× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021105753.jpg
×
সংখ্যা: মার্চ, ২০২২
সম্পাদকের কলম
রঙ বরষে
প্রদোষ রঞ্জন সাহা
বিশেষ নিবন্ধ
‘আলু উৎসব’ আলু চাষের কঠিন বাস্তব ছবিকেই প্রকট করে তুলেছে
তন্দ্রা চক্রবর্তী দাস
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও একনাগাড়ে লাভের মুখ দেখে চলেছে উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ ব্যাংক। পর্ব - ৯
প্রশান্ত নাথ চৌধুরী
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন। পর্ব - ৫। কুশান
সব্যসাচী দত্ত
ধারাবাহিক উপন্যাস
ডাউন হলদিবাড়ি সুপারফাস্ট। পর্ব - ১৭
সুজিত দাস
নিয়মিত কলম
মুর্শিদাবাদ মেইল। কাশিমবাজার ডাচ সমাধি
জাহির রায়হান
নিয়মিত কলম
কোচবিহার কড়চা। ভুলে ভরা হেরিটেজ তালিকা সংশোধন না হলে ঐতিহ্যের অবমাননা হবে
অরবিন্দ ভট্টাচার্য
নিয়মিত কলম
আমচরিত কথা। পর্ব – ১৩। খুদে কাগজের খেসারত নামা
তনুশ্রী পাল
নিয়মিত কলম
খুচরো ডুয়ার্স। পুরো ওয়াকোভার!
ডাঃ কলম সিং,এম.বি. (ইউক্রেন),বি.এস (কলকাতা)
এই ডুয়ার্স কি তোমার চেনা?
আদিম ডুয়ার্সের ডালিমকোট, গরুবাথান আর শাখাম
শৌভিক রায়
পুরানের নারী
ইলার আখ্যান
শাঁওলি দে

উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন। পর্ব - ৫। কুশান

সব্যসাচী দত্ত
Loksongskriti_5

উত্তরবঙ্গের প্রচলিত পালাগুলির মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় পালা কুশান। মূলত কোচবিহার, কোচবিহার সংলগ্ন অসম ও বাংলাদেশে এই পালা প্রচলিত। রামায়ণ ও পুরাণ নির্ভর এই পালা প্রাচীন ও ঐতিহ্যমন্ডিত। উপস্থাপনার দিক থেকে বিচার করলে এই পালায় আধুনিক প্রয়োগ কপোশল লক্ষ্য করা যায়। ‘কুশান’ পালার সঙ্গে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায় রামায়ণ গান বা রামলীলার।

কুশান পালার উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত। বাল্মীকি মুনি তাঁর আশ্রমে শিক্ষা দিয়েছেন রাম-সীতার দুই পুত্র লব ও কুশকে। তাঁর শিক্ষাতেই রাম-নাম প্রচারের উদ্দেশে দান গেয়ে বেড়ায় তারা। ‘কুশ’-এর নাম থেকেই  কুশান কথাটির প্রচলন মনে করা হয়। অধ্যাপক শিশির মজুমদার তাঁর ‘উত্তর গ্রামচরিত’ গ্রন্থে  উল্লেখ করেছেন পশ্চিম দিনাজপুরের ‘লক্ষ্মীয়ালা’ গানের। আশ্বিন সংক্রান্তিতে দিনাজপুরের রাজবংশী বা দেশি-পলি সম্প্রদায় ধান ওঠার আনন্দে লক্ষ্মীপুজো করেন। কারণ কৃষকের কাছে ধানই হ’ল ‘লক্ষ্মী’। এই পুজো উপলক্ষ্যে লক্ষ্মীর বন্দনা গাওয়া হয়। তিনি লিখছেন, ‘এই অঞ্চলে (পশ্চিম দিনাজপুর) লক্ষ্মী-র বন্দনা তিন শ্রেণির। আশ্বিন সংক্রান্তির ক্ষেতিলক্ষ্মী পুজো, কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার খজাগর এবং মানসিক অনুযায়ী বছরের যেকোনও সময়ে অনুষ্ঠেয় ‘নক্ষ্মী-ব’। নক্ষ্মী-ব উপলক্ষ্যে যে গান হয় তার নাম লক্ষ্মীয়ালা। সীতাই হ’ল লক্ষ্মী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লক্ষ্মী বিষয়ক যে গান বাঁধা হয় তার ভিত্তি রামায়ণ। কোচবিহারে তার নাম ‘কুশান’।’

প্রসঙ্গ ক্রমে আমরা উল্লেখ করতে পারি রামায়ণের প্রচলিত কাহিনি সম্পর্কে। রাবণ কর্তৃক সীতা হরণের কাহিনিতে অনেকেই সীতাকে শষ্যের রূপক মনে করেন। কারণ সীতাকে তাঁর পিতা জনক পান লাঙল দ্বারা জমি চষতে গিয়ে।

কুশান গানের অনন্যতা (Identity) তার উপস্থাপনে। একজন থাকেন মূল গায়েন। তাঁর হাতে থাকে ‘ব্যানা’। ব্যানা কুশান গানে ব্যবহৃত আবশ্যক বাদ্যযন্ত্র। প্রচলিত রয়েছে ব্যানা বাজিয়ে লব-কুশ রামায়ণ গান গেয়ে শোনাতেন। ব্যানা হয়ে উঠেছে কুশান পালাগানের অন্যতম পরিচায়ক। নারকোল মালা, বাঁশ ও ঘোড়ার লেজ দিয়ে তৈরি এই বাদ্যযন্ত্রটি।

