শিউলি ফুলে শিশিরের ছোপ ছোপ। শরতের শুরু। পটুয়াটোলা থেকে প্রতিমার যাত্রা শুরু। সেসময় পটুয়াটোলা ছিল বিধান রোড সংলগ্ন, তিলক ময়দান যাওয়ার পথের ধারে। একে একে ফাঁকা হয়ে যেত পটুয়াটোলার গাদাগাদি করে রাখা প্রতিমা। শূন্যতার অনুভবে ফাঁকা হয়ে যেতে থাকতো মন। পুজো শুরুতেই উৎসব শেষের বাজনা। এদিকে প্যাণ্ডেল ভরে উঠছে, আলোময় হয়ে উঠছে। ওদিক থেকে হেমন্তের হু হু ডাক ভেসে আসে। পটুয়াদের চোখে মেয়ে বিদায়ের অনুভূতি। বিধান রোড থেকে তিলক ময়দান জুড়ে এদিক ওদিকে ছড়িয়ে আছে পটুয়ারা। পুরোনো ক্লাবে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা, চক্ষুদান শুরু হলে ভিড় বাড়বে সেখানে --এরকমই ছিল আমাদের ছোটবেলার পুজো পরিক্রমার সূচনা।
এ পর্যন্ত শুনে কন্যার প্রশ্ন —আসল কথাটা বলো! মোট ক'টা পুজো হতো শিলিগুড়িতে? একটু থমকে গিয়ে বললাম-- এসব গল্প বলার মতো লোক তো বড় কমে গেছে! বোসকাকু জানবেন নিশ্চয়ই। গল্প-স্বল্প যা কিছু তিনিই বলতে পারবেন। ঊননব্বই বছরের বোসকাকুকে পাওয়া গেলে তাকে নিয়ে গিয়ে বসা হলো পাড়ার ক্লাবের মাঠে। মাঠের একপাশে পুজোর প্যাণ্ডেল শুরু হয়ে গেছে। বোসকাকু বলে চললেন, শিলিগুড়িতে পুরোনো পুজো বলতে তো ছিল সাকুল্যে চার কী পাঁচটি। যদ্দূর মনে পড়ে, অন্তত তিরিশ চল্লিশের দশকে তো বটেই। মিত্র সম্মিলনীর পুজো শুরু হয়েছিল ১৯২৭ সালে। তবে তারও আগে ছিল টাউন ক্লাবের পুজো। টাউন ক্লাবের পুজো শুরু হয় ১৯১৭ সালে। টাউন স্টেশন দুর্গাপূজা কমিটির পুজোই টাউন ক্লাবের পুজো। বাঙালি রেলকর্মীদের ভাবনাতেই এসেছিল দুর্গাপুজোর কথা। তাতে শিলমোহর দেন ডিএইচআর রেলের ব্রিটিশ সাহেবরা। তখন পরাধীন ভারত, কাজেই কর্তার ইচ্ছায় কর্ম-- অর্থাৎ সাহেব কর্তার সুপারিশে বাঙালি রেলবাবুদের উদ্যোগে শিলিগুড়ি শহরের প্রথম বারোয়ারি পুজো শুরু হয় টাউন স্টেশন সংলগ্ন টাউন ক্লাবে।
এই পুজোর বিসর্জনেরও ছিল চমক। ট্রয়ট্রেনে করে মহানন্দা নদীতে ভাসান হতো প্রতিমা। এই ভাসান অবশ্য বন্ধ হয়ে যায় ১৯৬২ সালের পর থেকে। ১৯৬২ সালে ইন্দো-চীন যুদ্ধের সময় থেকে কিছুদিন বন্ধ ছিল এই পুজো। এরপর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় ট্রয় ট্রেনে ভাসান। পরে বেশ কয়েকবার এই পুজো টাউন স্টেশন থেকে স্থানান্তরিত হয়ে রেলওয়ে ইন্সটিটিউড কলোনিতে হয়েছিল। কিছুদিন পরে অবশ্য স্ব-স্থানে ফিরে আসে। এইপুজো উপলক্ষ্যে দূর দূরান্ত থেকে গরু মোষের গাড়ি করে আসতেন মানুষ। যোগ দিতেন পুজোয়। পুজোর সময় বসতো মেলা। পুজোর চারদিন রেলের পক্ষ থেকে দরিদ্র নারায়ণ সেবা হতো।
তবে, এই যে শুনি শিলিগুড়ির নাকি কোনো সংস্কৃতিই নেই! শুনেই লাফিয়ে উঠল পাড়ার পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা অল্পবয়সী তাতুন—এতো আর রাজরাজড়ার পুজো না, এ যে জনগণের জন্য জনগণের পুজো--এর ঐতিহ্য কী কিছু কম নাকি, অ্যাঁ?
