× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021105753.jpg
×
সংখ্যা: শ্রাবণ, ১৪৩০
সম্পাদকের কলম
হিংসা নিরসনের পথ কোথায়?
সম্পাদক - এখন ডুয়ার্স
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১১
সব্যসাচী দত্ত
ডাকে ডুয়ার্স
বন্যা এখন বনেও বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে
বিমল দেবনাথ
দুয়ার বার্তা
ভুটানের শিল্পদূষণে ডুয়ার্সের গ্রাম আজ অসহায় রোগ-মৃত্যুর উপত্যকা!
প্রদোষ রঞ্জন সাহা
কোচবিহার অনলাইন
কোচবিহারের প্যাডম্যান ভবঘুরে রাজা নীলাঞ্জন দত্ত
তন্দ্রা চক্রবর্তী দাস
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
ক্রীড়া ও সংস্কৃতির শহর গড়ে তুলতে ক্লাবগুলির অবদান শিলিগুড়ির কেউ ভুলতে পারে?
নবনীতা সান্যাল
দিনাজপুর ডে আউট
ইসলামপুর মহকুমা উপসংশোধনাগার
মনোনীতা চক্রবর্তী
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টৌন | পর্ব - ৪
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তর-পূর্বের চিঠি
হারিয়ে যেতে দেব কি আমরা ইতিহাসের বীরগাঁথা ও মায়ায় ঘেরা শনবিলকে?
মেঘমালা দে মহন্ত
পর্যটন
চিসাং ওয়াইল্ড উড হোমস্টে
সৌরভ রায়
নেট গল্প
যে দিন ভেসে গেছে
শাশ্বতী চন্দ
আমচরিত কথা
রেল রাহীর রচনা
তনুশ্রী পাল
পাতাবাহার
বর্ষায় লাউ চিংড়ি নাকি মেটে চচ্চড়ি? কোনটা খাবেন?
পাতা মিত্র
পুরানের নারী
অপ্সরা তিলোত্তমা
শাঁওলি দে

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী বিমল দেবনাথ

উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১১

সব্যসাচী দত্ত
Uttarbanger Loksanaskriti

এগারো

“বিশ্বকেতু-চন্দ্রাবলী” কাব্যগুণে সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ। অত্যন্ত যত্ন সহকারে রচনাকার সাফাতুল্লা সরকার তা নির্মাণ করেছেন। সাধারণ পাঠকের মনকে উদ্বেল করেছে। তাই বংশ পরম্পরায় অনেক মানুষ বইটি সংগ্রহ করেছেন, পাঠ করেছেন। কবির কাব্যগুণে সমৃদ্ধ অন্যতম একটি অংশ এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে,

