× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021081913.jpg
×
সংখ্যা: মার্চ, ২০২২
সম্পাদকের কলম
রঙ বরষে
প্রদোষ রঞ্জন সাহা
বিশেষ নিবন্ধ
‘আলু উৎসব’ আলু চাষের কঠিন বাস্তব ছবিকেই প্রকট করে তুলেছে
তন্দ্রা চক্রবর্তী দাস
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও একনাগাড়ে লাভের মুখ দেখে চলেছে উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ ব্যাংক। পর্ব - ৯
প্রশান্ত নাথ চৌধুরী
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন। পর্ব - ৫। কুশান
সব্যসাচী দত্ত
ধারাবাহিক উপন্যাস
ডাউন হলদিবাড়ি সুপারফাস্ট। পর্ব - ১৭
সুজিত দাস
নিয়মিত কলম
মুর্শিদাবাদ মেইল। কাশিমবাজার ডাচ সমাধি
জাহির রায়হান
নিয়মিত কলম
কোচবিহার কড়চা। ভুলে ভরা হেরিটেজ তালিকা সংশোধন না হলে ঐতিহ্যের অবমাননা হবে
অরবিন্দ ভট্টাচার্য
নিয়মিত কলম
আমচরিত কথা। পর্ব – ১৩। খুদে কাগজের খেসারত নামা
তনুশ্রী পাল
নিয়মিত কলম
খুচরো ডুয়ার্স। পুরো ওয়াকোভার!
ডাঃ কলম সিং,এম.বি. (ইউক্রেন),বি.এস (কলকাতা)
এই ডুয়ার্স কি তোমার চেনা?
আদিম ডুয়ার্সের ডালিমকোট, গরুবাথান আর শাখাম
শৌভিক রায়
পুরানের নারী
ইলার আখ্যান
শাঁওলি দে

‘আলু উৎসব’ আলু চাষের কঠিন বাস্তব ছবিকেই প্রকট করে তুলেছে

তন্দ্রা চক্রবর্তী দাস
AlooUtsab22

এসময় উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ পথে ঘাটে যে ছবিটি অতি পরিচিত তা হলো আলু বোঝাই গাড়ির লাইন। বছরভর মানুষকে খাদ্যের যোগান দিতে শয়ে শয়ে টন সদ্য উৎপাদিত আলু চাষের খেত থেকে চলেছে হিমঘরে ঘুমোতে। এই সময় স্থানীয় উদ্যোগে আয়োজিত আলু উৎসব ২০২২ অভিনব এবং তাৎপর্য বহন করে কোনও সন্দেহ নেই। আমেরিকা চিন পেরু এসব দেশে বিশাল ঘটা করে Potato Festival বা আলু উৎসব উদযাপিত হয় শুনেছি, তবে আমাদের দেশে বা এই রাজ্যে এমন উৎসব কোথাও হয়েছে বলে জানা নেই। সেই আলু উৎসবই সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল কোচবিহারে। দুদিন ধরে, নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে, বেসরকারি উদ্যোগে।

উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেল, আলু যেহেতু কোচবিহারের অর্থকরী ফসল, তাই বহুদিন ধরেই তারা চাইছিলেন আলুকে নিয়ে একটা জনসচেতনতা গড়ে তুলতে। আলু চাষিদের অভাব অভিযোগ, তাদের উৎপাদিত ফসল প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমজনতার সামনে আনতে। ১৯০ জন আলু চাষি তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের আলু দিয়েছিলেন এই প্রদর্শনীতে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের দিয়ে আলু চাষিদের একদিনের একটা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন উদ্যোক্তারা। ১৪ রকম বিভিন্ন ধরনের আলু নিয়ে হাজির ছিল উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। আলুকেই মূল উপকরণ রেখে কত রকমের পদ রান্না করা যায় তার একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল এই উৎসবে। আলুকে কেন্দ্র করে শিল্প গড়ে তোলা যায় কিনা বা বাইরে থেকে বিনিয়োগ আনা যায় কিনা সেই উদ্দেশ্যেই এই আলু উৎসব। প্রথমবারের উদ্যোগে ব্যবসায়ী মহল থেকে শুরু করে প্রশাসন সকলেরই সাহায্য পেয়েছে বলে জানান।

প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে আলুর যা চাহিদা তার থেকে বেশি আলু উৎপাদিত হয়, উদ্বৃত্ত আলু রপ্তানি করা হয় অন্যান্য রাজ্যে। আর আলু চাষে কোচবিহার জেলা ভালো জায়গা দখল করেছে, পশ্চিমবঙ্গে তো বটেই, ভারতের মধ্যেও। কোচবিহার ছাড়াও আলুর ভালো ফলন হয় বর্ধমান, হুগলী, নদীয়া, মেদিনীপুরে। বর্ধমানে সবচাইতে বেশি আলুর ফলন হয়, হেক্টর প্রতি ৩২ টন। তারপরই নদীয়া, হেক্টর প্রতি ৩১.৮ টন। কোচবিহারে জ্যোতি, পোখরাজ, হল্যান্ড, কুফরি খ্যাতি আর বাদাম আলু - এই পাঁচ রকমের আলু উৎপাদিত হয়। কোচবিহারের জলবায়ু, মাটি সবটাই আলু চাষের পক্ষে উপযুক্ত। তাই আলু উৎপাদনে উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলোর তুলনায় কোচবিহার এগিয়ে। এবছর কোচবিহারে চাষ হয়েছে ৩১০০০ হেক্টর জমিতে, ফলন ৩১.১০ টন/হেক্টর।

কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হলো, অপ্রতুল হিমঘর এবং আলু ভিত্তিক কোনও শিল্প গড়ে না উঠবার ফলে প্রয়োজনের উদ্বৃত্ত আলু রপ্তানি হয়ে চলে যায় অন্যান্য জেলায় এবং উত্তর পূর্ব ভারতে। যেমন গতবছর আলু উৎপাদন হয়েছিল ৯ লাখ মেট্রিক টন। স্থানীয় প্রয়োজন ৬-৭ লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি নয়, ফলে বাকিটা বাইরের রাজ্যে গিয়েছে। এ বছর দক্ষিণবঙ্গে আলুর ফলন ভালো না হওয়ায় কোচবিহার থেকে আলু বোঝাই গাড়ি যাচ্ছে বর্ধমান হুগলী এসব জায়গায়। জানা গিয়েছে, অন্যান্য বারের তুলনায় এবছর দাম অনেকটাই বেশি পওয়া যাচ্ছে। ১০ টনের গাড়ির দাম যাচ্ছে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। আগের বছর দাম ছিল ১ লক্ষ ১০ হাজার। কিন্তু এই উদ্বৃত্ত আলু বাইরে বিক্রি করে জেলার গ্রামীণ অর্থনৈতিক মানের কোনও উন্নতি ঘটছে কি? আলু চাষিদের সমৃদ্ধি ঘটছে কতটা? অতিরিক্ত লাভের অংশ কার পকেটে ঢুকছে?

অন্যদিকে প্রতিবেশি রাজ্য আসামে আলুর উৎপাদন প্রতি বছর বাড়ছে, দ্রুত স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠতে চাইছেন তারা, ফলে এদিক থেকে রপ্তানির পরিমাণও কমছে। যখন অতিরিক্ত উৎপাদনের ফলে এখানে আলুর দাম পড়ে যায় তখন চাষিদের মাথায় হাত পড়ে। বস্তার পর বস্তা আলু পড়ে পচতে থাকে মাঠে। আসলে এখানে সুনিয়ন্ত্রিত আলুর বাজার বলে কিছু নেই। হিমঘরের বন্ড পাওয়ার জন্য বিক্ষোভ বা পথ অবরোধ প্রতি বছরেরই ঘটনা, এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আলু নিয়ে প্রচুর টাকার ফাটকা খেলা হয়ে থাকে। এতে মিডল ম্যান বা ফড়েরাই টাকা কামিয়ে নেয়। চাষি অবধি সেই টাকা পৌঁছয় না।

আর পাঁচটা উৎসবের মতই এই আলু উৎসবেও শোনা গেল অনেক আশাবাদী কথা-- কোচবিহারের আলুকে বিশ্বমানের করে তোলা হবে। জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত আলু যাতে বিদেশে রপ্তানি করা যায় সেই চেষ্টা করা হবে। আলু চাষের পদ্ধতিকে আরও উন্নত করার চেষ্টা হচ্ছে যাতে বিঘা প্রতি উৎপাদন ১৫০ মন থেকে ২০০ মনে নিয়ে যাওয়া যায়। কোচবিহারে উৎপাদিত আলু চিপস ও ফিঙ্গার চিপসের জন্য খুবই ভালো মানের। তা সত্ত্বেও আলুকে নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো ক্ষুদ্র বা কুটির শিল্প গড়ে ওঠেনি এখানে। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আলু ফ্লেক্স, চিপস বানানোর কারখানার জন্য উদ্যোগপতিরা এগিয়ে এলে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দেওয়া হল এই মঞ্চে।

চিপস ছাড়াও আরও অনেক কিছুই তৈরি করা যায় আলু দিয়ে। হিমঘরে আলু রাখলে ১৬% আলু নষ্ট হয়ে যায়। সেই নষ্ট আলু দিয়ে তৈরি করা যায় ইথানল। বিশাল পরিমাণে না হলেও, কোচবিহার ২ নম্বর ব্লক, মাথাভাঙা ২ এসব জায়গার কিছু কিছু আলু চাষি কনট্রাক্ট চাষের সুবিধা পাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, পেপসিকো ইন্ডিয়া কোম্পানি (ফ্রিটো-লে) আগে থেকেই রেট ফিক্স করে নিয়ে এইসব আলু চাষিদের নির্দিষ্ট আলু বীজ সরবরাহ করছে। উৎপাদিত আলু কোয়ালিটি যাচাই করে ওরাই নিয়ে যাচ্ছে। নিশ্চিত আয় হচ্ছে সেইসব আলু চাষিদের।

আসলে এই অর্থকরী ফসলটির আদর্শ উৎপাদন ভূমি অর্থাৎ একটি মডেল ডিসট্রিক্ট হতে পারতো কোচবিহার জেলা। সম্ভাবনা রয়েছে প্রচুর, কিন্তু বাস্তবে সম্ভব হচ্ছে কতটা? এমনই এক বড় জিজ্ঞাসা চিহ্ন রেখে গেলেন এই উৎসবে অনুপস্থিত কৃষক সমাজ, যাঁদের গাড়িতে করে নিয়ে এসে সাদরে আধুনিক চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল বা উচিত ছিল। যাঁরা চাষের মাঠ থেকে উঠে আসা নানা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতে পারতেন উৎসবের উদ্যোক্তাদের, ব্যবসায়ী মহলকে, কৃষি গবেষকদের, সরকারি আধিকারিকদের? কৃষিতে প্রকৃত উন্নয়ন চাইলে চাষিদের মুখোমুখি হওয়াটা বেশি প্রয়োজন, তাঁদের কঠিন বাস্তবের কাহিনি শেয়ার করার মঞ্চ রাখা বেশি প্রয়োজন। সে সব না হলে এই ধরণের শহরমুখী উৎসব একশ্রেণীর ব্যবসায়ীর নিজস্ব কার্যসিদ্ধি এবং সরকারি রুটিন দায়িত্ব পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team