× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021081913.jpg
×
সংখ্যা: কার্ত্তিক, ১৪৩০
সম্পাদকের কলম
ফিরিয়ে দাও মান, ফিরিয়ে দাও হুঁশ মাগো!
সম্পাদক - এখন ডুয়ার্স
বিশেষ নিবন্ধ
সর্ব মঙ্গল মঙ্গল্যে
রম্যাণী গোস্বামী
বিশেষ নিবন্ধ
উত্তরবঙ্গের পুজোয় বিবর্তন প্রসঙ্গে
জয়দীপ সরকার
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১৪
সব্যসাচী দত্ত
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টউন | পর্ব - ৭
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
টয়ট্রেনে চাপিয়ে হতো দুর্গামায়ের ভাসান: শিলিগুড়ির পুজোকথা
নবনীতা সান্যাল
কোচবিহার অনলাইন
কোচবিহারের কয়েকটি প্রাচীন দুর্গাপূজায় সাবেকিয়ানা আজও বজায় আছে
অভিজিৎ দাশ
উত্তর-পূর্বের চিঠি
প্রাগজ্যোতিষপুর সাহিত্য উৎসব ২০২৩
নব ঠাকুরিয়া
পর্যটন
অজানা পাহাড়ি গ্রাম তাকলিং
সৌরভ রায়
খোলা মনে খোলা খামে
কোথায় হারিয়ে গেছে সেই গাছে ফুলে সেজে থাকা শহর!
অর্পিতা মুখার্জী চক্রবর্তী
আমচরিত কথা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে
তনুশ্রী পাল
উত্তরের বইপত্র
টোটো সমাজে নারীর স্থান সম্মানজনক
অর্ণব সেন
পাতাবাহার
ইলিশ পুরান
পাতা মিত্র
পুরানের নারী
রেবতীর কথা
শাঁওলি দে

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী গৌতমেন্দু রায়

উত্তরবঙ্গের পুজোয় বিবর্তন প্রসঙ্গে

জয়দীপ সরকার
Uttarbanger Pujo

বিগত শতকের শেষ দশক থেকে বিশ্বায়ন যখন গুটিগুটি পায়ে আমাদের দেশে ঢুকতে শুরু করল, আমরা উত্তরবঙ্গের স্কুল কলেজ পড়ুয়া সেদিনের কিশোর, যুবরা তার উত্তাপ টের পাচ্ছিলাম খবরের কাগজের হেডলাইনে। মেট্রো ক্যাশ এন্ড ক্যারি নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছিল বাম শাসকের অন্দর মহলেও। সেই বিতর্কগুলো অবশ্য আমাদের জন্য টাটকা ছিল না কোনোদিনই, কারণ তখন ট্রেন যোগাযোগ এত অপ্রতুল ছিল যে কলকাতা থেকে প্রকাশিত খবরের কাগজ কোচবিহার পৌঁছত একদিন পরে। আমরা সোমবার সকালের খবরের কাগজ পড়তে পেতাম মঙ্গলবার স্কুল থেকে ফিরে। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে, কলকাতার পাড়ায় পাড়ায় এখন বহুজাতিক সংস্থার রিটেল কাউন্টার বিনা বাধায় ব্যবসা করে, এবং আমাদের এই প্রান্ত দেশেও জিওমার্ট-ট্রেন্ডস এখন জীবনের ‘ট্রেন্ড’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সেই তখন-সময়ে উত্তরবঙ্গের মফঃস্বল শহরে শহরে যে দুর্গাপূজা হত তাতে ভীষণ এক গ্রাম্যতা আর সাবেকিআনা ছিল। কাঠের ফ্রেমের উপর লাভলি কাপড় আলপিনে এঁটে গোটা শহরে দুচারটা বড় পূজার মণ্ডপ তৈরি করত এলাকার প্রসিদ্ধ ডেকরেটররা, আমাদের দিনহাটা শহরে যেমন প্রসিদ্ধ ছিল ‘কালা-হুটু'র ডেকরেটর’। কালা এবং হুটু নামক সেই দুই বন্ধুর জুটি, যাদের ভালো নাম আমাদের দাদারা কুইজের প্রশ্নের মত জিজ্ঞেস করত আমাদের, বলতে পারলে দুর্গাপূজার সময়ে মণ্ডপে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজও জুটে যেত। হ্যাঁ, তাঁরা সেলিম-জাভেদের মতই গুরুত্বপুর্ণ ছিল আমাদের পূজার চিত্রনাট্যে। একটু ছোট ছোট ক্লাবের মণ্ডপ নির্মিত হত পাড়ার শিল্পীদের নির্দেশনায়। পাটকাঠি, পাটের আঁশ, মাটির কাজ, বাঁশ এসব দিয়েই সেজে উঠত কত না মণ্ডপ। থাকত সুন্দর সুন্দর আলপনা, আর বেশিরভাগ পুজোর মণ্ডপের ফিনিশিং টাচ অষ্টমীর সকালের আগে শেষ হয়ে উঠত না। অষ্টমীর দুপুর ভরে উঠত গোবিন্দ ভোগ চালের খিচুড়ির সুগন্ধে, আর রাত থেকে রাস্তায় ভিড় বাড়ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের। সে ছিল এক প্রাণখোলা আনন্দ যাপন।

