× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021081913.jpg
×
সংখ্যা: শ্রাবণ, ১৪৩০
সম্পাদকের কলম
হিংসা নিরসনের পথ কোথায়?
সম্পাদক - এখন ডুয়ার্স
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১১
সব্যসাচী দত্ত
ডাকে ডুয়ার্স
বন্যা এখন বনেও বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে
বিমল দেবনাথ
দুয়ার বার্তা
ভুটানের শিল্পদূষণে ডুয়ার্সের গ্রাম আজ অসহায় রোগ-মৃত্যুর উপত্যকা!
প্রদোষ রঞ্জন সাহা
কোচবিহার অনলাইন
কোচবিহারের প্যাডম্যান ভবঘুরে রাজা নীলাঞ্জন দত্ত
তন্দ্রা চক্রবর্তী দাস
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
ক্রীড়া ও সংস্কৃতির শহর গড়ে তুলতে ক্লাবগুলির অবদান শিলিগুড়ির কেউ ভুলতে পারে?
নবনীতা সান্যাল
দিনাজপুর ডে আউট
ইসলামপুর মহকুমা উপসংশোধনাগার
মনোনীতা চক্রবর্তী
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টৌন | পর্ব - ৪
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তর-পূর্বের চিঠি
হারিয়ে যেতে দেব কি আমরা ইতিহাসের বীরগাঁথা ও মায়ায় ঘেরা শনবিলকে?
মেঘমালা দে মহন্ত
পর্যটন
চিসাং ওয়াইল্ড উড হোমস্টে
সৌরভ রায়
নেট গল্প
যে দিন ভেসে গেছে
শাশ্বতী চন্দ
আমচরিত কথা
রেল রাহীর রচনা
তনুশ্রী পাল
পাতাবাহার
বর্ষায় লাউ চিংড়ি নাকি মেটে চচ্চড়ি? কোনটা খাবেন?
পাতা মিত্র
পুরানের নারী
অপ্সরা তিলোত্তমা
শাঁওলি দে

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী বিমল দেবনাথ

এক যে ছিল টৌন | পর্ব - ৪

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
Ek je chilo toun 4

Jelpigory

এটাই ছিল রেনেল সাহেবের ম্যাপে জলপাইগুড়ি-র বানান। এর উচ্চারণ হওয়া উচিত ‘জেল্পিগোরাই’। রেনেল সাহেব কি জলপাইগুড়ি নামটা বিকৃত উচ্চারণে লিখেছিলেন? মনে হয় না। জেল্পিগোরাই থেকে জলপাইগুড়ি হওয়াটা সম্ভবত পরবর্তীকালে কোন দেশীয় সরকারী কর্মচারির অবদান। রেনেল যখন মানচিত্র রচনার কাজ করছেন তখন আদি নামটাই প্রচলিত ছিল। ‘জলপাই’-কে ‘জেল্পি’ লেখার কোন কারণ নেই। হতে পারে কথাটা ছিল ‘জল্পি’ কিংবা ‘জুল্পি’ কিংবা ‘জাল্পি’। কিন্তু ‘জলপাই’ নয়।

এই ম্যাপ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৭৭৬-এ।

রেনেল উল্লিখিত জেল্পিগোরাই-এর অবস্থান তিস্তা নদীর ঠিক পশ্চিমপাড়ে। তিস্তা বানান তিনি লিখেছিলেন Teestah. কিন্তু রেনেল সাহেবের দেখা জেল্পিগোরাই-এর অবস্থান বর্তমান জলপাইগুড়ি টাউনের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। তাঁর ম্যাপে জেল্পিগোরাই-এর দক্ষিণে, তিস্তার পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত আরেকটি জনপদের নাম ‘বাহাদুর’

বাহাদুর এখনো আছে। কিন্তু এখন তার অবস্থান জলপাইগুড়ির ঠিক পশ্চিমে।

রেনেল সাহেবের কালে তিস্তা নদীর গতি বর্তমানের তুলনায় অন্যরকম ছিল। এখানে বলা দরকার যে রেনেলের ম্যাপে তিস্তা বেশ বড় মাপের নদী। তুলনায় করতোয়া অনেক শীর্ণ। এখন জলপাইগুড়ি টাউনের পূব দিক ঘেঁসে যে পথ দিয়ে তিস্তা বয়ে গেছে, রেনেলের ম্যাপে তা ছিল কয়েক কিলোমিটার পশ্চিমে।

