× home হোম archive আগের ওয়েব সংখ্যা panorama ডুয়ার্স সম্পর্কে play_circle_filled ভিডিও file_download মুদ্রিত সংখ্যার পিডিএফ library_books আমাদের বইপত্র
people এখন ডুয়ার্স সম্পর্কে article শর্তাবলী security গোপনীয়তা নীতি local_shipping কুরিয়ার পদ্ধতি keyboard_return বাতিল/ফেরত পদ্ধতি dialpad যোগাযোগ
login লগইন
menu
ad01112021105753.jpg
×
সংখ্যা: পৌষ, ১৪৩০
সম্পাদকের কলম
শীতের গল্পগাছা
সম্পাদক - এখন ডুয়ার্স
বিশেষ নিবন্ধ
বইমেলা মানে বই যেখানে ছুতো নিমিত্তমাত্র
প্রদোষ রঞ্জন সাহা
ধারাবাহিক প্রতিবেদন
উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সংস্কৃতির লোকজন | পর্ব - ১৬
সব্যসাচী দত্ত
খোলা মনে খোলা খামে
টিনের চালে লাল টুকটুকে লেপ - আমার শীতের ছোটবেলা
রম্যাণী গোস্বামী
জলশহরের কথা
এক যে ছিল টউন | পর্ব - ৯
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
শিলিগুড়ি স্টোরিলাইন
টাউন স্টেশন থেকে শুরু করে এশিয়ান হাইওয়ে: শিলিগুড়ির শতাব্দীব্যাপী বিবর্তন কথা
নবনীতা সান্যাল
পর্যটন
রিনচেনপং
অনিন্দ্য পাল
শ্রীমতী ডুয়ার্স
নারী মাত্রই মেয়ে কিন্তু মেয়ে মাত্রই নারী নয়!
ড. শুচিস্মিতা দেবনাথ
পাতাবাহার
আতার পায়েস চলতে পারে একটু?
পাতা মিত্র
পুরানের নারী
সতী
শাঁওলি দে

প্রচ্ছদ ছবি

এই সংখ্যার প্রচ্ছদ শিল্পী গৌতমেন্দু রায়

নারী মাত্রই মেয়ে কিন্তু মেয়ে মাত্রই নারী নয়!

ড. শুচিস্মিতা দেবনাথ
Nari Matroi Mey Kintu Mey Matroi Nari Noy

“অস্ট্রেলিয়া জিতেছে। আমরা জিতেছি। আমি এই জয় সেই মহিলাদের উৎসর্গ করছি যারা পড়াশোনা করার সুযোগ পায় না। তাদের লড়াই যেন সার্থক হয়।” অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া এক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচে অসাধ্য সাধন করা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-এর টুইট করা উদ্ধৃতি এটি। সতেরো'শ বাহাত্তর সালে জন্মান নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায় মহাশয়। আঠারো'শ কুড়ি সালে জন্মান পণ্ডিত ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়। আমাদের দেশে অনেক সামাজিক কুপ্রথা ও রক্ষণশীলতা এঁরা অসীম সাহস, ধৈর্য ও আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সচেষ্ট হয়েছিলেন। সুতরাং অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে নারীর স্বাধিকার, স্বাধীনতা, স্বনির্ভরতা ও সুশিক্ষার জন্য যে  লড়াইয়ের জন্ম হয়েছে আজ একবিংশ শতকেও সেই লড়াই একই রকম ভাবে চলছে। এমনকি একজন খেলোয়াড় যিনি দেশের জন্য প্রাণপাত করে খেলে গেলেন, তৈরি করলেন ইতিহাস; সেই মুহূর্তেও তার মনের গহীনে প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠেছে লড়াকু বঞ্চিত নারীদের বঞ্চনার কথা। তাই বলতেই হয়, এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগেও কি আমরা যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই রয়ে গেলাম ?