ছয় ইঞ্চি ব্যাসের নারকোলের মালার খোলা দিকটি ছাগলের পাকস্থলির চামড়া দিয়ে ছাওয়া হয়। তাতে লাগানো হয় আঠারো লম্বা সরু বাঁশের দন্ড। বাঁশের দন্ডের মাথায় বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরি একটি চাবি লাগানো হয়। একগুচ্ছ ঘোড়ার লেজের চুল নারকোল মালার সঙ্গে লাগিয়ে অপর প্রান্ত চাবিটিতে লাগানো হয়। এই চাবিটির সাহায্যে সুর ঠিক করা হয়। নারকোল মালার ঠিক মাঝখানে চামড়ার ওপর একটি ‘ব্রিজ’ লাগানো হয়। দু-প্রান্তে লাগানো ঘোড়ার পুচ্ছ এই ব্রিজের ওপর দিয়ে যাবে। বাজানো হয় ছড়-এর সাহায্যে। ছড়টি তৈরি হয় বাঁশের টুকরো বাতায় লাগানো ঘোড়ার লেজের চুল দিয়ে। ঘোড়ার লেজের পরিবর্তে এখন অবশ্য প্লাস্টিক বা লাইলনের সুতো ব্যবহার করা হয়।

কুশান পালায় একজন মূল গায়েন ও একজন দোয়ারী থাকেন। আর থাকেন অন্যন্য শিল্পী, গায়ক ও বাদ্যযন্ত্রী বৃন্দ। মূল গায়েনকে ‘গীদাল’ বলা হয়। গীদাল ও দোয়ারীর প্রতিভা, উদ্ভাবনী ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে দলের আকর্ষণ পালার জনপ্রিয়তা। মূল গীদালের নামে সাধারণত দলের পরিচিতি হয়। অতীতে এই দুজনই বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতেন। এখন অবশ্য চরিত্রাভিনেতারা অভিনয় করেন। এক একটি দলে পনের থেকে কুড়ি জন শিল্পী থাকেন।

পালার শুরুতে ছুকরি নাচ। অর্থাৎ ছেলেরাই মেয়ে সেজে যৌন উদ্দীপনমূলক নৃত্য পরিবেশন করেন। সমবেত বাদ্যযন্ত্র সংগীতের সঙ্গে এই নাচ আকর্ষণ করে সকলকে। আসরে টেনে আনে। এরপর আসর বন্দনা। বন্দনা অংশেই পালার নাম ঘোষণা করা হয়। এখানে একটি বন্দনা গানের উল্লেখ করা যেতে পারে।  

আইসেক মাও সরেস্বতী

রথে করিয়া ভর।।

ভয় জোগারে নামিয়া আইসেক মাও

মোরসভার ভিতর।।

মোর সভা ছাড়িয়া যদি মাও অন্য সভা যাবু

আর কিছু কিরা নাগাং ধর্মের মাথা খাবু।

পুবে রাজা বন্দি যাব ভানু ভাসংকর

উত্তরে কালিকা বন্দি দক্ষিণে সাগর।

পশ্চিমে বন্দিয়া গানু পারুয়া মোকাম

আশি হাজার পীর বন্দং এ সভার ভীতর।

বন্দনার কথা ভাইরে ছাড়ান দিয়া যাই

লক্ষ্মণের শক্তিশেল পালা সভাতে জানাই।

এই বন্দনা গীতের সঙ্গে সম্পূর্ণ আসর পরিক্রমা করেন শিল্পীগণ। এই গানের উদ্দেশ্য পালার আসরটি যেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। এই সময় একজনের হাতে একটি পাত্রে থাকে ফুল প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ ও ধূপকাঠি। বন্দনা গানের শেষে সমস্ত শিল্পী মঞ্চ ও দর্শকের উদ্দেশে প্রণাম করেন।

এর পরেই শুরু হয় মূল অভিনয়। কাহিনি অনুযায়ী চরিত্রাভিনেতারা অভিনয় করেন। আর থাকেন মূল গীদালের সংগে দোয়ারি। দোয়ারি দর্শক শ্রোতাদের হাসান কাঁদান। একাধারে সে ভাঁড় ও বিবেক। সে শোনায় দর্শনের কথা মনোগ্রাহী আলোচনায় সে তুলে আনে বিভিন্ন তত্ত্বকথা। অভিনয়ের সঙ্গে থাকে নাচের অংশ। নারীচরিত্র ও নাচের অংশ পূর্বে ছেলেরাই কেবল করত। এখন এই ‘ছুকরি’ দের পাশাপাশি মেয়েরাও নৃত্য পরিবেশন করেন অভিনয় করেন।

কুশান গানে ব্যানা থাকতেই হবে। এই ব্যানা যে কেবল বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় তা নয়। তা গীদালের প্রয়োগ নৈপুণ্যে কখনও হয়ে ওঠে তীর-ধনূক, ঘোড়ার প্রতিক বা সীতার বিশ্বাস। ব্যানা ছাড়াও ব্যবহার করা হয় হারমোনিয়াম, ডুগি-তবলা, বাঁশি, খোল, আকরাই, বেহালা, কড়তাল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। আগে বাদ্য যন্ত্রীরা মাঝখানে বসতো তাঁদের চারপাশে ঘুরে ঘুরে শিল্পীর অভিনয় করতেন। এখন বাজিয়েরা বসেন মঞ্চের একপাশে।

(ক্রমশঃ)

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team