বিশ্বকেতুর মৃগয়ায় গমন

একদিন বিশ্বকেতু আনন্দিত মনে।

নিবেদন করে রায় পিতার চরণে।।

শুন পিতা মহারাজ! বলি বিদ্যমান।

শিকার করিতে যাব গহন কানন।। 

শুনিয়া পুত্রের বাণী বলিছে রাজন।

কেমনে যাইবে বাপু গহন কানন।।

কত দুষ্ট জন্তু আছে পর্ব্বত সমান।

সৈন্য সেনা লয়ে যাও হয়ে সাবধান।।

লক্ষ লক্ষ ঘোড়া লও হস্তী পালে পাল।

কোটি কোটি সৈন্য লও বিক্রমে বিশাল।।

শুনিয়া পিতার আজ্ঞা হরিষ অন্তরে।

কটক সাজাতে বলে বিজন কান্তারে।।

শুনিয়া সৈন্যের পতি করে ডঙ্কা বাড়ি।

আওয়াজ শুনিয়া নাচে যত ঘোড়া ঘুড়ি।।

কটকের পদাঘাতে কাঁপিল সহর।

কম্পমান হইল পুরী কলকা নগর।।

কুমার যাইবে বলে শিকার কৌতুকে।

নগর ভাঙ্গিয়া সৈন্য চলে লাখে লাখে।।

ইরাকী তুরকী তাজই হাতী সারি সারি।

শেল জটা লয়ে কত সাজিল সন্তরি।।

অতশি কুসুম শ্যামা করিয়া স্মরণ।

জোড়হস্তে বন্দিলেন পিতার চরণ।।

রাজদ্বারে সৈন্যদলে জয় বাড়ি দিল।

জয় জয় বলি রায় শিকারে চলিল।।

ঘোড়া উট হাতী পৃষ্ঠে নাকারা নিশান।

গাড়িতে কামান চলে বান চন্দ্র বাণ।।

আগে চলে লাল মোষ খাস বরদার।

সিপাই সন্তরে চলে কাতারে কাতার।

আগে পিছে সৈন্য চলে হাজার হাজার।।

নটনটী হরকরা ঊরুদু বাজার।।

লোকের বসতি ছাড়ি বনে প্রবেশিল।

অস্ত গেল দিনমণি শশী প্রকাশিল।।

অরণ্য ভিতরে রায় লয়ে সৈন্যগণ।

রন্ধন ভোজন করি করিল শয়ণ।

কবি সাফাতুল্লা বলে শুন নরপতি।

মৃগীরূপে দেখা দিবে চন্দ্রাবলী সতি।।

 

এমনি ক’রে কাব্য কাহিনি এগিয়ে চলে। মোট একশ আটটি শিরোনামে তিনশ আটচল্লিশ পৃষ্ঠার দীর্ঘ এই রচনা আমাদের মুগ্ধ করে। এবার আমরা “বিশ্বকেতু চন্দ্রাবলী” পালার মূল পাঠের কিছু অংশ উল্লেখ ক’রে কাব্যগ্রন্থ ও পালার অভিনেয় অংশ খেয়াল করবো।

 

শাপমুক্তির পর চন্দ্রাবলীর সঙ্গে বিশ্বকেতুর প্রথম সাক্ষাৎ। স্থান কাম সরোবর। (চন্দ্রাবলী ও বিশ্বকেতুর প্রবেশ)

বিশ্বকেতু।। কন্যা তুই কায়? এখনে হরিণ ছিলু সরোবরে গাও ধুইয়া সুন্দরী কন্যা হলু। মোক পরিচয় দে।

চন্দ্রাবলী।। রাজকুমার আমি স্বর্গের চন্দ্রসেনের কন্যা—নাম চন্দ্রাবলী। আমি প্রতিদিন ইন্দ্রের সভায় নৃত্য করি। একদিন মোর তালভঙ্গ হৈল; দেবরাজ আমাকে অভিশাপ দেয়। এমই সেই হৈতে বারো বছর হরিণী হৈয়া জঙ্গলে আছি।

বিশ্ব।। তবে তুমি এই সরোবরে গাও ধুইয়া সুন্দরী কন্যা হলু কেনে? তুমি ইহার আগেই এই সরোবরে গাও ধুবার পারিলু হয়।

চন্দ্রা।। রাজকুমার দেবরাজ আমাকে যখন অভিশাপ দিল আমি দেবরাজের পায়ে পড়িয়া ক্ষমা চাইলাম দেবরাজ সন্তুষ্ট হইয়া আমাকে উপদেশ দিলেন, চন্দ্রা তুমি যাও, যেদিন তুমি বিশ্বকেতুর দেখা পাবে সেইদিন এই সরোবরে গাও ধুইলে তুমি আবার স্বর্গের অপসরী হইবে। সেইদিন হতে তোমার শাপ মুক্তি।

বিশ্ব।। ভালো কথা, তোমার শাপ-মুক্ত হইল। এখন বল তুমি কোথায় যাবে।

চন্দ্রা।। কেনে? স্বর্গে, আমার বাপ-মায়ের কাছে।

বিশ্ব।। আর আমি কোথায় যাব?

