এই ধারাবাহিক লেখার মাঝেই একদিন (০৫.০৫.২০২১) উঃ বঃ ক্ষেঃ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের, জলঢাকা হাইডেল প্রজেক্ট শাখায় কাজের টেবিলে বসে ভরদুপুরে এক তরুণ তরতাজা ছেলে কৃশানু রায় মারা গেল। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হয়ত বলবে মায়ো-কার্ডিয়াক ইনফ্রাকশন, কিন্তু ওর সহকর্মীরা মনে করেন কাজের বোঝা এমন ভাবে বেড়ে চলেছিল মৃত্যু ছাড়া মুক্তি ছিল না। পরবর্তী প্রজন্ম কেন ব্যাঙ্কের চাকরিতে সেভাবে আর আসতে চায় না কিংবা এলেও ছেড়ে পালাতে চায়, একটু ভেবে দেখা যাক না।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রই কি শেষ কথা বলে? উত্তর আসতে পারে “না। জনগনই শেষ কথা বলে”। অনেকেই বলবেন “এসব আসলে ইউটোপিয়ান থিয়োরি”। কিছু মানুষ বলেন “আজকের থিওরি হলো পৃথিবীর সবকিছুই অর্থের বিনিময়ে কেনা যায়”। তাঁরাই গুনগুনিয়ে প্রচার করেন “সরকার কেন ব্যবসা করবে?” সরকারি ক্ষেত্রের ব্যাঙ্ক, বীমা, টেলিকম, বিমান পরিষেবা, খনিজ তেল বণিকদের নিজেদের দখলে আনতেই হবে। সরকার হাতে থাকলে ব্যাপারটা সহজ হয়। ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরনের জিগির উঠেছে। গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোও এই ষড়যন্ত্রের শিকার। কোন পথে চলেছে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক? আজকে কৃশানুদের জীবনের প্রেক্ষিতে এই আলোচনা নিরস হলেও অত্যন্ত জরুরি।
গ্রামীন ঋণ বা রুরাল ক্রেডিট এবং গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সমার্থক হলেও তা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা জন্ম লগ্ন থেকেই চলছে। গঠনগত পরিবর্তন (Restructuring) নিয়ে নানা যুক্তিতর্ক চলছে তো চলছেই। এআইআরআরবিইএ (কর্মী সংগঠন) বরাবর বলে এসেছে, গ্রামের গরীব মানুষদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সুনিশ্চিত করতে একটি আলাদা আর্থিক সংস্থা থাকাটা জরুরি এবং তা হলো গ্রামীণ ব্যাঙ্ক। যারা গরীব মানুষের পাশে থাকবে তাদের সঞ্চয় ও ঋণ সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়টাতে দেখবে। ১৯৬৯ সনে এই ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে গিয়ে ইন্দিরা গান্ধী ১৪টি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ করেছিলেন। ১৯৮০ সনে আরও ৬টি ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ করা হয়।
সে সময় ব্যাঙ্কে ছিল ক্লাস ব্যাঙ্কিং (বিত্তশালীদের ব্যাঙ্ক)-এর জমানা। মাস ব্যাঙ্কিং (জনগনের ব্যাঙ্ক) ছিল চেতনার বাইরে। ব্যাঙ্কের প্রায় ৮২% শাখা ছিল বড় ও ছোট শহরে। গ্রামীন অর্থনীতি ছিল ঋণভারে জর্জরিত। গ্রামীণ এলাকায় ঋণের জন্য মহাজনী ব্যবস্থা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছিল। সুদের হার ছিল অত্যন্ত চড়া, কোন কোন ক্ষেত্রে বছরে সুদ ছিল ১০০% থেকে ১২০%। জমি বন্ধক রেখে কৃষক ঋণ নিলে সারা জীবন সে সুদ টেনে যেত, আসল শোধ করা অসম্ভব ছিল। ফলে সেই জমি একদিন মহাজনের হাতে চলে যেত।
ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের ওইসব প্রান্তিক মানুষের কাছে ব্যাঙ্কের পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। গ্রামে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের শাখা খোলা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু কর্মীরা ছিল শহুরে সংস্কৃতির মানুষ তারা আশানুরূপ পরিষেবা দিতে অসফল হয়েছিল। শুধুমাত্র গ্রামীণ এলাকায় কাজ করার লক্ষ্যে ০২.১০.৭৫ তারিখে সেই ইন্দিরা গান্ধীর জমানায় একটি নতুন সরকারি ব্যাঙ্ক (পাবলিক সেক্টার ব্যাঙ্ক) আত্মপ্রকাশ করেছিল। নাম হল আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক বা রিজিওনাল রুরাল ব্যাঙ্ক। সংসদে আইন পাশ (Regional Rural Bank Act 1976) করে ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তাদের কর্মক্ষেত্র (নোটিফায়েড এরিয়া) ছিল ২-৩টি জেলা। সেই দান্তেওয়ালা কমিটি (১৯৭৮) থেকে ভান্ডারী কমিটি (১৯৯৪) সবাই একবাক্যে বলেছিলেন গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলো যথার্থই গ্রামীণ মানুষদের স্বার্থে কাজ করছে। অর্থাৎ গ্রামীণ অর্থনীতির যে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে ব্যাঙ্কগুলো স্থাপিত হয়েছিল তা সফল হয়েছে বলা যায়।
২রা অক্টোবর ১৯৭৫ সারা দেশে ৫টি গ্রামীণ ব্যাঙ্ক স্থাপিত হয়েছিল। আর ওই তারিখে উদ্বোধন করা হয়েছিল একটি মাত্র শাখার, সেটি হল উত্তরপ্রদেশের (মোরাদাবাদ) রাজবপুর শাখা। আমাদের দেশ অনন্য বৈচিত্রে সম্বৃদ্ধ। এমনকি ২৫ কিমি পথ হাঁটলে মানুষের কথার টান, জীবিকা পালটে যায়। বর্ষা হলে আবাদ ভাল, নইলে কৃষকের মরণ। এক এলাকার ক্ষতি অন্য এলাকার লাভ (ক্রস সাবসিডি) দিয়ে সর্বত্র সামলানো সম্ভব নয়। ফলে গ্রামীণ ব্যাংকের সংখ্যা বেড়েছে। এরপর কখনও রাজ্য ভিত্তিক কখনও একই রাজ্যে স্পনসর ব্যাঙ্ক ভিত্তিক কিছুটা একত্রীকরণ (অ্যামালগ্যামেশন) করা হয়েছে। যে কারণে অপারেশনাল খরচ কমেছে এবং ব্যাঙ্কের সংখ্যা ১৯৬টি থেকে কমে ৪৩টি হয়েছে।
কথা চলছে সরকারিভাবে গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোর পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শোনা যায় ২০.০৫.২০২১ তারিখে কেন্দ্রিয় অর্থসচিবের অনুমোদন এবং অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রেরনের জন্য একটা ফাইল চলাচল করছে। সেখানে নাকি বলা হয়েছে গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হবে :
Group A (18 RRBs) – এই ১৮টা গ্রামীন ব্যাঙ্ক ব্যবসা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সফল। এদের কোনও আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন নেই।
Group B (16 RRBs) – এই ১৬টা গ্রামীন ব্যাঙ্ক ব্যবসা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সফল। কিন্তু আর্থিকভাবে শক্তিশালী নয় তাই তাদের পেনসনের দায় ও অন্যান্য বোঝা নিতে হয়েছে।