যদ্দূর মনে হয় তিস্তা তখন বর্তমান টাউনের ওপর দিয়েই বইত। সরকারী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মাসকলাই বাড়ি, কদমতলা, পান্ডাপাড়া ---- আজকের টাউনের এইসব স্থানের ওপর দিয়েই বয়ে যেত সে। মাত্র একশ বছর আগেও কদমতলার দক্ষিণে রেল লাইন পরবর্তী অঞ্চলটি ছিল নিচু এবং জলমগ্ন এবং লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় যে টাউনে জমা জল ওইদিক দিয়েই বেরিয়ে যায়। এছাড়াও গোটা টাউন জুড়েই ছিল প্রচুর ছোট-বড়ো জলাশয়। এগুলি সম্ভবত তিস্তার পুরনো প্রবাহের স্মৃতি।

তখন নদীর পশ্চিম পাড়ে ছিল বাহাদুর আর পূর্বপাড়ে ‘দুর্গাহাট’ (রেনেলের ম্যাপে Durgahaut) নামক জনপদ। এরপর ভূ-আলোড়নের কারণে তিস্তা পূব দিকে সরে যায়। দুর্গাহাট-কে গ্রাস করে ফেলে। সম্ভবত দোমোহানির পাশ দিয়ে তিস্তার যে প্রবাহ, সেখানেই ছিল দুর্গাহাট। সেটা সেকালের বড় জনপদ ছিল বলেই মনে হয়। এই দুর্গাহাট পেরিয়ে Joalpefhe. এটা আসলে জল্পেশ। কিন্তু রেনেল যে বানান লিখেছেন, তা কৌতুহলোদ্দীপক।

বর্তমানে টাউনের পাশ দিয়ে প্রবাহিত তিস্তানদীর জায়গায় ফরাসডাঙ্গা নামের একটি জনপদের অস্তিত্ব প্রমাণ হয় ম্যাপ থেকে। ময়নাগুড়ি নামের কোন স্থান তিস্তার পূবপাড়ে পাওয়া যায় নি, কিন্তু দিনাজপুরের উত্তর সীমানায় একটা স্থানের নাম তিনি উল্লেখ করেছেন Mynagurry.

যাই হোক, রেনেল সাহেবের ম্যাপ অনুযায়ী জেল্পিগোরাই ছিল সম্ভবত বর্তমান বেলাকোবা-র কাছাকাছি। কারণ তিনি Jelpigory এবং Sanashygotta-র যে পারস্পরিক অবস্থান দেখিয়েছেন তার সাথে বর্তমানের সন্ন্যাসী কাটা এবং বেলাকোবার অবস্থান মিলে যায়।

এই জেল্পিগোরাই কি বৈকুন্ঠপুরের রাজধানী ছিল? ম্যাপ অনুযায়ী ওই জেল্পিগোরাই-এর পশ্চিমে, Mahanada (মহানদ) নদীর পূবপাড়ে অবস্থিত একটা স্থানের নাম Sanashygotta. এটা যে বর্তমান ‘সন্ন্যাসী কাটা’-র আদি উচ্চারণ, এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। অনেকের মতে, সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের কালে ওই অঞ্চলে সন্ন্যাসীদের কেটে ফেলা হয়েছিল বলে ‘সন্ন্যাসী কাটা’ নামটা এসেছে। ১৭৬৬ নাগাদ হিমালয় অঞ্চলের সার্ভে করার সময় রেনেল সাহেব অবশ্য বিদ্রোহী ‘সন্ন্যাসী’দের হাতে গুরুতর জখম হয়ে মরতে বসেছিলেন। কোনমতে তাঁকে ঢাকায় এনে সুস্থ করে তোলা হয়েছিল।

কিন্তু Sanashygotta কি ‘সন্ন্যাসী’র স্মৃতি বহনকারী? রেনেল-এর ম্যাপে ‘gotta’ লেখা হয়েছে। Sanashy কি সন্ন্যাসী? না অন্য কোন অবাঙালি শব্দ?

