এবছরটা মনে হয় মানুষ বর্ষার অপেক্ষায় সবচেয়ে বেশি তৃষ্ণার্ত ছিল অগ্নিবানের ভীষন প্রাবল্য ও দীর্ঘসূত্রিতায়। অবশেষে বর্ষা এলো তীব্র দহন জুড়িয়ে। প্রতিটি ঋতুই অনুভূতিপ্রবণ মানুষের চেতনায় বহু পূর্ব স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। শৈশবের বর্ষায় ঝিরঝির বৃষ্টির মধ্যে রাস্তা পেরোনো কই মাছের ঝাঁক, নুয়ে পড়া ফলবতী পেয়ারার ডাল, স্কুলে রেইনি ডে হবার আনন্দে ইচ্ছে করে বৃষ্টিতে ভেজা… এরকম কতো সুখস্মৃতি। স্মৃতিরাও বয়ঃক্রমে পাল্টে পাল্টে যায়। ঋতুবিভেদে মানুষের খাদ্যাভাস ও প্রভাবিত ও পরিবর্তিত হয় অবধারিত ভাবে। খুব গরমে পান্তা ভাত, দইএর ঘোল,সরবত, আইসক্রিম,পপসিকল জাতীয় জিনিসের চাহিদা থাকে সেখানে একটু বৃষ্টি পড়তেই মনটা খিচুড়ি খিচুড়ি করে।এই লেখার সময় বাইরে অঝোর ধারাপাত এর মধ্যে মনটা পেঁয়াজি আর চা চাইছে। কিন্তু আমি এখন একটা চিংড়ি মাছের সহজপাচ্য ঝোলের রেসিপি দেবো আর কষা কষা মেটে চচ্চড়ি। আহা বর্ষার দু বেলাই জমে যাবে।
লাউ চিংড়ি
লাগবে - লাউ, ধনেপাতা, চিংড়ি মাছ, বড়ি, নারকোল দুধ, কাঁচা লঙ্কা, ধনেপাতা, আদাবাটা, লঙ্কাগুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, টমেটো আর নুন, স্বাদমতো।
চিংড়ি ভালো করে নুন, হলুদ মেখে ভেজে নিতে হবে। লাউ তিনকোনা, পাত পাত করে কেটে নিতে হবে। বড়ি ভেজে নিতে হবে। মাছ ভাজার পর সর্ষের তেলে সাদা জিরে, শুকনো লঙ্কা, তেজপাতা ফোড়নে দিয়ে টমেটো কুচি একটু ভাজা হলে দিতে হবে আদাবাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো আর নুন। ভালো করে কষিয়ে লাউ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। জল ছাড়বে তাতেই লাউ সেদ্ধ হবে। তবে দেখবেন গলিয়ে ফেলবেন না। সেদ্ধ হবে কিন্তু আকার আকৃতি বজায় থাকবে এই অবস্থায় দিতে হবে মাছ আর বড়ি। আরেকটু রান্না করে তার মধ্যে নারকোল দুধ এক কাপ বা পরিমাণ মতো। তার মধ্যে ধনেপাতা কুচি আর গোটা কাঁচা লঙ্কা চিড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখলেই তৈরি। নারকেলের দুধের জন্য একটু সাদাটে আর ক্রিমি টেক্সচার-এর একটি সুস্বাদু ঝোল হবে।
মেটে চচ্চড়ি
লাগছে - খাসি বা পাঁঠার মেটে, আলু, পেঁয়াজ, রসুন,আদা, টমেটো, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, গরম মশলা, নুন আর ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, কাঁচা লঙ্কা।
সরষের তেলে আলুর টুকরো ভেজে নিতে হবে। তারপর পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে ভেজে তার মধ্যে আদা, রসুন আর সামান্য পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কষিয়ে দিতে হবে টমেটো কুচি। হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো, নুন। এরপর মেটে দিয়ে কষাতে হবে কম আঁচে ঢেকে। তেল বেরিয়ে এলে দিতে হবে কাঁচা লঙ্কা, ধনেপাতা আর পুদিনা পাতা বাটা। আবার কষাতে হবে। প্রয়োজন হলে সামান্য গরম জল। এবার প্রেশার কুকারে ভাজা আলু আর মেটের তরকারি সব দিয়ে দুটো তিনটে সিটি দিতে হবে। কুকার ঠান্ডা হলে খুলে গরম মশলা দিয়ে নামাতে হবে। কারো মনে হলে দিতে পারেন সামান্য চিনি, কালচে রঙের ঘন ঝাল ঝাল গ্ৰেভি হলে বুঝতে হবে রান্না হয়ে গেছে।
Have an account?
Login with your personal info to keep reading premium contents
You don't have an account?
Enter your personal details and start your reading journey with us
Design & Developed by: WikiIND
Maintained by: Ekhon Dooars Team