চন্দ্রা।। তোমার বাপ মায়ের কাছে। জোনালী নগর।

বিশ্ব।। কন্যা ওটা কথা হবে না।

চন্দ্রা।। কেনে, তুমি তোমার বাড়ি যাবে, আমি আমার বাড়ি যাব এটা কি খারাপ কথা।

বিশ্ব।। খারাপ ছাড়া কি? তোমার পক্ষে ভাল হবার পারে। আমার পক্ষে একেবার মরণ কথা। তুমি যখন আমাকে দেখিয়া দেবরাজের অভিশাপ মুক্ত হইলা। তখন আমি তোমার উপকার করিলাম। এখন তুমি আমাকে বিয়াও কর। আমি তোমাকে বিয়াও করি—এটাই সবচেয়ে ভাল কথা।

চন্দ্রা।। (স্বগত-স্বগত) হে দেবরাজ, হে ঈশ্বর তোমরা কি স্বর্গসুখ হইতে একেবারেই বঞ্চিত করিলেন। বিশ্বকেতুর কী রূপ, কী সুন্দর মুখখানা, পূর্ণিমার চানদ যেন সব সময় উদয় হইতেছে তার কপালে। বিশ্বকেতু আমার উপকারী বন্ধু। আমি নারী হয়্যা কি করিয়া এই মোহন মূরতিধর পুরুষকে এতবড় জঙ্গলে একায় ফেলে যাই। যদি বিশ্বকেতুর জীবন হানি হয় তবে আমার পাপের সীমা থাকিবে না। (প্রকাশ্যে) তোমার কথার অবাধ্য হওয়া আমার অনুচিত।

বিশ্ব।। কন্যা, তুমি চল আমার বাড়ি, মোর বাপ-মাও তোমাকে সোনার পুতুলার মত দেখিবে। আর আমি হব রাজা, তুমি হবে রাণী। আমরা দুইজন পরম সুখে থাকিব।

চন্দ্রা।। কুমার, তুমি রাজার ছেলে সবকথা বোঝ। আমি ইন্দ্রের শাপে ১২ বছর হরিণী হৈয়া থাকি মোর বাপ-মাও মোর জন্য কান্দিয়া আছে। আমি আজি যাই—আবার মধু চৈত্র মাসে পূর্ণিমা তিথিতে এই সরোবরের তীরে তোমার সাথে দেখা হবে। তুমি ফিরিয়া দেশে যাও।

বিশ্ব।। চন্দ্রা মোক ছাড়িয়া না যান কন্যা। মুই তোক্‌ ছাড়া এক দন্ড থাকির পারিম না।  যদি তুই যাইস—এই ছোড়া নেও; তুই যাবার আগে মোক খুন করিয়া যা (ছোড়া দিল)।

চন্দ্রা।। রাজকুমার আমি অন্যায় কিছু বলি নাই। তুমি তোমার বাবাকে জিজ্ঞেস কর। আমি আমার বাপ-মাওকে জিজ্ঞাসা করি। পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া পুত্র-কন্যার উচিত নয়।

বিশ্ব।।               কন্যা উলা কথা হবে না—

শোন কন্যা চন্দ্রাবলী         হৃদয় জাগাইলেন কালি।

আর আমি নাহি যাব দেশে।

তুমি যাবে স্বর্গপুরে          আমাক ছাড়ি মৃত্যুপুরে

এই বনে প্রাণ বধিম শেষে।

মরিব সরোবর কূলে         খাউক শকুন শৃগালে

এ জীবন না রাখিব খালি।

তোমাক করিব বিয়া         অষ্ট অলঙ্কার পরাইয়া

অনুমতি দেহ চন্দ্রাবলী।

চন্দ্রা।। (গান) ফিরিয়া যাও রাজকুমার ফিরিয়া যাও রে ঘরে, দেখিও তোমার বাপ-মাও যেন কান্দিয়া না মরে অবশ্যে আসিবে আরো মধু চন্দ্র মাস সরোবরের তীরে তোমার পুরিবে অভিলাস। (প্রস্থান)।

বিশ্ব।। চন্দ্রা, চন্দ্রা, চন্দ্রাবলী! কন্যা, জন্মের মত আর দেখিম না তোক –আর মুই বাড়ি ফিরিম্‌ না। এই সরোবর তীরে জীবন ত্যাগ করিম। (প্রস্থান)

