× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021105716.jpg
×
সংখ্যা: কার্ত্তিক, ১৪৩০
সম্পাদকের কলম
ফিরিয়ে দাও মান, ফিরিয়ে দাও হুঁশ মাগো!
সম্পাদক - এখন ডুয়ার্স
বিশেষ নিবন্ধ
সর্ব মঙ্গল মঙ্গল্যে
রম্যাণী গোস্বামী
বিশেষ নিবন্ধ
উত্তরবঙ্গের পুজোয় বিবর্তন প্রসঙ্গে
জয়দীপ সরকার
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১৪
সব্যসাচী দত্ত
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টউন | পর্ব - ৭
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
টয়ট্রেনে চাপিয়ে হতো দুর্গামায়ের ভাসান: শিলিগুড়ির পুজোকথা
নবনীতা সান্যাল
কোচবিহার অনলাইন
কোচবিহারের কয়েকটি প্রাচীন দুর্গাপূজায় সাবেকিয়ানা আজও বজায় আছে
অভিজিৎ দাশ
উত্তর-পূর্বের চিঠি
প্রাগজ্যোতিষপুর সাহিত্য উৎসব ২০২৩
নব ঠাকুরিয়া
পর্যটন
অজানা পাহাড়ি গ্রাম তাকলিং
সৌরভ রায়
খোলা মনে খোলা খামে
কোথায় হারিয়ে গেছে সেই গাছে ফুলে সেজে থাকা শহর!
অর্পিতা মুখার্জী চক্রবর্তী
আমচরিত কথা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে
তনুশ্রী পাল
উত্তরের বইপত্র
টোটো সমাজে নারীর স্থান সম্মানজনক
অর্ণব সেন
পাতাবাহার
ইলিশ পুরান
পাতা মিত্র
পুরানের নারী
রেবতীর কথা
শাঁওলি দে

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী গৌতমেন্দু রায়

রেবতীর কথা

শাঁওলি দে
Rebatir Kotha

রেবতীর কথা আমরা বিষ্ণুপুরাণ থেকে জানতে পারি। এছাড়াও ভাগবত পুরাণ ও মহাভারতেও রেবতীর নাম পাই। কৃষ্ণের বড়ভাই বলরামের স্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম পেলেও পুরাণে রেবতীর নিজস্ব ভূমিকাও কিছু কম নয়।

রেবতীকে লক্ষ্মী রূপে আরাধনা করা হয়, আবার বলরাম ছিলেন বিষ্ণুর অবতার, সুতরাং এই নিয়ে মতভেদ থাকলেও তা জোর গলায় অস্বীকার করা যায় না। আবার বলভদ্র মাহাত্ম্য অনুসারে রেবতীকে নাগলক্ষ্মী বলেও কল্পনা করা হয়েছে, যিনি ছিলেন শেশার পত্নী।

রেবতী ছিলেন সুন্দরী, জ্ঞানী ও বিদুষী একজন নারী। কুশস্থলীর রাজা রেবত-ককুদ্মির একমাত্র কন্যা ছিলেন তিনি।রেবতের কন্যা বলে তাঁর নাম হল রেবতী। বিবাহের বয়স হলে ককুদ্মির মনে হয় কোনো পুরুষই তাঁর কন্যার যোগ্য হতে পারে না। তবু তিনি সম্ভাব্য পাত্রদের এক তালিকা তৈরি করেন ও সঠিক পাত্র নির্বাচনের জন্য প্রায় নিরাশ হয়েই ব্রহ্মার আবাসে কন্যাকে নিয়ে হাজির হন। এইখানে পিতা ও কন্যার সঙ্গে এক মজার ও বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। ওঁরা যখন ব্রহ্মার আবাসে আসেন ব্রহ্মাদেব তখন গন্ধর্বদের গান শুনছিলেন। ওইসময় তাঁকে বিরক্ত করা ঠিক হবে না মনে করে পিতা ও কন্যা ধৈর্যের সঙ্গে অপেক্ষা করতে থাকেন।