তাকে হাত তুলে নিরস্ত করে বোসকাকু বলে চললেন, শিলিগুড়ির দ্বিতীয় প্রাচীনতম দুর্গাপূজা মিত্র সম্মিলনী ক্লাবের। ১৯২৭ সালে এই পুজোর শুরু। শিলিগুড়ির গণ্যমান্য মানুষজন- প্রিয়গোপাল সেন, যতীন্দ্রনাথ গুপ্ত, অবনীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য প্রমুখ এ পুজোর উদ্যোক্তা ছিলেন। আর ছিলেন ক্লাব সংলগ্ন ক্ষুদিরাম পল্লি, মহানন্দা পাড়া এবং বিধান রোডের বাসিন্দারা। মন্ডপেই তৈরি হতো প্রতিমা। প্রথম মৃৎশিল্পী ছিলেন ব্যোমকেশ পাল। পরবর্তীকালে তার বংশধরেরাই এই প্রতিমা নির্মাণের কাজটি করে এসেছেন।
বোসকাকুর স্মৃতিতে ভেসে আসে শরতের মেঘ-- বলে চললেন,উল্টোদিকে ইস্কুল ছিল তো আমাদের। প্রাইমারি ইস্কুল। নীলনলিনী প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাই খড় পড়ার দিন থেকে ভিড় করতাম মন্ডপে। তারপর একে একে মাটি পড়তো-- তারপরে চক্ষুদান! আহা, মৃন্ময়ী মা চোখের সামনে চিন্ময়ী হয়ে উঠতেন। পুজোর চারদিন ভিড় হতো প্রচুর। ডুয়ার্স, চা বাগান, আশপাশের এলাকা থেকে প্রচুর লোক শামিল হতেন পুজোয়। প্রথম দিকে পুজো করতেন যতীন চক্রবর্তী। পরে অনেকবার অনেকেই পুজো করেছেন। নির্দিষ্ট থাকেনি। আড়ম্বর নয়, নিষ্ঠা আর আন্তরিক আয়োজনে সম্পন্ন হতো পুজো। এখনও তাই। পুজোর শেষে বিজয়া সম্মেলনী আর মহালয়ার দিনে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা সাবেকি এই পুজোর অন্যতম ঐতিহ্য। তবে, দুটিই যোগ হয়েছে অনেক পরে। সময় ধরলে বছর ওই তিরিশেক হবে।
ওদিকে পুজো হতো মহানন্দা পাড়াতে আর বর্ধমান রোডেও। বর্ধমান রোডের পুজো পরিচিত ছিল শিল্পাঞ্চলের পুজো নামে। পটুয়া একই। ব্যোমকেশ পাল। একটু পার্থক্য করে দিতেন কার্তিক গণেশ এদিক ওদিক করে। নইলে সব এক, সেই একচালার প্রতিমা। সেই একই মুখের আদল। তা সে পুজো অবশ্য ১৯৪০ কী ৪২ এর হবে।
আর ছিল শিলিগুড়ির আদি কালীবাড়ি বা আনন্দময়ী কালীবাড়ির পুজো। এ বছর তাদের ৯২ বছর। বোসকাকুর কথার সূত্র ধরে আনন্দময়ী কালীবাড়ি পৌঁছে গেলাম। পূজা কমিটির সম্পাদক ভাস্কর বিশ্বাস এবং ক্লাব সদস্য সমীর ভট্টাচার্য্যের সূত্র ধরে স্মরণিকা হাতে পাওয়া গেল। কথাসূত্রে জানা গেল, শিলিগুড়ির ঐতিহ্যবাহী আনন্দময়ী কালীবাড়ির দুর্গাপুজোর ইতিহাস। ডি আই ফাণ্ড মার্কেটের এক নির্জন স্থানে ১৯২৬ সালে চালাঘরে কালীপুজো দিয়ে এই মন্দিরের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৩১ সালে তৎকালীন কমিটির সভাপতি সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও অন্যান্য সদস্যবৃন্দ লক্ষ্মীনারায়ণ ভট্টাচার্য, অন্নদাচরণ বাগচি, মুকুন্দলাল বিশ্বাস প্রমুখের উদ্যোগে