                                  দৃশ্য শেষ।

“বিশ্বকেতু-চন্দ্রাবলী” দোতারা ডাঙা পালার অভিনয়ে যে দৃশ্যের অবতারণা করা হয়েছে তা কবির রচনায় কীভাবে উপস্থাপিত হয়েছে তা লক্ষ্য করা যাক—

 

কুমারের অরণ্যে মৃগীরূপে চন্দ্রাবলীর সহিত সাক্ষাৎ  

প্রভাত হইল নিশি বাজে ঘন্টা ঘড়ি।

রণশিঙ্গা জয়ঢাক  বাজে ঘড়ি ঘড়ি।।

সৈন্য সেনা লয়ে ঘিরে দূর্গম কানন।

শব্দ শুনি পালাইছে যত পশুগণ।।

মহিষ গন্ডার মৃগ ধরে লাখে লাখ।

ভয় পেয়ে ব্যঘ্র ছাড়ে পরিত্রাহী ডাক।।

অগ্নি দিয়া পোড়াইল গহন কানন।

রাম সৈন্য কৈল যেন লঙ্কার ভূবন।।

হেনকালে মৃগী এক অতি সুলোচন।

কুমারের আগে আসি দিল দরশন।।

অতি সুগঠন মৃগী সোনার বরণ।।

চক্ষু দুটি জ্বলে যেন রজত কাঞ্চন।।

গলে দোলে রত্নহার করে ধক্‌ ধক্‌।

কপালে তিলক ফোটা করে চক্‌ চক্‌।।

হেরিয়া হরিল মন রাজার নন্দন।

ধরিতে সোনার মৃগী করয়ে যতন।।

খন্ডিবে বিষম শাপ ললাটে লিখন।

মৃগীরূপে চন্দ্রাবলী ফিরে বনে বন।।

কটকেতে আজ্ঞা দিল রাজার নন্দন।

জিয়ন্তে সোনার মৃগী করহ বন্ধন।।

সুবর্ণ কুরঙ্গ সেই জিয়ন্তে ধরিবে।

ধন রত্নে রাজ্য ভূমি পুরষ্কার পাবে।।

যার দিকে স্বর্ণ মৃগী যাবে পালাইয়া।

গাড়ায় গাড়িব তারে সবংশে বধিয়া।।

এতেক শুনিল যবে সৈন্য সেনাগণ।

সারি সারি দাঁড়াইল হস্তে শরাসন।।

যার পাশ দিয়া ভাই মৃগী পালাইবে।

সত্য জান যুবরাজ তাহারে বধিবে।।

বিষম ভাবনা করে সৈন্য সেনাগণে।

কোথা হইতে পাপ মৃগী আসিয়াছে বনে।।

যত পশু বধিলাম হরষিত মন।

এই মৃগী হইতে বুঝি হারাই জীবন।।

কুরঙ্গ না হবে এই কোন মায়াধর।

মায়া করি আসিয়াছে বনের ভিতর।।

না ধরিলে রাজা বধে ধরিব কেমনে।

অঙ্গদের দশা যেন সীতা অন্বেষণে।।

এইভাবে স্ব-সৈন্য বিশ্বকেতুর হরিণ শিকারের দৃশ্যটি ফুটিয়ে তুলেছেন বিস্তারিত কাব্যের ছত্রে ছত্রে। এরপর যখন হরিণী রূপী চন্দ্রাবলী কামসরোবরে ডুব দিল তখন লিখছেন—

অরণ্য ভিতরে আছে কাম সরোবর।

ঝাপ দিয়া পৈল মৃগী জলের ভিতর।।

জলের উপরে পড়ে দিয়া পঞ্চ ডুব।

মৃগীরূপ দূরে গেল হৈলা কন্যারূপ।।

পূর্বরূপ হইল কন্যা সোনার বরণ।

উদ্দেশে বন্দিলা পিতা মাতার চরণ।।

বিবসনা আছে কন্যা দিগম্বরা হয়ে।

দাঁড়াইল জলের উপরে লাজ ভয়ে।।

সরোবর নীরে যেন ফুটে কুমুদিনী।

মুচকি হাসেন ধনী যে সৌদামিনী।।

কবি সাফাতুল্লা বলে চন্দ্রাবলী সতী।

দয়া মায়া থাকে যেন কুমারের প্রতি।।

 