তখন ডিডি বাংলা ছিল একমাত্র টিভি চ্যানেল, যাতে আমরা সন্ধ্যায় কলকাতার পূজা পরিক্রমা দেখতাম। বড় বড় প্যান্ডেলের শিল্পকর্ম সে এক অবাক বিস্ময় জাগাত আমাদের চোখে। গত দুটো দশকে অবশ্য বদলে গেছে প্রায় সবটাই। এখন আমাদের শহরেও কলকাতার সেই সব প্যান্ডেল নির্মিত হয় নিপুণ দক্ষতায়, এখন আমাদের শহরেও দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থীতে সব পূজার উদ্বোধন হয়, কলকাতার মত ফিতে কেটেই। এই তো গত বছর কলকাতা শহরের মহানাগরিকের পূজা বলে খ্যাত, চেতলার বিখ্যাত মণ্ডপ ‘ষোলোকলা পূর্ণ’ এবার আমার বাড়ির পাশেই। না, এখন ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় পাড়ার কোনো উদ্যমী দাদা নাওয়াখাওয়া মাথায় রেখে প্যান্ডেলে রং ঘষতে ব্যস্ত, এমনটা আর দেখা যায় না। এখন সপ্তমীর সকালে ‘আলপনার জন্য রং করা কাঠের গুঁড়ো এখনো শুকোয় নি’ বলে পাড়ার দিদিদের চিৎকার চেঁচামেচি আর শোনা যায় না। এখন মেদিনীপুর নদীয়া থেকে প্রশিক্ষিত পেশাদার লোকজন আসে এখানেও, সময় মেপে কাজ করে মহালয়ার মধ্যেই প্যান্ডেল ‘ডেলিভারি’ দিয়ে দেয়। আসলে চাপ থাকে তাদেরও, কারণ কলকাতায় বসে ভার্চুয়ালি সেগুলো উদ্বোধন করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় নেতা, মন্ত্রী, বিশিষ্টজন দিয়ে উদ্বোধন তো পরের পর্যায়। তৃতীয়া থেকেই রাস্তায় ভিড় হয় এখন আমাদের মফঃস্বলেও। রক্ষে একটাই, এই শহরগুলো কলকাতার মত বড় আয়তনের নয় বলে, ট্রেন-বাস-অটো করে শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত ছুটতে হয় না, একবার হাঁটলে এক সন্ধ্যায় সব পূজা দেখা হয়ে যায়। একবার, দুবার, তারপর একঘেয়েও হয়ে যায় আমার মত অনেকেরই। কিন্তু সেসব নিয়ে পূজার উদ্যোক্তাদের কোনো কিছু আসে যায় না, জমকের টেক্কা দেওয়ার বাইরে কোনো দর্শন তো আসলেই নেই।