ব্রহ্মাদেবের গান শোনা শেষ হলে ককুদ্মি বিনীতভাবে প্রণাম করে সেই নির্বাচিত তালিকা তাঁকে দেন ও জানতে চান যে কোন পাত্র তাঁর একমাত্র কন্যার যোগ্য স্বামী হতে পারে।

ব্রহ্মাদেব তখন হেসে ওঠেন এবং জানান যে যতক্ষণ তাঁরা এইখানে অপেক্ষা করছিল ততদিনে মর্ত্যে সাতাশটি চতুর্যুগ পেরিয়ে গিয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি জানান একেক লোকে সময় একেকরকম ভাবে চলে। আর মর্ত্যলোক ব্রহ্মালোকের তুলনায় অনেক বেশি গতিশীল। সেজন্যেই ব্রহ্মালোকে তাঁদের অপেক্ষার কালে মর্ত্যলোকে সমস্ত প্রার্থীসহ রাজা ককুদ্মির যত প্রিয়জন, আত্মীয় পরিজন, মন্ত্রী সভাসদ ছিলেন সকলে মারা গিয়েছেন। তাঁর ধন সম্পদ সব বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু তবু তাঁর চিন্তার কোনো কারণ নেই কারণ সামনেই কলিযুগ আসছে এবং এই যুগেই তাঁর কন্যার জন্য তিনি যোগ্য পাত্র নির্বাচন করে তাঁকে বিয়ে দিতে পারবেন।

এই বিস্ময়কর কথা শুনে ককুদ্মি স্বভাবতই ভয় পেয়ে যান। কিন্তু ব্রহ্মাদেব তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন বিষ্ণু স্বয়ং তাঁর দশ অবতারের এক অবতার বলরামকে রেবতীর স্বামী হিসেবে নির্বাচন করে রেখেছেন। বলরাম ছিল বিষ্ণুর প্রধান অবতার কৃষ্ণের বড়ভাই।

এরপর রেবতী তাঁর পিতার সঙ্গে মর্ত্যে ফিরে এলে আশপাশের পরিবর্তন দেখে ভীষণই অবাক হন, কারণ তাঁদের মনে হচ্ছিল এই তো কিছুক্ষণ আগেই তাঁরা ব্রহ্মালোকে গিয়েছেন অথচ মাঝখানে নাকি সাতাশটি চতুর্যুগ চলে গিয়েছে। পেরিয়ে গিয়েছে সত্য ও ত্রেতা যুগ। পরিবর্তন হয়েছে কত কিছুর। বদলে গিয়েছে মানুষের হাবভাব, চালচলন, পোশাক আশাক, রীতি-নীতি, সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্বিক বোধ, আরও আরও কত কিছু। তাঁদের সময়ে যা ছিল তাঁর চাইতে অনেক নিচুস্তরে চলে গিয়েছে সবাই। বুদ্ধি, শক্তি, বৈচিত্র্য যা পুরুষদের অহংকার ছিল তা কমে গিয়েছে অনেকটাই। সবচাইতে অবাক হয়েছিলেন তাঁরা এটা দেখে যে তাঁদের রাজধানী কুশস্থলী বলে আর কোনো জায়গা নেই, সেখানে রয়েছে দ্বারকা নগরী।

যাইহোক এরপর রেবতীর সঙ্গে বলরামের দেখা হয়। বিবাহ তো হতোই পূর্বনির্ধারিত ভাগ্যানুসারে কিন্তু কার্যত দেখা গেল রেবতী যেহেতু আগের যুগের এবং বলরামের চাইতে উচ্চতায় অনেকটা লম্বাও তাই বলরাম তাঁর কাঁধে রাখা নিজের অস্ত্র লাঙ্গল রেবতীকে কিছুটা ছোট করে দিলেন এবং রেবতীও নিজেকে খানিকটা সংকুচিত করে ফেলল বলরামের তুলনায়। এরপর সুষ্ঠুভাবে তাঁদের বিবাহ সম্পন্ন হল। যদিও রেবতী বলরামের থেকে প্রায় কয়েক লক্ষ বছর বড়। দুই হাজার বছর আগের লেখা গর্গ সংহিতা ও পরবর্তীকালের ভাগবত পুরাণে রেবতীর উল্লেখ পাই।