এবং এলাকার বাসিন্দাদের অনুরোধে এখানে দুর্গাপুজো করার সিদ্ধান্ত হয়। এই মন্দির এবং মাতৃমূর্তির নামকরণ করেন প্রখ্যাত চারণকবি মুকুন্দদাস। প্রথমবারের মতোই পুজোর রীতিনীতি মেনে এখনও পুজো করা হয় এখানে। পঞ্চমীর দিন বস্ত্রদান এই পুজোর ঐতিহ্য। সপ্তমী অষ্টমী নবমীর দিন পুজোর ভোগ বিতরণ হয়। তিথি মেনে হয় বিসর্জন। নিয়ম নিষ্ঠা, আন্তরিক আয়োজনে একইরকমভাবে পুজো সম্পন্ন হয়ে আসছে মন্দিরে।
বোসকাকু বলেছিলেন, এছাড়া যাদব সমিতির পুজোও বেশ প্রাচীন। পঞ্চাশের দশক থেকেই সে পুজোর শুরু।
বর্তমানে শিলিগুড়ি শহরের পুজোর সংখ্যা ১১১। বড় পুজো অর্থাৎ বড় বাজেটের পুজো ৭৭টি। অন্যতম পুজোগুলির মধ্যে আছে --সেন্ট্রাল কলোনি, দাদাভাই স্পোর্টিং ক্লাব, রথখোলা স্পোর্টিং ক্লাব, রবীন্দ্র সংঘ, সুব্রত সংঘ, কলেজ পাড়া সার্বজনীন, জাতীয় তরুণ সংঘ (JTS), উপকার ক্লাব, সূর্যনগর ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন, জুয়েল অ্যাথলেটিক ক্লাব প্রভৃতি।
পুজোর কথা শুনতে পেলাম শিলিগুড়ির অন্যতম প্রাচীন ক্লাব বান্ধব সংঘ পুজো কমিটির প্রেসিডেন্ট চিন্ময় সাহার কাছে। এবছর তাদের পুজো ৭৬ বছরে পা রাখবে। আলোকসজ্জা আর অন্দরসজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট অভি। অভিদাকে ধরা গেল এবং জানা হলো অনেক কিছুই। ক্লাবের এবারের পুজোর থিম-- বাংলার ঐতিহ্য। মন্ডপ তৈরি হচ্ছে অতীত বাংলার জমিদার বাড়ির আদলে। বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক হিসেবে কুলো, হাতপাখা, আলপনা প্রভৃতির অনুষঙ্গ থাকছে। এসব দিয়ে তৈরি হবে মন্ডপের অন্দর ও বাহিরমহল। থিম তো থাকছেই, সাবেকিয়ানাও এ ক্লাবের এবারের অন্যতম উপস্থাপনের বিষয়।
বান্ধব সংঘের সমসাময়িক যে সব ক্লাবের পুজো হতো সেগুলি হলো বিবেকানন্দ স্পোর্টিং ক্লাব, স্বস্তিকা যুবক সংঘ, সঙ্ঘশ্রী প্রভৃতি। হাকিমপাড়ার অরুণোদয় সংঘের পুজো এবছর ৬১ বছরে পা রাখতে চলেছে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সুজয় ঘটক জানালেন, প্রতিবছরের মতো এবারের পুজোতেও থাকছে থিম এবং সাবেকিয়ানার মিশেল। এবারের মন্ডপও পরিবেশবান্ধব। এবারে তালপাতা, হোগলাপাতা প্রভৃতি উপকরণ দিয়ে সেজে উঠবে পুজোমণ্ডপ। শৃঙ্খলাসম্পন্ন,স্বচ্ছ ও পরিবেশবান্ধব হিসবে অনেকবার পুরস্কৃত হয়েছে অরুণোদয় সংঘের পুজো। এ ক্লাবের পুজোয় মেয়েদের অগ্রণীর ভূমিকা রয়েছে। আন্তরিক আয়োজনে সম্পন্ন হয় পুজো-- বাসিন্দাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি, একসঙ্গে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন মুখরিত করে তোলে পুজোর দিনগুলি।