Group C (9 RRBs) - এই ৯টা গ্রামীন ব্যাঙ্ক সবদিক থেকেই দুর্বল এবং তারা বর্তমানে যেমন চলছে তেমনই চলুক। এদের মূলধন বর্তমান শেয়ার হোল্ডারগন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করবে।
গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোর ৩১.০৩.২০২১-এর ব্যবসার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সামগ্রিক আর্থিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারটা আলোচনা না করলে বর্তমান অবস্থা এবং পুনর্গঠনের প্রতিঘাত বুঝতে অসুবিধে হবে। ৩১.০৩.২০২১-এ যে অর্থ বৎসর শেষ হয়েছিল সেই সময় গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোর মোট পুঁজি (ক্যাপিটাল) ৮৩৯৩ কোটি টাকা, রিজার্ভে আছে ৩০১০০ কোটি টাকা। সামগ্রিক ব্যবসার পরিমাণ ৮৬০৪০৮ কোটি টাকা। মোট গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি এবং লাভের পরিমাণ ১৫৫৭ কোটি টাকা। ঋণ ও আমানতের অনুপাত (CD Ratio) ৬৪ শতাংশ। এখানে একটা মজার কথা মনে পড়ছে, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোর লোকসান হয়েছিল ২২০৬ কোটি টাকা, দেশের মিডিয়া সমস্বরে বলেছিল মোট লোকসান নাকি ২২০২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ জনসমক্ষে গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোকে দুর্বল প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুলে ধরতে পারলে পুর্নগঠনের নামে যা ইচ্ছে তাই করা সম্ভব। বর্তমান পরিসংখ্যান দেখা যাক :-
Year |
2018-19 |
2019-20 |
2020-21 |
Nos of RRBs |
53 |
45 |
43 |
Capital |
6721 |
7849 |
8393 |
Reserve |
2538 |
26814 |
30100 |
Deposit |
434444 |
478737 |
525220 |
Loan o/s |
280755 |
298214 |
335208 |
RRBs in profit |
30 |
25 |
29 |
RRBs in loss |
23 |
20 |
14 |
Net Profit/loss |
(-) 652 |
(-) 2206 |
1557 |
Accu loss |
2887 |
6467 |
8096 |
CD Ratio |
65 |
62 |
64 |
১৯৯১ সনে NIT অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার সময় ১৯৬টি গ্রামীন ব্যাঙ্কের মধ্যে ১২৩টি ব্যাঙ্ক লোকসানে চলছিল আর রব উঠেছিল গ্রামীণ ব্যাঙ্কে যদি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের সমতুল বেতন চালু হয় তবে গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলো উঠে যাবে। কিন্তু কুচুটে মানুষদের মুখে ছাই দিয়ে এখনও তারা দিব্যি ব্যবসা করে চলেছে। এমন মারাত্মক কোভিড আবহকালীন পরিস্থিতিতেও তারা ১৯২০-২১ সনে ১৫৫৭ কোটি টাকা লাভ করেছে।
ইতিমধ্যে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুটি (ন্যাশনালাইজড) সরকারি ক্ষেত্রের ব্যাঙ্ককে দ্রুততার সঙ্গে প্রাইভেটাইজ বা বেসরকারিকরন করা হবে। ১৯৬৯-এ যখন ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ করা হয়েছিল তখন ব্যবসার নিরিখে ১ নং স্থানে ছিল সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। পরিচালকদের অপদার্থতায় সেই ব্যাঙ্ক দুর্বল হয়েছে। সন্দেহ ও অভিযোগ উঠছে, কিছু নামী কর্পোরেট বা ব্যক্তি প্রচুর ভারি ঋন নিয়ে অনাদায়ী রেখেছে, কালে কালে তা এনপিএ-তে পর্যবসিত হয়েছে। ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণ হলে তারাই নামে-বেনামে ব্যাঙ্কের বোর্ডে আসন লাভ করবেন অথবা মালিকানা তাদের হাতেই যাবে। তারাই বোর্ডে বসে এনপিএ লোনগুলোকে ব্যাঙ্কের খাতা থেকে মুছে (রাইট অফ) ফেলবেন। ব্যাঙ্কের লোকসান বৃদ্ধি পাবে। ব্যাঙ্ক আব মহারাষ্ট্র, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কও হয়ত একই সাথে বেসরকারিকরন করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে।
ভারত সরকার এও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়, গ্রামীণ ব্যাঙ্কে তাদের যে ৫০% শেয়ার আছে সেটা স্পনসর ব্যাঙ্কে বিক্রি করা হবে। তাতে করে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কোন উপকারটা হবে কেউ কি ভেবে দেখেছেন? ভারত সরকার তাদের নিমপাতার সরবত গিলতে বাধ্য করেছে। আমার মত অনেকেই কর্মজীবনে অনুভব করেছেন স্পনসর ব্যাঙ্ক বিভিন্ন সময়ে সহযোগীর ভূমিকা পালন না করে প্রতিযোগীর ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে গ্রামীন ব্যাঙ্কের শেয়ার স্পনসর ব্যাঙ্কের কাছে আছে ৩৫% এরপরে তাদের কাছে যদি ভারত সরকারের ৫০% শেয়ার যায় তাহলে স্পনসর ব্যাঙ্কের কাছে গ্রামীন ব্যাঙ্কগুলোর মোট ৮৫% শেয়ার হাতে আসবে। স্পনসর ব্যাঙ্কের এমন একচ্ছত্র অবস্থানে কি গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ব্যবসা বৃদ্ধির কোনও সুযোগ থাকবে? আবার স্পনসর ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ হলে অনিবার্যভাবে তাদের মালিকানার গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলো অবশ্যই বেসরকারি ব্যাঙ্কে পরিণত হবে। তাদের অংশের শেয়ার (৮৫%) চলে যাবে বেসরকারি হাতে।
অন্যদিকে কানাঘুসোয় এও শোনা যাচ্ছে রাজ্যস্তরে একটাই গ্রামীণ ব্যাঙ্ক হতে চলেছে। আর কেন্দ্রীয় স্তরে (হয়ত) ভারতীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্ক (রুরাল ব্যাঙ্ক আব ইন্ডিয়া) বা এমন কিছু। বড়সড় রকমের একটা পরিবর্তন আসছে সেটা বোঝা যায় গত ২৪শে জুন ২০২১ তারিখে ১০টি গ্রামীন ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্যে লেখা নাবার্ডের চিঠি থেকে। বিষয়টা কী? “গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোর সংযুক্তিকরন- ডিবিটি পরিষেবা- ব্যাঙ্ক, সরকারি মন্ত্রক, দপ্তর, বাহ্য প্রণালি, পিএফএমএস এবং নির্দ্দিষ্ট সঞ্চালন প্রক্রিয়া নির্দ্ধারন।“(AMULGAMATION OF REGIONAL RURAL BANKS- DBT PAYMENTS- STANDARD OPERATING PROCEDURE BETWEEN BANKS, MINISTRIES/DEPARTMENTS? EXTERNAL SYSTEM AND PFMS)। একটু খটমট হলেও তা পাঠকদের জানানো এবং জানা দরকার, যেহেতু এতে আমাদের সবার স্বার্থ জড়িয়ে আছে।