আমাদের সমাজে নানারকম বৈষম্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে চলেছে। তার মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক বৈষম্য, জাতিগত বৈষম্য ও নারী-পুরুষ সংক্রান্ত বৈষম্য। সর্বাপেক্ষা বেশি যে বৈষম্য নিয়ে সর্বদাই লড়াই চলে তা হচ্ছে নারী পুরুষের বৈষম্য। সমাজে বিশেষ প্রকার রক্ষণশীল মানসিকতার কিছু মানুষ রয়েছেন যারা জন্মলগ্ন থেকেই নারীকে মেয়ে বলে আলাদা করে চিহ্নিত করতে উঠে পরে লেগে যান। তারা মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি নাচ-গান-ঘরকন্নার কাজ শেখানোর জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন। প্রতিটি পদক্ষেপে মেয়ে বলে আলাদা সহবত শিক্ষা দিতে শুরু করেন। বিবাহোত্তর জীবনে শ্বশুরবাড়ির লোকজন সেই বাড়ির উপযুক্ত বউ হবার জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। প্রতিনিয়ত বৌমার পিতৃগৃহের শিক্ষাদীক্ষা ও আচার নিয়মের মানদণ্ডের বিচার বিবেচনা করা হতে থাকে।

এবার আসি সেই কথাতে যেখানে জন্মলগ্ন থেকেই নারীকে মেয়ে বলে চিহ্নিতকরণের কথা। প্রশ্ন ওঠা খুব স্বাভাবিক যে, নারীকে মেয়ে বলা সে আবার কি, নারী মাত্রই তো মেয়ে। নারী মাত্রই মেয়ে, কিন্তু মেয়ে মাত্রই নারী নয়। নারী হল সম্পূর্ণ আত্মোপলব্ধি সম্পন্না, আত্মসচেতন, নিজের শক্তি সম্পর্কে অবহিত একজন মানুষ। যিনি নিজের কথার গুরুত্ব নিজেই উপলব্ধি করেন এবং সেই কথা বাস্তবায়িত করতে নিজে তৎপর হন তিনিই নারী। যিনি শত বাধার সম্মুখীন হয়েও কখনও কথায় কথায় মাথা নত করেন না। যিনি নিজের কাজকে সম্মান করে অন্যকেও সেই কাজে প্রভাবিত করতে পারার ক্ষমতা রাখেন ও অনেক ধৈর্য্য- অধ্যবসায় দ্বারা সৃজন ধর্মী কাজে সাফল্য অর্জন করেন- তিনি অবশ্যই প্রকৃতপক্ষে একজন নারী হয়ে ওঠার যোগ্য। আবার তিনিই নতুন কোনও পরিবেশে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে না ফেলে বরং নিজের অনুকূলে এক সংস্কার মুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলে সেস্থানকে আলোকিত করতে পারেন।

আর যিনি শতফুলকে বিকশিত করার সুযোগ পেয়েও শুধু আত্মসুখের মত্ততায় আলোড়িত ও নানা বিলাসে বিলসিত হতে থাকেন এবং নিজের শিকড়ে নিজেই জল ঢালতে তৎপর হয়ে ওঠেন তিনি একজন নারী না হয়ে কেমন যেন মেয়ে হয়েই থেকে যান। তিনি নিজেকে সুসজ্জিত করে মেয়ে বলে উপস্থাপিত করতে বেশি ভালোবাসেন। আর সেজন্যই লড়াইটা বরাবর নারীদের জন্যই বরাদ্দ থাকে, মেয়েরা সুফলটা ভোগ করে মাত্র। তাই নারীদের মানসিকতার পরিবর্তন সর্বাগ্রে প্রয়োজন।