সূর্যনগর ফ্রেন্ডস ইউনিয়নের সেক্রেটারি আইনজীবী মদন ভট্টাচার্য। তার মুখে শোনা গেল ক্লাবের নানা তথ্য। ৬৯ বছরে পা রাখছে তাদের পুজো। সমসাময়িক যেসব ক্লাবে পুজো শুরু হয়েছিল, সেগুলি হলো-- ভারততীর্থ ক্লাব, কাছারি রোড যুবক সংঘ প্রভৃতি। পুজো উপলক্ষ্যে স্মরণিকা বের হয় সূর্যনগর ফ্রেণ্ডস ইউনিয়ন ক্লাব থেকে। নাম 'বাঁশি'। প্রতিবছর অষ্টমীর দিন বের হয় এই স্মরণিকা। ক্লাবের পক্ষ থেকে এলাকার বাসিন্দা বয়স্কদের সংবর্ধনা দেওয়ার রীতি রয়েছে, পুজোর সময়। এই ক্লাবে এবারেও থিম পুজো হবে। থিমের বিষয়ে : 'পৃথিবীর বিবর্তন'।
কলেজ পাড়া সার্বজনীন' ক্লাবের সম্পাদক তনুজ সিংহ জানালেন, এ বছর তাদের ৭৩তম পুজো। অন্য দিকে, বিধান স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোর শুরু হয়েছিল আনুমানিক ১৯৬৫ সাল নাগাদ, জানা গেল। ষাট সত্তরের সমসাময়িক অন্যান্য পুজোর মধ্যে আছে, দাদাভাই স্পোর্টিং ক্লাব, সুব্রত সংঘ, দেশবন্ধু পাড়ার নবীন সংঘ প্রভৃতি।
শিলিগুড়ি শহরের সংস্কৃতি সমন্বয়ের। আজ নয়, প্রথম থেকেই। বাঙালিদের দুর্গোৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজার আয়োজন করে চলেছে নেপালিরাও। প্রধাননগরের এমনই পুজো কমিটির সম্পাদক কৃষ্ণ লামার সঙ্গে কথা হলো। জানালেন,১৯৯২ সাল থেকে এই পুজো শুরু হয়। এই পুজো অবাঙালি সংস্কৃতি 'নবরাত্রি'র অঙ্গ হলেও এদের প্রতিমার আদলে সনাতন বাঙালি চিন্ময়ীর প্রকাশ। এবছরে মহালয়ার দুদিন আগে থেকে শুরু হচ্ছে উৎসব। 'প্রতিপদা' তিথিতে দেবীর ঘটস্থাপন। নেপালি সংস্কৃতির অঙ্গ 'ফুলপাত্তি' উৎসব শুরু হচ্ছে প্রতিবছরের মতোই সপ্তমীর দিন। ওইদিন কন্যাপূজা। সেদিনই 'নউমোতি বাজা' বাজিয়ে ডোলিতে করে মা দুর্গার আগমন। তার সঙ্গে পদযাত্রা করবে নেপালি ‘সমাজ'। আজকাল ঐ এলাকার বাঙালিরাও সামিল হচ্ছেন এখানে। ট্র্যাডিশনাল 'মালশ্রীর" ধুন ট্র্যাডিশনাল চাটুম ড্যান্স, ট্র্যাম্পু ডান্স সহযোগে পদযাত্রা হবে সেদিন। দশমীর দিন বাঘাততীন পার্কের কাছে একটি বালিকা বিদ্যালয়ের মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে-- এভাবেই দুর্গাপুজোর আনন্দ সার্বজনীন হয়ে উঠতে থাকে ।
গত বছর থেকে শিলিগুড়ি শহরে শুরু হয়েছে কার্নিভাল। আগে ছিল ভাসান দেখতে যাওয়ার হুজুগ। বিধান রোড থেকে হিলকার্ট রোড জুড়ে ভাসানের শোভাযাত্রা তখনও ছিল এখনো আছে। কার্নিভাল তার পোশাকি আধুনিকতা! বোসকাকুর সঙ্গে দেখা হলো আবার। জানালেন 'এখন তো সব থিম পুজো। সাবেকিয়ানা কোথায়?'। আমি বললাম, আছে সবই। মিলনপল্লি সর্বজনীন পুজোকমিটির সাবেকি দুর্গাপুজোও তো এবার চল্লিশ বছরে পড়লো। আবার উত্তরায়নের পুজোর বয়স মাত্রই কয়েক বছর!
