই প্রজননক্ষম পূর্ণ বয়স্ক হয়ে ওঠে। অগুন্তি ইলিশের এরকম বিশাল বিশাল ঝাঁক স্রোতের প্রতিকূলে তীব্রবেগে সাঁতরে চলতে থাকে; গবেষণা বলছে এরা দিনে সত্তর কিমি অব্দি যাত্রা করতে পারে এবং হাজার কিমির জলপথ ও অতিক্রম করে এগিয়ে যায়। এরা স্যামন মাছের মতোই একধরনের আ্যানাড্রোমাস মাছ, যাদের জীবন চক্র নোনা জল ও মিঠে জল দুই জায়গাতেই আবর্তিত হতে থাকে। যদিও ইলিশ ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, ইরান ও দক্ষিণ ইরাকের বিভিন্ন সমুদ্রগামী নদীতেই পাওয়া যায় এবং পাল্লা, মোদার ইত্যাদি নামেও পরিচিত; তবে পৃথিবীর সামগ্রিক ইলিশ উৎপাদনের প্রায় পঁচাশি শতাংশই বাংলাদেশের। তার মধ্যেও মেঘনা নদীর ইলিশের কৌলিন্য বেশি এবং এই নদীতে চাঁদপুরে ধরা ইলিশ সর্বোৎকৃষ্ট স্বাদের বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। যদিও বাংলাদেশের সামগ্ৰিক ইলিশ উৎপাদনের সিংহ ভাগই পদ্মা নদীর। নদীতে জন্ম নেওয়া বালক ইলিশগুলি যখন সমুদ্রে ফিরে যেতে থাকে তখন তারা জাটকা বা খোকা ইলিশ হিসেবে পরিচিত হয়। বাংলাদেশ সরকার আইন করে ও জালের মাপ নির্দিষ্ট করে মৎস্যজীবীদের এই জাটকা শিকার বন্ধ করতে পেরেছে। ফলত বিগত কয়েক বৎসরে বাংলাদেশের ইলিশ উৎপাদন, ইলিশ রপ্তানির থেকে আয় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব দেশের সরকারই এইভাবে আইন করে কড়া হাতে খোকা ইলিশ হত্যা বন্ধ করলে আমরা ভবিষ্যতে পূর্ণ বয়স্ক সঠিক স্বাদের ইলিশ প্রচুর পরিমাণে সহজলভ্য করতে পারব।
বাংলাদেশ থেকে পদ্মার ইলিশ পুজোর বাজার দখল করার জন্য এসে হাজির হয়েছে, সংবাদে জানা যাচ্ছে, সে ইলিশের ক্রেতা অপ্রতুল। অতিরিক্ত দামের জন্য অবশ্যই। আমাদের উত্তরবঙ্গের বাজারে আপাতত যে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তাই দিয়েই আমাদের রসনার তৃপ্তি করা ছাড়া উপায় নেই। সেই ইলিশেই অতি প্রচলিত একটি রেসিপির পুনর্নবীকরণ করা হল।
নারকোলের দুধ, ফ্রেশ বা প্যাকেটজাত দুটোই চলবে। সরষে বাটা পাউডার অথবা সদ্য বেটে নেওয়া দুটোই চলবে। পরিমাণ মতো এই দুইয়ের সংমিশ্রণ, সাথে সামান্য টক দই, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, গোটা কাঁচালঙ্কা চেরা, সর্ষের তেল আর নুন। সবকিছু ভালো করে সবকিছু ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে, আর তারপর কাঁচা মাছের সাথে মেখে কড়াইতে ঢেকে বসিয়ে দিতে হবে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটা তৈরি হয়ে যাবে, মাঝে একবার একটু দেখে, সাবধানে মাছগুলোকে উল্টে দিতে হবে। ঝাল এবং নুন সবকিছুই স্বাদমতো দিতে হবে।
Have an account?
Login with your personal info to keep reading premium contents
You don't have an account?
Enter your personal details and start your reading journey with us
Design & Developed by: WikiIND
Maintained by: Ekhon Dooars Team