× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021105753.jpg
×
সংখ্যা: জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০
উত্তরের বন্যপ্রাণ
ভীমরাজ উধাও!
অভিযান সাহা
কোচবিহার অনলাইন
হেরিটেজ তকমাপ্রাপ্ত কোচবিহারে সৌন্দর্যায়নের তত্ত্বতালাশ
তন্দ্রা চক্রবর্তী দাস
ডাকে ডুয়ার্স
গরুমারা জাতীয় উদ্যানের বগলে রিয়েল এস্টেট রমরমা সর্বনাশের ইঙ্গিত নয়?
মমি জোয়ারদার
দিনাজপুর ডে আউট
খন গান
মনোনীতা চক্রবর্তী
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টৌন | পর্ব - ২
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
খোলা মনে খোলা খামে
হারিয়ে যাচ্ছে মায়া ও মায়াবৃক্ষ
শ্যামলী সেনগুপ্ত
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ৯
সব্যসাচী দত্ত
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
বিশ্বায়নের রসায়নে খাবি খাচ্ছে সাবেকি খুচরো ব্যবসার বিধান মার্কেট
নবনীতা সান্যাল
সুস্বাস্থ্যই সম্পদ
গরমের মোকাবিলায় পান্তাভাত পুষ্টিগুণে তুলনাহীন
ডঃ প্রজ্ঞা চ্যাটার্জি
উত্তরের বইপত্র
জলপাইগুড়ি শহরের মুখবন্ধ
গ্রন্থন সেনগুপ্ত
উত্তর-পূর্বের চিঠি
মনিপুরের এই জনজাতি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এ রাজ্যের পক্ষেও অশনি সঙ্কেত
সৌমেন নাগ
সম্পাদকের কলম
সবুজ শীতলতার খোঁজে
প্রদোষ রঞ্জন সাহা
আমচরিত কথা
এক টুকরো ভারতবর্ষ দর্শন | আমচরিত কথা | পর্ব - ১৭
তনুশ্রী পাল
দুয়ার বার্তা
আলিপুরদুয়ার সলসলাবাড়ির ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী মেলা
শিঞ্জিনী চট্টোপাধ্যায়
নেট গল্প
একটি তারার মাঝে
মুকুলিকা দাস
পাতাবাহার
ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল
পাতা মিত্র
পর্যটন
তাকদার সেনাছাউনি
তড়িৎ রায় চৌধুরী

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী চন্দ্রাশ্রী মিত্র

খন গান

মনোনীতা চক্রবর্তী
Khan Gaan

লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন পর্যায়ে সবসময়ই লোকগানের এক সবিশেষ ভূমিকা রয়েছে। স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময় থেকে আজ পর্যন্ত লোকসংস্কৃতির এক উর্বর ভূমি বাংলাদেশ। অবিভক্ত জেলা দিনাজপুর পরবর্তীতে পশ্চিম দিনাজপুর এবং ১৯৯২ সালে রাজনৈতিক পটভূমিকায় দ্বিখণ্ডিত উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গ্রামাঞ্চলে লোকগান 'খন'-এর ভূমিকা সত্যিই অনস্বীকার্য। এই জেলার মাটির সাথে, মানুষের সাথে এই 'খন'-গান যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে রয়েছে।

দিনাজপুরের জনপ্রিয় লোকনাট্য খন গান। রাজবংশী ভাষায় যা 'খন-গাউন'। এই খন শব্দটিকে ঘিরে নানা ব্যাখ্যা রয়েছে। 'খন' এই শব্দটির উচ্চারণ শৈলী থেকে আমরা যেটুকু বুঝি তা-হল ক্ষণকাল বা খুব অল্প সময়ের ভিতর কিছু উপস্থাপন। সমাজ-জীবনের চাঞ্চল্যকর সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে মুখে-মুখে বাঁধা এই গান। যে-পালাটি জনপ্রিয় থাকে, তার আয়ুষ্কালও খুব বেশি হলে দু'বছর। আবার কারও মতে 'খনা' থেকে 'খন'। কিংবদন্তির খনার বচনের খনা যেমন সত্য বচন দেন, ঠিক তেমনই লোকজীবনের সত্য ঘটনা নিয়েই বাঁধা হয় 'খন গান'। লোকনাট্য গবেষক ড. শিশির মজুমদারের মতে ঘটনা কৌতূহলী হলে অনেকসময় 'কাণ্ড' শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই কাণ্ডকেই দিনাজপুরের দেশি, পালরা বলেন 'খণ্ড'। 'খণ্ড' হল ঘটনা। খণ্ড যখন গানে বাঁধা পড়ে, তখন তা 'খন'। বস্তুত খন হল মাটির গান, জীবনের গান।

লোকসংস্কৃতির অন্যতম ক্ষেত্র সমীক্ষক ও গবেষক ড. পুষ্পজিৎ রায়ের মতে, 'খনন' থেকে খন নামের উদ্ভব। আবার কারও-কারও মতে, ক্ষণ-সময়-খণ্ড প্রহর থেকে খনের নামকরণ।

