নভেম্বর-ডিসেম্বরের এই সময়টা থেকে যখন রোদ বেশ নরম হয়ে আসে, বাতাসে শীতের অনুপ্রবেশের সঙ্কেত, তখনই সখের ফুলগাছ করিয়েদের মন হয়ে ওঠে অতি উৎসাহী।
শীতকালের বিভিন্ন ফুল, যাদের আমরা চলতি কথায় মরশুমি ফুল বলে থাকি, তার চারা লাগানোর এই তো সময়। প্রতিটি নার্সারিতে, এমনকি রাস্তার পাশেও জায়গায় জায়গায় মরশুমি ফুলের চারার পসরা নিয়ে বসে পড়েছেন অনেকেই। শুধু দেখেশুনে কিনে এনে যত্ন করে লাগাবার অপেক্ষা। এ প্রসঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে কয়েকটি প্রয়োজনীয় টিপস্ নীচে দিলাম।
এক। পিটুনিয়া, ডায়ান্থাস, ইমপেশেন্স, ফ্লক্স, সিনেরেরিয়া, ডালিয়া, গাঁদা (ইনকা অথবা দেশি) ইত্যাদি বিভিন্ন ফুলের চারা বসাতে পারেন পছন্দমত।
দুই। সবার আগে একটা স্টক মাটি তৈরি করে নিন, যাতে সব গাছই মোটামুটি ভালো হবে। দুভাগ দো আঁশ মাটি, একভাগ ভার্মি কম্পোস্ট বা পুরোনো শুকনো গোবর সার, বাকি একভাগ বালি, কোকোপিট, নিমখোল, হাড়ের গুঁড়ো মিশিয়ে। ভালোভাবে সবকিছু মিলিয়ে, বেছে নিয়ে ঝুরঝুরে করে রাখুন। টবের নিচে এক ইঞ্চি মতো টব ভাঙা বা কুচি পাথর দিয়ে আগে থেকেই ষাট শতাংশ এই মাটি ভরে তৈরি হয়ে থাকতে পারেন।
তিন। আট-দশ ইঞ্চির টবে সব গাছই লাগানো যায়, তবে পিটুনিয়া আর ফ্লক্স চার ইঞ্চি উচ্চতার ছড়ানো গামলা টবে লাগালে সর্বোত্তম।
চার। বাজার থেকে চারা কিনে এনে হালকা জলের ছিটে দিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা ছায়ায় রাখুন, ওদের আপনার বাড়ির পরিবেশে মানিয়ে নিতে দিন। তারপর দিন বিকেলে টবে বসান, হালকা জল দিয়ে ছায়া জায়গায় রাখুন তিনদিন। এরপর হালকা রোদ খাওয়ান তিনদিন। সপ্তাহখানেকের মাথায় শিকড় ধরে গেলে শীতের নরম খোলা রোদ্দুরে রাখুন।
পাঁচ। টবে গাছ বসানোর তিন সপ্তাহ পর থেকে তরল জৈব সার প্রয়োগ শুরু হবে। চার মুঠো সর্ষের খোল ও এক চামচ ডি.এ.পি আধ বালতি জলে ভিজিয়ে রাখুন। চার পাঁচ দিন পর ঘেঁটে নিয়ে যে ঘন তরলটা পাবেন তার এক মগ, দশ মগ জলে মিশিয়ে পাতলা করুন। এই তরল সপ্তাহে দুদিন সব গাছের মাটিতে অল্প করে ঢেলে দিন। টবের মাটি ভেজা থাকলে এই তরল সার বা জল কিছুই দেবেন না। সপ্তাহে একদিন টবের মাটি হালকা করে খুঁচিয়ে আলগা করে দিন।
ছয়। আর হ্যাঁ, শীতের প্রধান ফুল চন্দ্রমল্লিকার কথাই বলা হল না। চন্দ্রমল্লিকা ঠিকঠাক করে করতে তার চারা বানানো ও পরিচর্যা শুরু হয় মোটামুটি জুলাই-অগাস্ট মাস থেকে। সে এক দীর্ঘ যাত্রাপথ। তবে এখন ছোটছোট কুঁড়ি সমেত চারা সরাসরি কিনে এনে বসিয়ে নিতেই পারেন টবে। পরিচর্যা একই রকম। ভালোই ফুল পাবেন।
এবার অপেক্ষা, প্রতিদিন আপনার প্রিয় গাছগুলির বৃদ্ধি, কুঁড়ি আসা, ফুল ফোটার রোমাঞ্চ। এই শীতে রঙের আগুন লাগুক আপনার ছাদের বা বারান্দার শখের বাগানে।
Have an account?
Login with your personal info to keep reading premium contents
You don't have an account?
Enter your personal details and start your reading journey with us
Design & Developed by: WikiIND
Maintained by: Ekhon Dooars Team