কী জানি কে জিতল। থিম নাকি সাবেকিয়ানা! পাড়ার পুজোর শেষে সিঁদূরচর্চিত, মুখমণ্ডল সন্দেশমন্ডিত -- দেবী ট্রাকবাহনে ফেরার পথ ধরলে একইরকম মন খারাপ হয়ে যায় তিন প্রজন্মের!। মা আাঁচল দিয়ে চোখ মোছেন, আমার চোখের কোণে বাষ্প জমে, মেয়ে সহসা মুখ ফিরিয়ে অন্য প্রসঙ্গ তোলে আর আড়চোখে দেখে দেবীর গমন। এবার নাকি আগমন গমন দুইই ঘোটকে। এবার সত্যি সত্যি ঘোড়ায় লাগাম দিয়েই আসছেন তাহলে! তুরন্ত এসে পুজোটুকু নিয়েই বিদায়! নতুন প্রজন্ম তো বড়ই ব্যস্ত। কমেছে ফুরসত। তাই কী এতো তড়িঘড়ি দেবীরও? সমস্যাসঙ্কুল মর্তে এর চেয়ে বেশি সময় কাটানো বড়ই কঠিন কিনা! কন্যা বললো, শারদ পরিক্রমা কথায় কথায় শেষ করলে তাহলে--! আমি বললাম, আরে না, না,এতো প্রতিবারের গপ্পো। একই থাকে। তবে পুরোনো হয় না। শেষও হয় না।
বোসকাকু বললেন, সব শহরেরই নিজস্ব চরিত্র থাকে। ব্যতিক্রমী নয় শিলিগুড়িও। আমি ভাবলাম, ঠিক কথা। পুরোনো পাড়া ভেঙে ফ্ল্যাট কালচার যতোই গজিয়ে উঠুক, থিম হোক বা সাবেকিয়ানা-- আবেগ হোক বা হুজুগ-- শহর শিলিগুড়ি যেমন ছিল, আজও তাই। এখানে অবাঙালিদেরও পুজো আছে, আছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আয়োজনে বয়স্কদের বাসে করে ঘোরানোর সংস্কৃতিও। শিলিগুড়ি শিলিগুড়িতেই। তার তুলনা একমাত্র সেই। উৎসবের উদ্দীপনার শহর এখনও তেমনি জেগে আছে-- বেঁচে আছে তার মতো করেই।
গ্রন্থ ঋণ:
১. শিলিগুড়ি ( পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস )-- শিবপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়।
২.স্মরনিকা: ৭৫ বছরে আনন্দময়ী কালীবাড়ি।
তথ্য সহায়তা: চিন্ময় সাহা, তনুজ সিংহ, সুজয় ঘটক, মদন ভট্টাচার্য, ভাস্কর বিশ্বাস, কৃষ্ণ লামা।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা: পৃথ্বীরাজ সেন, পাপুন ভট্টাচার্য, নবেন্দু গুহ, সুজিত রাহা, অভি, সঞ্জীব ঘোষ, সমীর বাগচী।
Have an account?
Login with your personal info to keep reading premium contents
You don't have an account?
Enter your personal details and start your reading journey with us
Design & Developed by: WikiIND
Maintained by: Ekhon Dooars Team