প্রসঙ্গত এখানে বলে রাখা ভালো যে, সত্য যুগে মানুষ ছিল একুশ হাত লম্বা, ত্রেতা যুগে চোদ্দ হাত এবং দ্বাপরে সাত হাত থেকে কলিযুগে সাড়ে তিন হাতে ঠেকেছে। আবার ব্রহ্মালোকের চব্বিশ ঘন্টা অর্থাৎ মর্ত্যলোকের আট’শ চৌষট্টি কোটি বছর। রেবতী আর তাঁর পিতা সওয়া দণ্ড অপেক্ষা করেছিলেন, সওয়া দণ্ড মানে আধঘন্টা অর্থাৎ আঠারো কোটি বছর। ততদিনে পেরিয়ে গিয়েছে সত্য ও ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগও দাঁড়িয়ে আছে শেষের পথে, কলিযুগ আসন্ন।

রেবতীকে জানা যায় একজন মাতৃদেবীরূপে, যিনি মহান ধ্বংস করতে সক্ষম ছিলেন। পুরাকালেই দির্গজিহভি নামে এক অসুর দেবতাদের আক্রমণ করার হুমকি দিলে দেবতারা স্কন্ধের কাছে সাহায্য চান। স্কন্ধ তখন রেবতীকে ডাকেন তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য। রেবতী ছদ্মরূপ ধারণ করে রাক্ষসদের মধ্যে এমন তাণ্ডব লীলা চালান যে রাক্ষসেরা ভয়ে মনুষ্য নারীর গর্ভে আশ্রয় চায়। রেবতী তখন জটাহারিণী রূপে গর্ভধারনের আগেই রাক্ষসদের বধ করে নারীদের মুক্ত করেন।

যেহেতু রেবতীকে লক্ষ্মীদেবীর আরেক রূপ ধরা হয়, তাই তাঁকে সৌভাগ্য ও সম্পদের দেবীও বলা হয়। আবার রাক্ষসদের গর্ভে ধারণ না করতে দেওয়ার কারণে তাঁকে শিশুদের দেবী হিসেবেও পূজা করা হয়। আগেকার দিনে নিঃসন্তান দম্পতিরা সন্তান পাওয়ার আকাক্ষ্মায় রেবতীকে পূজা করতেন। হিন্দুধর্মে কোনো শিশুর জন্মের ছয়দিনে যাকে আমরা ছয়ষষ্ঠী বলি তাতে রেবতীর পূজা করা হয়। তাই রেবতীকে ষষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত করা হয় ও মনে করা হয় রেবতীকে প্রকৃতির একটি দিক।

রেবতী ও বলরামের দুই ছেলে- নিশাথ ও উলমুক ও একটি কন্যা শশীরেখা। পরবর্তীতে দ্বাপর যুগের শেষে কৃষ্ণের মৃত্যুর পর যদু বংশের যে ভাতৃঘাতী যুদ্ধ হয়েছিল তাতে এই দুই ভাই মারা যান। বলরাম সমুদ্রের ধারে ধ্যানে বসে তাঁর পার্থিব শরীর ত্যাগ করেন এবং কেউ কেউ মনে করেন রেবতীও সেই একই সঙ্গে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন।

রেবতীর মৃত্যু নিয়ে বেশ কয়েকটি বিতর্ক আছে, যেহেতু কোথাও পরিস্কারভাবে কিছু লেখা পাওয়া যায় না। কিছু কিংবদন্তী অনুসারে রেবতীর মৃত্যু বলরামের অনেক আগেই হয়েছিল। কেউ আবার মনে করেন রেবতী বলরামের সঙ্গে অরণ্যে চলে যান, এবং স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁরও সেখানে মৃত্যু ঘটে।

পুরাণে পূর্নজন্মের অনেক ঘটনা আমরা দেখতে পাই কিন্তু রেবতীর মতো এক জন্মেই সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর যুগ ঘুরে আসা নারী খুব একটা নেই।

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team