এই জমকের উৎস সন্ধান আজ বড় জরুরি। উত্তরবঙ্গের বড় শহর শিলিগুড়ি যেমন তার একটা কসমোপলিটান চেহারা আছে অবস্থানগত কারণে। মালদা বা কোচবিহারের মত জেলা সদরে আছে জনসংখ্যার আধিক্য। স্বভাবতই এইসব শহরে শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স ইত্যাদির আবির্ভাব একটা ন্যাচারাল গ্রোথ। কিন্তু মাথাভাঙ্গা, দিনহাটা, ধুপগুড়ি, কামাখ্যাগুড়ি এইরকম ছোট শহরেও এখন একাধিক শপিং মলের উপস্থিতি কেন? এর পেছনে আর্থিক যোগানের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকাঠামো কিন্তু সাধারণভাবে নজরে পড়ে না। কারণ এই অঞ্চলগুলোতে কোনো শিল্পায়ন তো ঘটেনি। আর সরকারি চাকরির বাজার তো ক্রমাগত সংকুচিত হয়েছে। অতএব সাধারণ অংকের হিসেবে এই ছোট মফঃস্বল শহরগুলোতে নগরায়নের গতি শ্লথই হওয়া উচিত। কিন্তু হচ্ছে ঠিক উলটোটা। আসলে একটা নির্মম বাস্তব হচ্ছে এই যে, কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমরা সমাজের যে শ্রেণীকে ‘লুম্পেন প্রলেতারিয়েত’ বলে চিহ্নিত করতাম, তারা আজ ‘লুম্পেন বুর্জুয়া’তে রূপান্তরিত হয়েছে। তারাই সমাজের নানান স্তরে উঞ্ছবৃত্তি করে খোলামকুচির মত টাকা উপার্জন করছে। বাংলার সাবেকি শিক্ষা-সংস্কৃতি-মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুত যাপন তাদের, ভোগবাদের বাইরে কোনো দর্শন নেই। তারাই এখন সাধারণ মানুষের ইচ্ছে অনিচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের চাহিদা মেটাতেই প্রাদুর্ভাব এইসব মল-সংস্কৃতির। তাদের বদান্যতায় হিন্দি ঢুকে পড়ছে মফস্বল বাংলার মননে জীবনে। তাদের দৌরাত্ম্যেই হারিয়ে যাচ্ছে সাবেকি বাংলা।

আর প্রশ্নটা এখানেই, দায়টা কার? উত্তর যদি খুঁজতে হয়, বাঙালি বুদ্ধিজীবী সমাজকেই নিজেদের আগে আয়নায় দাঁড়াতে হবে। এটা বুঝতে হবে, গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘে আমরা বিনিয়োগ করিনি, তার চেয়ে অনেক বেশি করেছি শ্রমিক সংগঠনে, কারণ তারাই মিছিলে ভিড় বাড়িয়েছে। আমরা রবিঠাকুরকে ড্রয়িংরুম থেকে বের করিনি, তাঁর বিবিধ সমাজভাবনাকে জনগণের সহজপাচ্য করবার দায়িত্ব কেউ নিইনি। উল্টে সত্তর দশক থেকে বাংলা সাহিত্য, শিল্প, সিনেমা ইত্যাদি গণমাধ্যমগুলিকে যথাসম্ভব দুর্বোধ্য করে তোলার খেলা, 'বাজারি' শিল্প-সাহিত্য নামে শ্রেণী পৃথকীকরণ, সেইসঙ্গে বঙ্গীয় সাবেকি বিশ্বাসগুলোকে অবজ্ঞা বা দ্রুত ভেঙেচুরে দেওয়ার প্র্যাকটিস করেছি। এসবের পরিণামই হলো বাংলার সংস্কৃতিতে অপেক্ষাকৃত ‘চটুল’ কালচারের হুহু অনুপ্রবেশ। আমরা নিজেদের ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলতে এই সংস্কৃতিকে শুধুমাত্র গোবলয়ের রাজনীতির অনুপ্রবেশ বলে নিজেদের যতই সান্ত্বনা দিই না কেন, গোবলয়কে কিন্তু এই ভূখণ্ডে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে কোনো চক্রান্ত করতে হয় নি, কারণ প্রয়োজন পড়েনি। সেই দূর্মুখ চৌধুরী সাহেব কবেই বলে গিয়েছেন, জাতি হিসেবে আমরা আত্মঘাতী।

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team