'খন গান'-মূলত একেবারে সাধারণ মানুষ তথা কৃষিজীবীদের গান। মানবিক জীবনের প্রেম-ভাব-ভালোবাসা, বিরহ-বিচ্ছেদ, জীবনের অতি সাধারণ কিছু দিক এ সবই দিনাজপুরের তফসিলি দেশি, পলি, রাজবংশী মানুষের আঞ্চলিক কথ্য-ভাষায় সুরের মায়ায় বাঁধা পড়ে আছে। কালিয়াগঞ্জ, বংশীহারি, কুশমন্ডি, রায়গঞ্জ প্রভৃতি অঞ্চলে মানুষের  সাংস্কৃতিক সান্ধ্য-বিনোদন বলতে খন গানই ছিল একমাত্র মাধ্যম। সন্ধেবেলা কৃষকদের বাড়ির উঠানে হ্যাজাকের ভরা আলোয় পরিবেশিত হত এই গান।

খন পালাগান দু'ভাগে বিভক্ত। ১) ঘিসা খন ২) শাস্তরি খন। ঘিসা খন লোকজীবনের কিরচা-কেচ্ছা-কীর্তিকাণ্ড নিয়ে তৈরি। যেমন অবৈধ প্রেম, পিরিত, ভালোবাসাকেই স্থানীয় ভাষায় বলা হয় 'কিরচা'। যেমন একসময়ের জনপ্রিয় ঘিসা খন- "মিনতি সোরী পুলিশ মার্ডার" বা "কুসুম সোরী বাউদিয়া" প্রভৃতি।

শাস্তরি অর্থাৎ শাস্ত্রীয়। এটি এটি যোগ শাস্ত্র ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক। স্থানীয় ভাষায় 'যুগী-পর্ব'। তবে বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা প্রায় নেই বললেই চলে। বরং 'কিরচা' তথা কেচ্ছার জনপ্রিয়তাই বেশি। পালাগানের নায়িকার নামের শেষে সোরী-র তাৎপর্য প্রসঙ্গে প্রখ্যাত খন শিল্পী মাধাই মহন্তর বক্তব্য- তত্ত্বরসামৃত জ্ঞানমঞ্জরীতে শ্রীরাধিকাকে বলা হয়েছে  'বৃষভানুসূতাং বৃন্দাবনেশ্বরী'। ঈশ্বরী আঞ্চলিক ভাষায় 'সোরী'। শাস্তরি খনে বৈষ্টম বাউদিয়া নয়ন সোরী ঈশ্বরী হলেও ঘিসা খনের মিনতি সোরী বা কুসুম সোরীরা মূল সমাজ জীবন থেকে বিপথে সরে যাওয়ার কারণেই 'সোরী'।

'খন' দিনাজপুরের দর্পণ। দিনাজপুরের খন গান মাটির চির অমলিন গন্ধে আরও উৎকর্ষ লাভ করুক, শ্রীবৃদ্ধি হোক মানব হৃদয়ের তন্ত্রীতে, সাংস্কৃতিক আবহের সাথে সাথে খন-শিল্পীদের জীবনও আলোকিত হোক প্রকৃত অর্থেই। শিল্প বাঁচুক। শিল্পী বাঁচুক। বর্তমানে এই খন গান নিয়ে নিয়মিত কাজ করে চলেছেন দিনাজপুরের প্রখ্যাত লোকশিল্পী অরিন্দম সিংহ। ইনি দিনাজপুরের খন সমিতির একনিষ্ঠ সদস্যও। নিমাইচন্দ্র সরকারের ভূমিকাও অনস্বীকার্য।

খন-এর অবলুপ্তি ঘটেনি। তবে হারিয়ে যাওয়া এই শিল্পের পুনরুজ্জীবনের জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছেন কিছু গবেষক এবং ক্ষেত্র সমীক্ষক সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে প্রথম পথ দেখিয়েছেন ড শিশিরকুমার মজুমদার, ধনঞ্জয় রায়, ড পুষ্পজিৎ রায় প্রমুখ।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আকরভূমি কুশমন্ডি ব্লক। এখানে 'লোকযান' সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে গিয়েছেন। এটি বন্ধ হওয়ার পর সৌরভ রায়ের 'ঊষাভানু নাট্যসংস্থা'(কুশমন্ডি) এখনও খন নিয়ে চর্চা করে চলেছে। এছাড়াও কুশমন্ডি গ্রামীণ লোকসংস্কৃতি ভাষা উন্নয়ন সংস্থা বহু বছর থেকে খন পরিবেশন করে চলেছে। এর প্রাণপুরুষ খুশি সরকার পশ্চিমবঙ্গের লোকসংস্কৃতি জগতের এক উজ্জ্বল নাম। কুশমন্ডি  দুর্গাপুরের 'টাঙন সাহিত্য, সংস্কৃতি ও লোকমঞ্চ' লোকসংস্কৃতির জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। রাজ্যস্তরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও এরা বিভিন্ন পালার পাশাপাশি বাছাই করা খন গানও পরিবেশন করছেন।

(ঋণ- গোবিন্দ তালুকদার, সুনীল চন্দ, অরিন্দম সিংহ এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে আলাপচারিতা)

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team