কবি সাফাতুল্লা সরকার আমাদের কাছে এক বিষ্ময়। একশ বছরেরও বেশি আগে প্রত্যন্ত এক গ্রামে কবি কাব্যচর্চা করেন একান্তে। কলকাতা থেকে প্রায় সাতশো কিলোমিটার দূরে বসে এই চর্চা বিশেষ প্রণিধান যোগ্য। খেয়াল ক’রে দেখেছি কলকাতার বাতাসে তার পরিবেশে কিছু এমন আছে যা সংস্কৃতি চর্চাকে বিশেষ রূপে লালন ক’রে। শিল্প ও শিল্পীকে সমৃদ্ধ করে। সাহিত্য ক্ষেত্রেও তাই। যিনি গাঁয়ে বসে সাহিত্য চর্চা করছেন তিনিই সঠিক সময়ে কলকাতায় পৌঁছুলে এখানকার জল-হাওয়া তাঁকে সমৃদ্ধ করে। একথা সকলে মানবেন সে আশা করি না। তবে একথা তো ঠিক শহরের সুবিধেজনক ভৌগলিক অবস্থানের বাইরে কোচবিহারের প্রত্যন্ত গ্রাম পানিশালায় নিভৃতে একজন কবি প্রচলিত কাহিনি অবলম্বনে কাব্য রচনা করেছেন তা পুস্তক রূপে প্রকাশের উদ্যোগ নিচ্ছেন এ বড় সহজ কথা নয়। মানুষের মুখে মুখে ফেরে যে গল্প, যাকে নিয়ে গড়ে উঠেছে জনপ্রিয় দোতারাডাঙা পালা তার সঙ্গে নিজের কল্পনাকে মিশিয়ে যে অনবদ্য সৃষ্টি করেছিলেন কবি সাফাতুল্লা সরকার। তার কাব্য সৌন্দর্য আমাদের বিষ্মিত করে। কেবল কল্পনার দ্বারাই এই কাব্য রচনা করেননি তিনি। ইতিহাসের প্রতিও দায়বদ্ধতা প্রকাশ করেছেন কবি। বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ডঃ শেখ মকবুল ইসলাম এই কাব্য গ্রন্থের দশম সংস্করণের ভূমিকায় লিখেছেন, “ কাহিনি অংশে কল্পনার বুনন থাকলেও কোচবিহার বর্ণন, রাজসভা বর্ণন, পুর বর্ণন প্রভৃতি অংশে ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ করেছেন কবি সাফাতুল্লা। নৃপতি চন্দন থেকে শুরু করে নৃপেন্দ্রনারায়ণ পর্যন্ত প্রায় সব রাজারই বর্ণনা করেছেন সময়কাল সহ। এছাড়া গ্রন্থকারের পরিচয় অংশে কবি নিজের বংশ পরিচয়ও প্রদান করেছেন”।  বাংলার সাহিত্য চর্চার প্রেক্ষিতে উত্তরবঙ্গের সাহিত্য ইতিহাসের কোনও অনালোকিত অধ্যায় হয়তো খুঁজে পেতে পারেন পন্ডিতগণ, সাফাতুল্লার এই কাব্যগ্রন্থ ‘বিশ্বকেতু-চন্দ্রাবলী’র সূত্র ধরে। উত্তরবঙ্গের বিস্তির্ণ ক্ষেত্র জুড়ে যে রত্নরাজী অবহেলায় অযত্নে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাদের নিবিড় পাঠ গ্রহণ করতে হ’লে উত্তরবঙ্গের লোকনাট্য ও সাহিত্য সহ সংস্কৃতির আরও বেশি চর্চা অত্যন্ত প্রয়োজন।

  

(ক্রমশ)

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team