রেনেলের ম্যাপে আছে বালাসন নদীর পূর্ব পাড়ের একটা জায়গা। যার নাম Gosepukaryah. সুতরাং বর্তমান শিলিগুড়ির কাছাকাছি ‘ঘোষপুকুর’-এর উৎসে কোন ঘোষ সাহেব যুক্ত নন বলে মনে করা হলে সেটা খুব অযৌক্তিক হবে কি?

বস্তুত এই Jelpigory, Sanasygotta, Gosepukaryah ইত্যাদি নাম আদৌ বাংলা নয় বলেই মনে হয় এবং সেটা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই সব অঞ্চলে প্রাচীন কাল থেকেই ভোট-তিব্বতিদের যাওয়া আসা ছিল। নেপালী শাসকরাও হানা দিয়েছেন। এই সব অঞ্চলে বাঙালির আগমন খুব বেশিদিনের নয়।

তাই বিস্তৃত ও বুদ্ধিদীপ্ত গবেষণা দরকার। সেটা ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই কেউ করবেন।

যাই হোক, তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে তা জেল্পিগোরাই থেকে অনেকটা পূব দিকে চলে গেল। গতি পরিবর্তনের চিহ্ন স্বরূপ টাউনে ‘করলা’ নামক একটি নদী সৃষ্টি হলো কি না, এটাও গবেষণা যোগ্য। ওই ম্যাপে দেখা যাচ্ছে যে সেকালের জেল্পিগোরাই-এর উত্তরে একটি ছোটনদী তিস্তা থেকে বেরিয়ে এসে কিছুটা পথ অতিক্রম করে আবার তিস্তাতেই মিশেছে। এটাও করলার পূর্বপুরুষ হতে পারে।

যদি রেনেল সাহেবের জেল্পিগোরাই তৎকালীন বৈকুন্ঠপুর শাসকদের রাজধানী হয়ে থাকে তবে তিস্তার গতি পরিবর্তনের কারণে বর্তমান জলপাইগুড়ি টাউনের দিকে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে আসার যথেষ্ট যুক্তি থাকে। রাজধানী নদীর পাশে থাকাটাই স্বাভাবিক।

এবং সেই সরিয়ে নিয়ে আসাটা অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকেই হবে।

কিন্তু সমস্যা হলো এই নিয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণা হয় নি বললেই চলে। রেনেল-এর ম্যাপ এবং তিস্তার গতি পরিবর্তন বিবেচনা করলে একটা জিনিস অবশ্য স্পষ্ট হয়। সেটা হলো, তিস্তার গতি পরিবর্তনের কারণেই বর্তমান জলপাইগুড়ি শহর গড়ে ওঠার সুযোগ পায়।

সেকালের জেল্পিগোরাই বা জেল্পিগোড়ি থেকে তিস্তা পেরিয়ে লুপ্ত হয়ে যাওয়া দুর্গাহাটে এসে যে নদীপথ ধরে প্রায় ব্রহ্মপুত্রে পৌঁছে যাওয়া যেত, রেনেল তার নাম লিখেছেন Durlah. এটা ধল্লা বা ধরলা নদী। আর জল্পেশের পাশ দিয়ে প্রবহমান নদীটির নাম ভারি অদ্ভুত। Jerdeclcer. এই নদী তখন স্বাস্থ্যবতী ছিল এবং এর নাম এখন জর্দা। পুরাণ লেখকরা এর নামকরণ করেছিলেন জটোদ্ভবা।

আসলে পৌরাণিক নামকরণের আড়ালে এবং পরবর্তীকালে বাঙলা জানা কর্মচারিদের সৌজন্যে আদি নামগুলি পরিবর্তিত হয়েছে। নামকরণ সব সময় ক্ষমতাবানদের দ্বারা সাধিত হয়। এর ফলে হারিয়ে যায় অনেক কিছু।

(চলবে)

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team