মোদ্দা কথা হলো ব্যাঙ্কগুলোর একত্রিকরন বা সংযুক্তিকরন হলে উপভোক্তাদের হাতে সরাসরি আর্থিক সুবিধা (DIRECT BENEFIT TRANSFER - DBT) পৌছে দিতে বা সর্বসাধারনের আর্থিক লেনদেন পরিচালনা (PUBLIC FINANCIAL MANAGEMENT SYSTEM – PFMS) যাতে কোনওরূপ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় তার জন্য নির্দ্দিষ্ট সঞ্চালন প্রক্রিয়া (STANDARD OPERATING PROCEDURE – SOP) প্রেরিত হয়েছে। বিষয়গুলো সংক্ষেপে দিলাম।
১) ব্যাঙ্কগুলোর একত্রিকরন বা সংযুক্তিকরন হলে সংশ্লিষ্ট পক্ষের স্বার্থ যেন বিঘ্নিত না হয় অথবা PFMS এর মাধ্যমে যে লেনদেন হয় তা যেন বাধা মুক্ত হয় সেটা SOP-তে বলে হয়েছে।
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংযুক্তিকরণ হয়ে গেলেই এই SOP অনুযায়ী নবগঠিত ব্যাঙ্ক অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবে। ভারত সরকারের অর্থ দপ্তর তাদের পত্রাঙ্ক F. No 9/39/2018-F1(C-400873) dated 20.04.2021 অনুযায়ী জানিয়েছে 2020-21 সনে যে গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলোর সংযুক্তিকরন হয়েছে তারা IFSC table এখনও PFMS–কে জানায়নি। যে কারণে বেশ কিছু DBT ফাইল বিলম্বিত বা বাতিল হয়েছে। এই কারনে ভারত সরকার পরামর্শ দিয়েছে, তথ্যগুলোর PFMS-এ আদানপ্রদান যেন অবিলম্বে কার্যকর করা হয়।
PFMS-এ সারা দেশের ব্যাঙ্ক ও তাদের শাখার তালিকা ও IFSC table এর মাধ্যমে কার্য পরিচালনা করে থাকে এবং বহু সংখ্যক বর্হিবিভাগও এর সঙ্গে যুক্ত। কাজেই ব্যাঙ্কের নাম/শাখার নাম বা IFSC table-এ কোনও পরিবর্তন ঘটালে তৎক্ষণাৎ সেটা PFMS-এ জানাতে হবে নইলে অর্থ চলাচল ব্যবস্থায় সঙ্কট তৈরি হবে।
মেনে নিতে অসুবিধে নেই লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য PFMS একটি আধুনিক ব্যবস্থা। কিন্তু বেশ কিছু RRB এখনও স্পনসর ব্যাঙ্কের একটি মাত্র IFSC কোডের মাধ্যমে তারা NEFT/RTGS/PFMS-এর কাজ করে থাকে। আপনি যদি উত্তরবঙ্গে ক্ষেত্রীয় গ্রামীন ব্যাঙ্কের দার্জিলিং শাখায় NEFT করতে গিয়ে IFSC কোড সার্চ করেন দেখবেন কোচবিহারের একটি শাখার নাম ভেসে উঠেছে। অনেকে ঘাবড়ে গিয়ে বলেন “সঠিক IFSC কোড শেয়ার করুন নইলে টাকা ভুল শাখায় চলে যাচ্ছে”। আসলে বেশ কিছু ক্ষেত্রে স্পনসর ব্যাঙ্ক চায়নি RRB-র নিজস্ব কোড থাক। কখনও হয়ত RRB নিজেও যথেষ্ট তৎপর ছিল না।
মূলত গ্রামীণ উন্নয়নের ম্যানডেট সঙ্গে নিয়ে যারা পথচলা শুরু করেছিল সেই গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলো একটা অবশ্যম্ভাবি পরিবর্তনের দোরগোড়ায়। লেখক বলেছিলেন “নামে কী আসে যায়”? গ্রামীণ ব্যাঙ্ক এই নামটির সঙ্গে এক সুবিশাল ভোট ব্যাঙ্কের সম্পর্ক আছে। “গ্রামীণ ব্যাঙ্ক” শব্দবন্ধটি হয়ত অপরিবর্তিত থাকবে কিন্তু এর গঠনশৈলীতে, পরিচালন ব্যবস্থায়, প্রশাসনিক স্তর বিন্যাসে পরিবর্তন আসছে, শুধু সময়ের অপেক্ষা। মাঝে কৃশানুর মত আরও কিছু সন্তান মায়ের কোল খালি করে চলে যাবে।
Have an account?
Login with your personal info to keep reading premium contents
You don't have an account?
Enter your personal details and start your reading journey with us
Design & Developed by: WikiIND
Maintained by: Ekhon Dooars Team