মেয়েদের মানুষ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখার জন্যেই রাজা রামমোহন রায় মহাশয় লড়াই করে গিয়েছেন, আর মেয়েদের মানবী করে গড়ে তুলতে কঠোর ব্রত ও তপস্যা চালিয়ে গিয়েছেন মাননীয় বিদ্যাসাগর মহাশয়। যখন কোনও গৃহাভ্যন্তরে অর্ধেক অংশ আলো আর অর্ধেক অংশ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে তখন আলোর সম্মুখস্থ সমস্ত বাধাগুলো সরিয়ে দেবার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। এর পরবর্তীতে সেই প্রজ্জ্বলিত আলোর শিখাটিকে আরও উজ্জ্বল করে জ্বলতে সাহায্য করতে হবে। প্রদীপে নিয়মিত তেলের যোগান দেওয়ার কাজটি পরবর্তী প্রজন্মের নারী ও পুরুষ উভয়কেই করতে হবে, তবেই সমাজ ব্যাধি মুক্ত হবে।

আমাদের দেশের অনেক স্থানে শোনা যায় যে, কন্যা সন্তান জন্মানোর ফলে মায়ের ওপর অনেক অত্যাচার করা হয়। এমনকি একাধিক কন্যা সন্তান জন্মানোয় মাকে ঘর সংসার থেকে বিতাড়িত পর্যন্ত করা হয়েছে। সেই মহিলাটির জীবন যাপন সম্পর্কে সমস্ত দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দঁড়িয়েছেন তার স্বামী ও পরিবারের সবাই। কোথাও আবার মায়ের মৃত্যুতে অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে। সরকারি ভাবে ও নানা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এই বিষয়টির প্রচার ভীষণভাবে প্রয়োজন যে, সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণকারী বীজটি তার পিতৃদত্ত, মা শুধু উর্বর ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে মাত্র। তবে হয়তো অনেক মায়ের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।

কোনও সন্তান জন্মাবার পর তার লিঙ্গ ভেদ না করে তাকে পরম আদরে গ্রহণ করে উপযুক্ত ভাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে অবিচল হওয়া উচিৎ। সন্তান মাত্রই তাকে অভিভাবকের ভালো মনের মানুষ ও উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। এছাড়া যে বিষয়টি উল্লেখ্য তা হল, পুত্র ও কন্যা নির্বিশেষে উভয়কেই প্রাত্যহিক গৃহকর্মে নিয়োজিত করা অবশ্য কর্তব্য। যে কোনও পরিবেশেই থাকুক না কেন ছোটখাটো কাজকর্ম নিজেরা যাতে সেরে নিতে পারে। বেশিরভাগ পরিবারে ছেলেদের ও মেয়েদের কাজকর্ম আলাদা করে চিহ্নিতকরণ করা হয় যা নাকি একদমই সঠিক নয়। পরিবার যদি জীবনের ভিত মজবুত করে, বৈষম্যহীনভাবে গড়ে দিতে পারে তবেই সেই শিশুটি বড় হয়ে নিজেও একজন নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।

নারীদেরও সংসার জীবনে আরও নমনীয় হওয়া প্রয়োজন। সর্বদাই বংশের রীতি নীতি ও কৌলিন্য বজায় রাখার স্বার্থে নিজেকে নিয়োজিত না রেখে মেয়ে বউদের ব্যক্তিত্বময়ী ও সুউপায়ী করে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হওয়া আশু কর্তব্য বলে মনে হয়। মেয়েদের উন্নত মানের শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা বংশের গৌরব বৃদ্ধি করে বই খাটো করে না। নারীরা যদি স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুস্থ ও সুন্দর ভাবে নিজেদের ভালোবাসা - দায়িত্ব পালন করে থাকে তবে নিশ্চিত ভাবেই সমাজ থেকে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ও প্রতি ক্ষেত্রে নারীকে অবদমিত করে রাখার প্রচেষ্টা হয়তো একদিন বিলুপ্ত হবে।

এই সংখ্যার সূচী

করোনা কালের প্রতিবেদন ফ্রি রিডিং

Disclaimer: Few pictures in this web magazine may be used from internet. We convey our sincere gratitude towards them. Information and comments in this magazine are provided by the writer/s, the Publisher/Editor assumes no responsibility or liability for comments, remarks, errors or omissions in the content.
Copyright © 2025. All rights reserved by www.EkhonDooars.com

Design & Developed by: WikiIND

Maintained by: Ekhon Dooars Team